আত্মপ্রচারের সময় এটা নয়

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিকভাবে দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষকে মানবিক সহায়তার জন্য চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা মেনে এসব ত্রাণ বিতরণের নির্দেশ দেয়া হলেও কোন কোন ডিসি এবং ইউএনও ত্রাণ বিতরণের চেয়ে ফেসবুকে আত্মপ্রচারেই বেশি ব্যস্ত বলে জানা গেছে। কয়েকজন ডিসি ও ইউএনও ব্যক্তিগত সাফল্য হিসেবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ত্রাণ কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও প্রতিনিয়তই প্রচার করছেন। এতে চরমভাবে বিব্রত হচ্ছেন দুর্যোগকালীন ঘরে বসে থাকা ত্রাণ গ্রহণকারী অনেক মানুষ। এ নিয়ে গত সোমবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত এক জরুরি সভায় জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করায় পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সব সদস্যরা একযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সচিব বরাবর এক অভিযোগপত্র প্রদান করেছেন। অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদের ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ হয়ে গেছে।

এটা হচ্ছে জনসেবায় আত্মনিয়োগের সময়। এটা আত্মপ্রচারের সময় নয়। যেটা তারা করছে। এরকম ক্রান্তিকালে তারা নিয়োজিত থেকে জনগণের সেবা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জনসেবা না করে তারা যেন আনন্দ-ফূর্তি করছে। ভাবখানা এমন যে তারা আগেরদিনের জমিদারের মতো বা সামন্তপ্রভুদের মতো নিজেদের পক্ষ থেকে গরিব অসহায়দের ত্রাণসামগ্রী দিচ্ছে। ত্রাণ দিচ্ছে সরকার। আর তারা ফেসবুকে ছবি দিয়ে এবং ভিডিও প্রচার করে আবার সেগুলোতে লাইক ও শেয়ার দিতে বাধ্য করিয়ে নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যা দেয়া হচ্ছে সেগুলোতো জনগণেরই সম্পদ। তাদেরই প্রাপ্য দেয়া হচ্ছে। এগুলো সুষ্ঠুভাবে বিলি করাই তাদের কাজ। এসব ছবি তোলা এবং ভিডিও দেয়া বাদ দিয়ে তাদের নিজেদের কাজে মনোযোগ দিতে হবে। আত্মপ্রচারের সময় এটা নয়।

জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এরকম অসদাচরণ করেছে কেন এবং নিম্নমানের জিনিস কেন দিয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এখানে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সেটা বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুধবার, ০৮ এপ্রিল ২০২০ , ২৫ চৈত্র ১৪২৬, ১৩ শাবান ১৪৪১

আত্মপ্রচারের সময় এটা নয়

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিকভাবে দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষকে মানবিক সহায়তার জন্য চাল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বর্তমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা মেনে এসব ত্রাণ বিতরণের নির্দেশ দেয়া হলেও কোন কোন ডিসি এবং ইউএনও ত্রাণ বিতরণের চেয়ে ফেসবুকে আত্মপ্রচারেই বেশি ব্যস্ত বলে জানা গেছে। কয়েকজন ডিসি ও ইউএনও ব্যক্তিগত সাফল্য হিসেবে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ত্রাণ কার্যক্রমের ছবি ও ভিডিও প্রতিনিয়তই প্রচার করছেন। এতে চরমভাবে বিব্রত হচ্ছেন দুর্যোগকালীন ঘরে বসে থাকা ত্রাণ গ্রহণকারী অনেক মানুষ। এ নিয়ে গত সোমবার গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত এক জরুরি সভায় জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করায় পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সব সদস্যরা একযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সচিব বরাবর এক অভিযোগপত্র প্রদান করেছেন। অভিযোগে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদের ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ হয়ে গেছে।

এটা হচ্ছে জনসেবায় আত্মনিয়োগের সময়। এটা আত্মপ্রচারের সময় নয়। যেটা তারা করছে। এরকম ক্রান্তিকালে তারা নিয়োজিত থেকে জনগণের সেবা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জনসেবা না করে তারা যেন আনন্দ-ফূর্তি করছে। ভাবখানা এমন যে তারা আগেরদিনের জমিদারের মতো বা সামন্তপ্রভুদের মতো নিজেদের পক্ষ থেকে গরিব অসহায়দের ত্রাণসামগ্রী দিচ্ছে। ত্রাণ দিচ্ছে সরকার। আর তারা ফেসবুকে ছবি দিয়ে এবং ভিডিও প্রচার করে আবার সেগুলোতে লাইক ও শেয়ার দিতে বাধ্য করিয়ে নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যা দেয়া হচ্ছে সেগুলোতো জনগণেরই সম্পদ। তাদেরই প্রাপ্য দেয়া হচ্ছে। এগুলো সুষ্ঠুভাবে বিলি করাই তাদের কাজ। এসব ছবি তোলা এবং ভিডিও দেয়া বাদ দিয়ে তাদের নিজেদের কাজে মনোযোগ দিতে হবে। আত্মপ্রচারের সময় এটা নয়।

জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা এরকম অসদাচরণ করেছে কেন এবং নিম্নমানের জিনিস কেন দিয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এখানে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সেটা বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।