চলতি বছর কমলেও আগামী বছর জিডিপি বাড়বে : আইএমএফ

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে চলতি বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে সাড়ে ৯ শতাংশ হবে বলে মনে করে আইএমএফ। ২০২১ সালের পূর্বাভাসটি নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ওপর। সম্প্রতি প্রকাশিত আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ২০২০, দ্য গ্রেট লকডাউন’ প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের ২০২০ সালে কত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে, সেই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

আইএমএফের প্রতিবেদনে উঠে আসে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে চলতি বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নেমে আসবে। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে সাড়ে ৯ শতাংশ হবে বলে মনে করে আইএমএফ। ২০২১ সালের পূর্বাভাসটি নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ওপর। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে আইএমএফ পঞ্জিকাবর্ষ ধরে জিডিপির পূর্বাভাস দিয়েছে। এদিকে গতকাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের যৌথ বসন্তকালীন ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শুরু হয়েছে। আইএমএফ জানিয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে। এ কারণে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আইসোলেশন, লকডাউন করতে হচ্ছে যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যদি চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এই ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক হয়, তবে আগামী বছর প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বের গড় জিডিপি আগের বছরের চেয়ে কমে যাবে। ২০২০ সালে তা ৩ শতাংশ কমতে পারে। অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় গেলে ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো ভুগবে বলে মনে করছে আইএমএফ। সংস্থাটির পূর্বাভাস হলো, প্রায় সব দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক থাকবে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র (মাইনাস ৫ দশমিক ৯ শতাংশ), জার্মানি (মাইনাস ৭ শতাংশ), জাপান (মাইনাস ৫ দশমিক ২ শতাংশ), যুক্তরাজ্য (মাইনাস সাড়ে ৬ শতাংশ), কানাডা (মাইনাস ৬ দশমিক ২ শতাংশ), ব্রাজিল (মাইনাস ৫ দশমিক ৩ শতাংশ) ও রাশিয়া (মাইনাস সাড়ে ৫ শতাংশ)। তবে চীনের ১ দশমিক ২ শতাংশ ও ভারতে ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

বড় দাতা সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। গত রোববার বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর আগে বলেছে, করোনার কারণে বাংলাদেশের জিডিপির দশমিক ২ শতাংশ থেকে দশমিক ৪ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। দ্য ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট মনে করে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে। অবশ্য এসব সংস্থা অর্থবছরের হিসাবে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অবশ্য বলেছেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কোনভাবেই ৬ শতাংশের কম হবে না।

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০ , ৩ বৈশাখ ১৪২৭, ২১ শাবান ১৪৪১

চলতি বছর কমলেও আগামী বছর জিডিপি বাড়বে : আইএমএফ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে চলতি বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে সাড়ে ৯ শতাংশ হবে বলে মনে করে আইএমএফ। ২০২১ সালের পূর্বাভাসটি নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ওপর। সম্প্রতি প্রকাশিত আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ২০২০, দ্য গ্রেট লকডাউন’ প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের ২০২০ সালে কত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে, সেই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

আইএমএফের প্রতিবেদনে উঠে আসে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে চলতি বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নেমে আসবে। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে সাড়ে ৯ শতাংশ হবে বলে মনে করে আইএমএফ। ২০২১ সালের পূর্বাভাসটি নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ওপর। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যউপাত্তের ভিত্তিতে আইএমএফ পঞ্জিকাবর্ষ ধরে জিডিপির পূর্বাভাস দিয়েছে। এদিকে গতকাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের যৌথ বসন্তকালীন ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শুরু হয়েছে। আইএমএফ জানিয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে। এ কারণে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আইসোলেশন, লকডাউন করতে হচ্ছে যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যদি চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এই ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক হয়, তবে আগামী বছর প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বের গড় জিডিপি আগের বছরের চেয়ে কমে যাবে। ২০২০ সালে তা ৩ শতাংশ কমতে পারে। অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় গেলে ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো ভুগবে বলে মনে করছে আইএমএফ। সংস্থাটির পূর্বাভাস হলো, প্রায় সব দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক থাকবে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র (মাইনাস ৫ দশমিক ৯ শতাংশ), জার্মানি (মাইনাস ৭ শতাংশ), জাপান (মাইনাস ৫ দশমিক ২ শতাংশ), যুক্তরাজ্য (মাইনাস সাড়ে ৬ শতাংশ), কানাডা (মাইনাস ৬ দশমিক ২ শতাংশ), ব্রাজিল (মাইনাস ৫ দশমিক ৩ শতাংশ) ও রাশিয়া (মাইনাস সাড়ে ৫ শতাংশ)। তবে চীনের ১ দশমিক ২ শতাংশ ও ভারতে ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

বড় দাতা সংস্থাগুলোও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। গত রোববার বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর আগে বলেছে, করোনার কারণে বাংলাদেশের জিডিপির দশমিক ২ শতাংশ থেকে দশমিক ৪ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। দ্য ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট মনে করে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে। অবশ্য এসব সংস্থা অর্থবছরের হিসাবে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অবশ্য বলেছেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কোনভাবেই ৬ শতাংশের কম হবে না।