আমাদের চরিত্রের বিচিত্র রূপ

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

মায়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন আর গুলির মুখে পালানোর আর কোন পথ না পেয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তের নো মেনস ল্যান্ডে এসে জড়ো হয়েছিলো; প্রথমদিকে বাংলাদেশে প্রবেশ প্রতিহত করার কারণে জড়ো হওয়া রোহিঙ্গারা ঝড়, বৃষ্টিতে অবর্ণনীয় দুর্দশায় নিপতিত হয়। রোহিঙ্গারা মুসলমান বিধায় বাংলাদেশের কিছু মুসলমানের দরদ উতলে উঠে, দ্রুত তাদের আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। অবশ্য মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলেও তাদের আশ্রয় দেয়া বাঞ্ছনীয় ছিলো। শরণার্থী হয়ে একবার বসতি স্থাপন করলে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পুনরায় বাস্তুচ্যুত করা যায় না এটা জানার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেন। দরদী মুসলমানেরা খুশি হলো, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা উল্লাস করে প্রচার করতে থাকলো যে, সহসাই মালয়েশীয়া, তুরস্কসহ সব মুসলিম দেশ একত্রিত হয়ে মায়ানমারকে ধূলিসাৎ করে ছাড়বে এবং রোহিঙ্গারা শীঘ্র তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে আপন ভুবনে ফেরত যাবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা মায়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশে বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলো, তারা বলে দিলো, ‘নাগরিকত্ব দিলে যাব’। ব্রিটিশ আমল থেকে যারা মায়ানমারের নাগরিক নয় তাদের নাগরিকত্ব যে সহসা দেয়া হবে না তা তারা ভালো করে জানে। রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মি এখনোমাঝে মাঝে মায়ানমারের ভেতরে দুয়েকটি গুলি ছোড়ে আর এটাকে পুঁজি করে মায়ানমার কূটনীতি চালিয়ে রোহিঙ্গাদের যাওয়া প্রতিহত করছে। ষোলো কোটি মানুষের খাবার জোগানো যেখানে বাংলাদেশের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে বাড়তি দশ লক্ষ রোহিঙ্গার অন্নের সংস্থান করতে হচ্ছে আমাদের। এই শরণার্থীরা আমাদের পরিবেশ নষ্ট করছে, মাদক ব্যবসা করছে, অস্ত্র পাচার করছে, ডাকাতি করছে, মানুষ খুন করছে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে অসদাচরণ করে বাংলাদেশ ও বাঙালির নামে বদনাম সৃষ্টি করছে। এখন বাংলাদেশের লোক এদের তাড়াতে পারলেই বাঁচে, তাদের প্রতি আগের সেই দরদ এখন আর বাঙালি মুসলমানদের নেই।

চীনে করোনাভাইরাসের উদ্ভব হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হালাল খাওয়ার গুণাগুণ বর্ণনা করা অসংখ্য পোস্ট দেখেছি। হারাম খাবার খাওয়ার কারণে এই সকল ভাইরাসের উৎপত্তি বলে আমাদের জোর করেবিশ্বাস করাতে পরকালে বরকত লাভের লোভ দেখানো হলো। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে যখন ইবোলা আর মার্সে শত শত মুসলমান মারা গেল তখন কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম হারাম, হালাল খাবার নিয়ে একটি কথাও বলা হয়নি। করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ও এর তা-ব নিয়ে নানান ধরনের ধর্মীয় ব্যাখ্যা সম্ভবত শুধু আমাদের দেশেই হয়েছে। করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ও সর্বশেষ অবস্থা বিবেচনা করে পূর্ববর্তী ধর্মীয় ব্যাখ্যা থেকে ধর্ম প্রচারকদের সরে যেতেও দেখা গেছে। অনেকে গজবের কথা বাদ দিয়ে এখন চীনের বিচার করতে সারা পৃথিবীকে একযোগে কাজ করতে আহবান জানাচ্ছেন; কারণ তাদের বিশ্বাস, চীন এই ভাইরাস ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইউরোপ ও আমেরিকা সকল উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে ঘরে আবদ্ধ থাকলেও চীন ইতোমধ্যে পুরোদমে সকল ধরনের উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে, করোনা উত্তর অর্থনৈতিক মন্দায় চীন বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনর্জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠবে।

বাঙালি বিজ্ঞানবিমুখ জাতি হওয়ার কথা ছিলো না, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালিকে ভাবাবেগের পরিবর্তে বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলেছিলো। কিন্তু সরকারের অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে কয়েক ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে চালু হয়ে যায়। কোরআন ও হাদিসে বিজ্ঞানের সকল সূত্র নিহিত রয়েছে বলে আমরা জানি। কিন্তু কোরআন পড়ে মুসলমান গবেষকেরা কিছুই আবিস্কার করতে পারেন না। ইহুদি, নাসারাগণের আবিষ্কারের পর ওয়াজ মাহফিলে আমাদের আলেমেরা গর্ব নিয়ে সেই আবিষ্কারের চৌদ্দ-পনেরো শত বছর পূর্বে ধর্মে প্রোথিত সূত্রের উল্লেখ করেন। আমাদের কিছু আলেম ও ধার্মিকের ধারণা, যারা আবিষ্কার করেন তারা কোরআন গবেষণা করেই আবিষ্কার করেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অন্য ধর্মের লোকেরা ইসলাম ধর্মের গূঢ়ার্থ বুঝতে পারে, অথচ মুসলমান আলেমেরা পারেন না। বিষয়টি লজ্জার। পৃথিবীর সর্বত্র মুসলমান মার খাচ্ছে, মার খাওয়ার পেছনেইহুদি, নাসারাদের ষড়যন্ত্র থাকার কল্পিত কারণ খুঁজে নিয়ে তুষ্ট থাকার চেষ্টাও করা হয়। এটাও লজ্জার, অন্যরা মুসলিম জাতিকে নিয়ে খেলতে পারে- এই দীনতা বোঝার ক্ষমতাও আমরা অর্জন করিনি। আসলে মুসলমানদের এই দুরবস্থার জন্য বিজ্ঞানবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থাই দায়ী।

চরিত্রের বৈপরীত্যের প্রতিফলন আরও বহু ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। পাশ্চাত্যে ইচ্ছে করলেই তিন ফুট দূরত্ব বজায়রেখে চলাফেরা করা সম্ভব, কারণ ওখানে পর্যটক ব্যতীত রাস্তায় দলবদ্ধ হয়ে হাঁটার লোক খুব বেশী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে শুধু কবরস্থানেই লোকের স্পর্শ এড়িয়ে চলা সম্ভব। করোনাভাইরাসকে রোধ করতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার অপরিহার্যতা সরকারের তরফ থেকে বলা হলেও লোকজনকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম বলা হলো, ‘বাঙালি ডাণ্ডা ছাড়া ঠাণ্ডা হয় না’। সেনাবাহিনী ও পুলিশ একটু কঠোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় চিৎকার শুরু হলো, ‘পুলিশ-সেনা লোক ঠেঙ্গাচ্ছে কেন? হতদরিদ্র মানুষ বাধ্য হয়ে ঘরের বাইরে যায়।’ তাও সত্য। হতদরিদ্র লোকেরা দিনে এনে দিনে খায়, তাদের একদিনের সঞ্চয়ও থাকে না। ঘর থেকে বের না হলে, কাজ না করলে করোনায় আক্রমণের আগেই না খেয়ে মরে যাবে। পুলিশ-সেনা জনগণের মনোভাব লক্ষ্য করে রাস্তায় আসা লোকদের বুঝিয়ে ঘরের ভেতর পাঠানোর চেষ্টা করলো। কেউ বুঝলো না। পুলিশ, সেনার নমনীয় আচরণ দেখে মানুষ বাসায় বসে চা খাওয়া বন্ধ করে দিলো, ছুটলো চা দোকানে। কিছু লোক রাস্তায় সেনাবাহিনীর পানি ছিটানো দেখতে বের হলো। করেনাভাইরাস খালি চোখে দৃশ্যমান হলে তা দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ লোক আকাশে চাঁদ দেখার মতো রাস্তায় নেমে কার আগে কে দেখেছে তা নিয়ে লাফালাফি করতো। হুমায়ূন আহমেদ বাঙালির চরিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, দুর্গন্ধময় নর্দমা পরিষ্কারের কাজ দেখার জন্যও বাঙালি জড়ো হয় এবং তা উপভোগ করে। রাস্তায় লোকের ভিড় দেখে আবার কিছু বাঙালির টনক নড়ে, এমন হলে তো মরণ ঠেকানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। প্রিন্ট মিডিয়া ও ফেসবুকে আবার পুলিশ, সেনাদের কঠোর হতে বলা হলো। এখানেও একটি সমস্যা রয়েছে; ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সরকার ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরিবদের চাল-ডাল বিতরণ করা হয় বিধায় গরিব লোকগুলো সারা শহরে দল বেঁধে তা সংগ্রহের জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছোটাছুটি করছে। এদের থামানো মুশকিল। এদের থামাতে হলে রাস্তায় খাবার দেয়া বন্ধ করে দিতে হবে। রাস্তায় খাবার দেয়াবন্ধ করা হলে ফেসবুকে গরিবদের পক্ষে আবার চিৎকার শুরু হবে। গরিবদের যারা সহায়তা করছেন তাদের দান করায় ছবি পোস্ট করায় নীতিবানেরা ক্ষেপেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারা গরিবদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছেন তাদের এমন মহতী কাজের প্রচার হওয়া জরুরী, এতে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা যখন ছবি না তোলা পর্যন্ত পোটলা শক্ত করে ধরে থাকেন তখন তা খুব দৃষ্টিকটু মনে হয়।

সারা পৃথিবীতে ইহুদির সংখ্যা মাত্র দেড় কোটি এবং দেশ মাত্র একটি- ইসরাইল। অন্যদিকে মুসলমানের সংখ্যা ১৯০ কোটি এবং দেশ ৫৬টি। এই একটি দেশে বসবাসকারী মাত্র ৫৪ লক্ষ ইহুদির কাছে ফিলিস্তিনি ও মধ্যপ্রাচ্যের অগণিত মুসলমান মার খাচ্ছে। এই মার থেকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে প্রতি শুক্রবারে প্রতিটি মসজিদে দুই হাত তোলে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে ১৯৪৮ সন থেকে। ৫৬টি মুসলিমদেশসহ সারা বিশ্বের করোনার এই গজব শুধু ইহুদিদের উপর নেমে এলে আমাদের বাহাত্তর বছরের প্রার্থনারতাৎপর্য উন্মোচিত হতো এবং ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতন হ্রাস পেত। গজব ইহুদিদের উপরও নেমেছে; তবে যেসকল ইহুদিদের উপর গজব নেমেছে তারাও কট্টর ধর্মান্ধ। অন্যান্য ধর্মের ধর্মান্ধদের মতো ইসরাইলের বেনি ব্রাকশহরের গোঁড়া ইহুদিরা বিশ্বাস করে যে, তারা ঈশ্বরের কাছের লোক বিধায় করোনাভাইরাস তাদের আক্রমণ করবে না, তাদের উপসনালয়ে এই ভাইরাস কখনো ঢুকতে পারবে না। এমন দৃঢ়বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে তারা দলবেঁধে উপসনালয়ে যেতে থাকেন; এখন এই শহরে ৫০ শতাংশ লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রতি মুহূর্তে লাশের সংখ্যা বাড়ছে। কোরিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ডে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে গির্জা থেকে, ভারত ও পাকিস্তানে তাবলিগের জামাত থেকে, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ধর্মীয় মজলিশ থেকে, তুরস্কে ওমরাহ পালনকারীদের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী ও রোগীর মৃত্যু সংখ্যা নিয়েও অনেকে মানসিক বৈকল্যে ভুগছেন; তাদের বিশ্বাস, হাজার হাজার লোক এই রোগে মরছে, সরকার প্রকৃত সংখ্যা লুকাচ্ছে। তবে লক্ষ লক্ষ আক্রান্ত ও হাজার হাজার না মরলেও শনাক্তের বাইরে কিছু রোগী অবশ্যই রয়েছে; কারণ পরীক্ষা করার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় দেশে করোনাভাইরাসের প্রকৃত অবস্থা স্পষ্ট হচ্ছে না। লক্ষ লক্ষ লোক আক্রান্ত, হাজার হাজার লোকের মৃত্যুর কথা যারা বলছেন তারা যুক্তিগ্রাহ্য দুটি কারণ লক্ষ্য করেছেন বলে মনে হয় না। প্রথমত, বাংলাদেশের আশপাশের দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, লাউস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামেও তো করোনাভাইরাসের মহামারী রূপ পরিলক্ষিত হয়নি। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতেও ইউরোপ এবং আমেরিকার মতো লোক মারা যাচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানেও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা কমই থাকে। রাস্তায় সাধারণ জনতাকে পিটিয়ে ঘরে আবদ্ধ করা সম্ভব হলেও ধর্মান্ধদের রোধ করা কঠিন। গণজমায়েত বন্ধে সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই থিওপিয়ার অর্থডক্স খ্রিস্টানেরা রাজধানী আদ্দিস আবাবার রাস্তায় জড়ো হয়ে করোনা থেকে মুক্তির প্রার্থনা করছে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখলাম, আমাদের দেশে এক প্রবীণ ভদ্রলোক মাস্ক না পরে হাত দিয়ে সর্দি ঝাড়তে ঝাড়তে রাস্তায় চলাফেরা করছেন- ‘মাস্ক কেন পরেননি, মাস্ক না পরলে বাসায় কেন আবদ্ধ থাকেনি’- এমন জিজ্ঞাসায় ক্ষেপে গিয়ে প্রবীণ ভদ্রলোক বললেন, ‘জন্ম, মৃত্যু, রিজিক আল্লাহর হাতে, আল্লাহ যেদিন মৃত্যু রেখেছে সেদিনই মরবো।’ এদের এমন গোয়ার্তুমির কারণে ইতোমধ্যে সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, আমাদের দেশের বস্তিতে এই ভাইরাসের অনুপ্রবেশ হলে আর রক্ষা থাকবে না। তাই সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ত্যাগ করে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরি।

[লেখক : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী, পরিচালক ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক]

ahmedzeauddin0@gmail.com

রবিবার, ১২ এপ্রিল ২০২০ , ২৯ চৈত্র ১৪২৬, ১৭ শাবান ১৪৪১

আমাদের চরিত্রের বিচিত্র রূপ

জিয়াউদ্দীন আহমেদ

মায়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন আর গুলির মুখে পালানোর আর কোন পথ না পেয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তের নো মেনস ল্যান্ডে এসে জড়ো হয়েছিলো; প্রথমদিকে বাংলাদেশে প্রবেশ প্রতিহত করার কারণে জড়ো হওয়া রোহিঙ্গারা ঝড়, বৃষ্টিতে অবর্ণনীয় দুর্দশায় নিপতিত হয়। রোহিঙ্গারা মুসলমান বিধায় বাংলাদেশের কিছু মুসলমানের দরদ উতলে উঠে, দ্রুত তাদের আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। অবশ্য মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলেও তাদের আশ্রয় দেয়া বাঞ্ছনীয় ছিলো। শরণার্থী হয়ে একবার বসতি স্থাপন করলে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পুনরায় বাস্তুচ্যুত করা যায় না এটা জানার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেন। দরদী মুসলমানেরা খুশি হলো, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা উল্লাস করে প্রচার করতে থাকলো যে, সহসাই মালয়েশীয়া, তুরস্কসহ সব মুসলিম দেশ একত্রিত হয়ে মায়ানমারকে ধূলিসাৎ করে ছাড়বে এবং রোহিঙ্গারা শীঘ্র তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে আপন ভুবনে ফেরত যাবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা মায়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশে বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলো, তারা বলে দিলো, ‘নাগরিকত্ব দিলে যাব’। ব্রিটিশ আমল থেকে যারা মায়ানমারের নাগরিক নয় তাদের নাগরিকত্ব যে সহসা দেয়া হবে না তা তারা ভালো করে জানে। রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মি এখনোমাঝে মাঝে মায়ানমারের ভেতরে দুয়েকটি গুলি ছোড়ে আর এটাকে পুঁজি করে মায়ানমার কূটনীতি চালিয়ে রোহিঙ্গাদের যাওয়া প্রতিহত করছে। ষোলো কোটি মানুষের খাবার জোগানো যেখানে বাংলাদেশের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে বাড়তি দশ লক্ষ রোহিঙ্গার অন্নের সংস্থান করতে হচ্ছে আমাদের। এই শরণার্থীরা আমাদের পরিবেশ নষ্ট করছে, মাদক ব্যবসা করছে, অস্ত্র পাচার করছে, ডাকাতি করছে, মানুষ খুন করছে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে অসদাচরণ করে বাংলাদেশ ও বাঙালির নামে বদনাম সৃষ্টি করছে। এখন বাংলাদেশের লোক এদের তাড়াতে পারলেই বাঁচে, তাদের প্রতি আগের সেই দরদ এখন আর বাঙালি মুসলমানদের নেই।

চীনে করোনাভাইরাসের উদ্ভব হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হালাল খাওয়ার গুণাগুণ বর্ণনা করা অসংখ্য পোস্ট দেখেছি। হারাম খাবার খাওয়ার কারণে এই সকল ভাইরাসের উৎপত্তি বলে আমাদের জোর করেবিশ্বাস করাতে পরকালে বরকত লাভের লোভ দেখানো হলো। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে যখন ইবোলা আর মার্সে শত শত মুসলমান মারা গেল তখন কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম হারাম, হালাল খাবার নিয়ে একটি কথাও বলা হয়নি। করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ও এর তা-ব নিয়ে নানান ধরনের ধর্মীয় ব্যাখ্যা সম্ভবত শুধু আমাদের দেশেই হয়েছে। করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব ও সর্বশেষ অবস্থা বিবেচনা করে পূর্ববর্তী ধর্মীয় ব্যাখ্যা থেকে ধর্ম প্রচারকদের সরে যেতেও দেখা গেছে। অনেকে গজবের কথা বাদ দিয়ে এখন চীনের বিচার করতে সারা পৃথিবীকে একযোগে কাজ করতে আহবান জানাচ্ছেন; কারণ তাদের বিশ্বাস, চীন এই ভাইরাস ল্যাবরেটরিতে তৈরি করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ইউরোপ ও আমেরিকা সকল উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে ঘরে আবদ্ধ থাকলেও চীন ইতোমধ্যে পুরোদমে সকল ধরনের উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে, করোনা উত্তর অর্থনৈতিক মন্দায় চীন বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনর্জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠবে।

বাঙালি বিজ্ঞানবিমুখ জাতি হওয়ার কথা ছিলো না, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালিকে ভাবাবেগের পরিবর্তে বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলেছিলো। কিন্তু সরকারের অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে কয়েক ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থে চালু হয়ে যায়। কোরআন ও হাদিসে বিজ্ঞানের সকল সূত্র নিহিত রয়েছে বলে আমরা জানি। কিন্তু কোরআন পড়ে মুসলমান গবেষকেরা কিছুই আবিস্কার করতে পারেন না। ইহুদি, নাসারাগণের আবিষ্কারের পর ওয়াজ মাহফিলে আমাদের আলেমেরা গর্ব নিয়ে সেই আবিষ্কারের চৌদ্দ-পনেরো শত বছর পূর্বে ধর্মে প্রোথিত সূত্রের উল্লেখ করেন। আমাদের কিছু আলেম ও ধার্মিকের ধারণা, যারা আবিষ্কার করেন তারা কোরআন গবেষণা করেই আবিষ্কার করেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অন্য ধর্মের লোকেরা ইসলাম ধর্মের গূঢ়ার্থ বুঝতে পারে, অথচ মুসলমান আলেমেরা পারেন না। বিষয়টি লজ্জার। পৃথিবীর সর্বত্র মুসলমান মার খাচ্ছে, মার খাওয়ার পেছনেইহুদি, নাসারাদের ষড়যন্ত্র থাকার কল্পিত কারণ খুঁজে নিয়ে তুষ্ট থাকার চেষ্টাও করা হয়। এটাও লজ্জার, অন্যরা মুসলিম জাতিকে নিয়ে খেলতে পারে- এই দীনতা বোঝার ক্ষমতাও আমরা অর্জন করিনি। আসলে মুসলমানদের এই দুরবস্থার জন্য বিজ্ঞানবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থাই দায়ী।

চরিত্রের বৈপরীত্যের প্রতিফলন আরও বহু ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। পাশ্চাত্যে ইচ্ছে করলেই তিন ফুট দূরত্ব বজায়রেখে চলাফেরা করা সম্ভব, কারণ ওখানে পর্যটক ব্যতীত রাস্তায় দলবদ্ধ হয়ে হাঁটার লোক খুব বেশী নেই। কিন্তু আমাদের দেশে শুধু কবরস্থানেই লোকের স্পর্শ এড়িয়ে চলা সম্ভব। করোনাভাইরাসকে রোধ করতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার অপরিহার্যতা সরকারের তরফ থেকে বলা হলেও লোকজনকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম বলা হলো, ‘বাঙালি ডাণ্ডা ছাড়া ঠাণ্ডা হয় না’। সেনাবাহিনী ও পুলিশ একটু কঠোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় চিৎকার শুরু হলো, ‘পুলিশ-সেনা লোক ঠেঙ্গাচ্ছে কেন? হতদরিদ্র মানুষ বাধ্য হয়ে ঘরের বাইরে যায়।’ তাও সত্য। হতদরিদ্র লোকেরা দিনে এনে দিনে খায়, তাদের একদিনের সঞ্চয়ও থাকে না। ঘর থেকে বের না হলে, কাজ না করলে করোনায় আক্রমণের আগেই না খেয়ে মরে যাবে। পুলিশ-সেনা জনগণের মনোভাব লক্ষ্য করে রাস্তায় আসা লোকদের বুঝিয়ে ঘরের ভেতর পাঠানোর চেষ্টা করলো। কেউ বুঝলো না। পুলিশ, সেনার নমনীয় আচরণ দেখে মানুষ বাসায় বসে চা খাওয়া বন্ধ করে দিলো, ছুটলো চা দোকানে। কিছু লোক রাস্তায় সেনাবাহিনীর পানি ছিটানো দেখতে বের হলো। করেনাভাইরাস খালি চোখে দৃশ্যমান হলে তা দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ লোক আকাশে চাঁদ দেখার মতো রাস্তায় নেমে কার আগে কে দেখেছে তা নিয়ে লাফালাফি করতো। হুমায়ূন আহমেদ বাঙালির চরিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, দুর্গন্ধময় নর্দমা পরিষ্কারের কাজ দেখার জন্যও বাঙালি জড়ো হয় এবং তা উপভোগ করে। রাস্তায় লোকের ভিড় দেখে আবার কিছু বাঙালির টনক নড়ে, এমন হলে তো মরণ ঠেকানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। প্রিন্ট মিডিয়া ও ফেসবুকে আবার পুলিশ, সেনাদের কঠোর হতে বলা হলো। এখানেও একটি সমস্যা রয়েছে; ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সরকার ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরিবদের চাল-ডাল বিতরণ করা হয় বিধায় গরিব লোকগুলো সারা শহরে দল বেঁধে তা সংগ্রহের জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছোটাছুটি করছে। এদের থামানো মুশকিল। এদের থামাতে হলে রাস্তায় খাবার দেয়া বন্ধ করে দিতে হবে। রাস্তায় খাবার দেয়াবন্ধ করা হলে ফেসবুকে গরিবদের পক্ষে আবার চিৎকার শুরু হবে। গরিবদের যারা সহায়তা করছেন তাদের দান করায় ছবি পোস্ট করায় নীতিবানেরা ক্ষেপেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারা গরিবদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছেন তাদের এমন মহতী কাজের প্রচার হওয়া জরুরী, এতে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা যখন ছবি না তোলা পর্যন্ত পোটলা শক্ত করে ধরে থাকেন তখন তা খুব দৃষ্টিকটু মনে হয়।

সারা পৃথিবীতে ইহুদির সংখ্যা মাত্র দেড় কোটি এবং দেশ মাত্র একটি- ইসরাইল। অন্যদিকে মুসলমানের সংখ্যা ১৯০ কোটি এবং দেশ ৫৬টি। এই একটি দেশে বসবাসকারী মাত্র ৫৪ লক্ষ ইহুদির কাছে ফিলিস্তিনি ও মধ্যপ্রাচ্যের অগণিত মুসলমান মার খাচ্ছে। এই মার থেকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে প্রতি শুক্রবারে প্রতিটি মসজিদে দুই হাত তোলে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে ১৯৪৮ সন থেকে। ৫৬টি মুসলিমদেশসহ সারা বিশ্বের করোনার এই গজব শুধু ইহুদিদের উপর নেমে এলে আমাদের বাহাত্তর বছরের প্রার্থনারতাৎপর্য উন্মোচিত হতো এবং ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতন হ্রাস পেত। গজব ইহুদিদের উপরও নেমেছে; তবে যেসকল ইহুদিদের উপর গজব নেমেছে তারাও কট্টর ধর্মান্ধ। অন্যান্য ধর্মের ধর্মান্ধদের মতো ইসরাইলের বেনি ব্রাকশহরের গোঁড়া ইহুদিরা বিশ্বাস করে যে, তারা ঈশ্বরের কাছের লোক বিধায় করোনাভাইরাস তাদের আক্রমণ করবে না, তাদের উপসনালয়ে এই ভাইরাস কখনো ঢুকতে পারবে না। এমন দৃঢ়বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে তারা দলবেঁধে উপসনালয়ে যেতে থাকেন; এখন এই শহরে ৫০ শতাংশ লোক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রতি মুহূর্তে লাশের সংখ্যা বাড়ছে। কোরিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ডে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে গির্জা থেকে, ভারত ও পাকিস্তানে তাবলিগের জামাত থেকে, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ধর্মীয় মজলিশ থেকে, তুরস্কে ওমরাহ পালনকারীদের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী ও রোগীর মৃত্যু সংখ্যা নিয়েও অনেকে মানসিক বৈকল্যে ভুগছেন; তাদের বিশ্বাস, হাজার হাজার লোক এই রোগে মরছে, সরকার প্রকৃত সংখ্যা লুকাচ্ছে। তবে লক্ষ লক্ষ আক্রান্ত ও হাজার হাজার না মরলেও শনাক্তের বাইরে কিছু রোগী অবশ্যই রয়েছে; কারণ পরীক্ষা করার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকায় দেশে করোনাভাইরাসের প্রকৃত অবস্থা স্পষ্ট হচ্ছে না। লক্ষ লক্ষ লোক আক্রান্ত, হাজার হাজার লোকের মৃত্যুর কথা যারা বলছেন তারা যুক্তিগ্রাহ্য দুটি কারণ লক্ষ্য করেছেন বলে মনে হয় না। প্রথমত, বাংলাদেশের আশপাশের দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, লাউস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামেও তো করোনাভাইরাসের মহামারী রূপ পরিলক্ষিত হয়নি। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতেও ইউরোপ এবং আমেরিকার মতো লোক মারা যাচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানেও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা কমই থাকে। রাস্তায় সাধারণ জনতাকে পিটিয়ে ঘরে আবদ্ধ করা সম্ভব হলেও ধর্মান্ধদের রোধ করা কঠিন। গণজমায়েত বন্ধে সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই থিওপিয়ার অর্থডক্স খ্রিস্টানেরা রাজধানী আদ্দিস আবাবার রাস্তায় জড়ো হয়ে করোনা থেকে মুক্তির প্রার্থনা করছে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখলাম, আমাদের দেশে এক প্রবীণ ভদ্রলোক মাস্ক না পরে হাত দিয়ে সর্দি ঝাড়তে ঝাড়তে রাস্তায় চলাফেরা করছেন- ‘মাস্ক কেন পরেননি, মাস্ক না পরলে বাসায় কেন আবদ্ধ থাকেনি’- এমন জিজ্ঞাসায় ক্ষেপে গিয়ে প্রবীণ ভদ্রলোক বললেন, ‘জন্ম, মৃত্যু, রিজিক আল্লাহর হাতে, আল্লাহ যেদিন মৃত্যু রেখেছে সেদিনই মরবো।’ এদের এমন গোয়ার্তুমির কারণে ইতোমধ্যে সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, আমাদের দেশের বস্তিতে এই ভাইরাসের অনুপ্রবেশ হলে আর রক্ষা থাকবে না। তাই সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ত্যাগ করে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া অতি জরুরি।

[লেখক : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী, পরিচালক ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক]

ahmedzeauddin0@gmail.com