করোনা : পরীক্ষা বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তরণের পরীক্ষার পরিধি যত বাড়ছে রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ৩৯ দিন পার হয়েছে। শুরুর দিকে পরীক্ষা কম হয়েছে, শনাক্তও কম হয়েছে। দিন দিন স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরীক্ষাও বাড়ছে; যদিও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল (১৫ এপ্রিল) পর্যন্ত ৩৯ দিনে ১৪ হাজার ৮৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ২৩১ জনের নামুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৫০ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন।

উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যত পরীক্ষা হবে, রোগী শনাক্তের সংখ্যা তত বাড়বে।

প্রথম দিন (৮ এপ্রিল) ৩ জন রোগী শনাক্তের পর টানা ছয়দিন কোন রোগী শনাক্ত হয়নি। এরপর মার্চজুড়ে দৈনিক দুই থেকে সর্বোচ্চ ছয়জন রোগী শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের সংখ্যা শূন্যের কোটায় ছিল ৯ দিন। ৩১ মার্চ ২৪তম দিনে দুইজন রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫১ জনে। এপ্রিলের ১ থেকে ৪ তারিখ পর্যন্ত দৈনিক রোগী শনাক্ত হয় যথাক্রমে ৩, ২, ৫ ও ৯ জন। ৫ এপ্রিল ২৯তম দিনে ১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়; এই প্রথম শনাক্তের সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছায়। ত্রিশতম দিনে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৫ এ দাঁড়ায়। এরপর ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রেট’ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই হু হু করে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা।

একত্রিশতম দিনে (৭ এপ্রিল) ৪১ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়। এরপর বত্রিশতম দিনে ৫৪ জন, তেত্রিশতম দিনে ১১২ জন, চৌত্রিশতম দিনে ৯৪ জন, পঁয়ত্রিশতম দিনে ৫৮ জন, ছত্রিশতম দিনে ১৩৯ জন, সাইত্রিশতম দিনে ১৮২ জন, আটত্রিশতম দিনে (১৪ এপ্রিল) ২০৯ জন এবং সর্বশেষ গতকাল (১৫ এপ্রিল) ঊনচল্লিশতম দিনে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১৯ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়।

বাংলাদেশ এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের চতুর্থ স্তরে। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভাইরাসটি এই মুহূর্তে অতি দ্রুত ছড়াচ্ছে। কবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ হবে, তা কেউ জানেন না। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি, লকডাউনসহ বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের উদ্যোগকে সর্বশক্তি দিয়ে আরও জোরালো করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুধবার করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে বারিধারার বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে বলেন, দেশে ২০টি ল্যাবে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। অনেকে পরীক্ষা করতে চান না। পরীক্ষা করান, নিজে ভালো থাকুন, পরিবারকে ভালো রাখুন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকায় অন্যান্য স্থান মিলিয়ে মোট সাড়ে চার হাজার শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন আরও হাসপাতাল সংযোজন করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, জনগণ প্রয়োজন ছাড়াই বাইরে ঘোরাফেরা করে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা বাড়িতে থাকবেন। যত বেশি বাইরে ঘোরাফেরা করবেন, এই সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। আমাদের চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ইউরোপ, আমেরিকাতে চিকিৎসা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা যেতে চাই না।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রেট’ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ফলে এপ্রিলজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় রোগটি নিয়ন্ত্রণে জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা এবং উপজেলা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। যাতে দ্রুত শনাক্ত করে রোগীকে আইসোলেশনে রাখা যায়। এভাবেই করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এই একই কথা বলে আসছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে চেম্বারে বসছেন না অনেক চিকিৎসক; অনেক জায়গায় টেকনিশিয়ানরা কর্মস্থলে না থাকায় রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাও বন্ধ আছে বলে রোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে। সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা উপসর্গ নিয়ে অনেকেই ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। অনেকে ডাক্তার দেখাতে পারলেও দ্রুত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা যাচ্ছে না, সরকারের সীমাবদ্ধতার কারণে। আবার অনেকের এসব উপসর্গ থাকলেও ভয়ে গোপন রাখছেন, ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন না। কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মুত্য এবং রোগী রেখে চিকিৎসকদের পালিয়ে যাওয়ার খবরও গণমাধ্যমে এসেছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহানে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বের অধিকাংশ দেশ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের শিকার হয়েছে। মাত্র তিন মাসে বিশ্বে ২০ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ মানুষ। প্রাণ গেছে এক লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষের, যার মধ্যে উন্নত দেশগুলোর লোকই বেশি।

মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ যেন না ছড়ায়, সেজন্য জনসাধারণকে ঘরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিজ্ঞানীরাও একই কথা বলছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যেহেতু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, তাই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মুহূর্তে মানুষকে ঘরে রাখা জরুরি। করোনা নিয়ে সারাদেশে আতঙ্ক তৈরি হলেও সচেতনতার অভাবে আবার অনেক ক্ষেত্রে পেটের দায়ে সাধারণ মানুষ ঘরে থাকছে না। জনবল সংকটে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগানোর কথা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজবিজ্ঞানীরা।

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০ , ৩ বৈশাখ ১৪২৭, ২১ শাবান ১৪৪১

করোনা : পরীক্ষা বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে

ফয়েজ আহমেদ তুষার |

image

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্তরণের পরীক্ষার পরিধি যত বাড়ছে রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ৩৯ দিন পার হয়েছে। শুরুর দিকে পরীক্ষা কম হয়েছে, শনাক্তও কম হয়েছে। দিন দিন স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরীক্ষাও বাড়ছে; যদিও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল (১৫ এপ্রিল) পর্যন্ত ৩৯ দিনে ১৪ হাজার ৮৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ২৩১ জনের নামুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৫০ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন।

উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যত পরীক্ষা হবে, রোগী শনাক্তের সংখ্যা তত বাড়বে।

প্রথম দিন (৮ এপ্রিল) ৩ জন রোগী শনাক্তের পর টানা ছয়দিন কোন রোগী শনাক্ত হয়নি। এরপর মার্চজুড়ে দৈনিক দুই থেকে সর্বোচ্চ ছয়জন রোগী শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের সংখ্যা শূন্যের কোটায় ছিল ৯ দিন। ৩১ মার্চ ২৪তম দিনে দুইজন রোগী শনাক্তের মধ্য দিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫১ জনে। এপ্রিলের ১ থেকে ৪ তারিখ পর্যন্ত দৈনিক রোগী শনাক্ত হয় যথাক্রমে ৩, ২, ৫ ও ৯ জন। ৫ এপ্রিল ২৯তম দিনে ১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়; এই প্রথম শনাক্তের সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছায়। ত্রিশতম দিনে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩৫ এ দাঁড়ায়। এরপর ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রেট’ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিনই হু হু করে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা।

একত্রিশতম দিনে (৭ এপ্রিল) ৪১ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়। এরপর বত্রিশতম দিনে ৫৪ জন, তেত্রিশতম দিনে ১১২ জন, চৌত্রিশতম দিনে ৯৪ জন, পঁয়ত্রিশতম দিনে ৫৮ জন, ছত্রিশতম দিনে ১৩৯ জন, সাইত্রিশতম দিনে ১৮২ জন, আটত্রিশতম দিনে (১৪ এপ্রিল) ২০৯ জন এবং সর্বশেষ গতকাল (১৫ এপ্রিল) ঊনচল্লিশতম দিনে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১৯ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়।

বাংলাদেশ এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের চতুর্থ স্তরে। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভাইরাসটি এই মুহূর্তে অতি দ্রুত ছড়াচ্ছে। কবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধ হবে, তা কেউ জানেন না। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি, লকডাউনসহ বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের উদ্যোগকে সর্বশক্তি দিয়ে আরও জোরালো করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বুধবার করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে বারিধারার বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে বলেন, দেশে ২০টি ল্যাবে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। অনেকে পরীক্ষা করতে চান না। পরীক্ষা করান, নিজে ভালো থাকুন, পরিবারকে ভালো রাখুন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকায় অন্যান্য স্থান মিলিয়ে মোট সাড়ে চার হাজার শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন আরও হাসপাতাল সংযোজন করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, জনগণ প্রয়োজন ছাড়াই বাইরে ঘোরাফেরা করে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা বাড়িতে থাকবেন। যত বেশি বাইরে ঘোরাফেরা করবেন, এই সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। আমাদের চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ইউরোপ, আমেরিকাতে চিকিৎসা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমরা যেতে চাই না।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রেট’ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। ফলে এপ্রিলজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় রোগটি নিয়ন্ত্রণে জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা এবং উপজেলা পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। যাতে দ্রুত শনাক্ত করে রোগীকে আইসোলেশনে রাখা যায়। এভাবেই করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এই একই কথা বলে আসছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে চেম্বারে বসছেন না অনেক চিকিৎসক; অনেক জায়গায় টেকনিশিয়ানরা কর্মস্থলে না থাকায় রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাও বন্ধ আছে বলে রোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে। সর্দি, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা উপসর্গ নিয়ে অনেকেই ডাক্তার দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। অনেকে ডাক্তার দেখাতে পারলেও দ্রুত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা যাচ্ছে না, সরকারের সীমাবদ্ধতার কারণে। আবার অনেকের এসব উপসর্গ থাকলেও ভয়ে গোপন রাখছেন, ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন না। কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মুত্য এবং রোগী রেখে চিকিৎসকদের পালিয়ে যাওয়ার খবরও গণমাধ্যমে এসেছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহানে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বের অধিকাংশ দেশ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের শিকার হয়েছে। মাত্র তিন মাসে বিশ্বে ২০ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ মানুষ। প্রাণ গেছে এক লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষের, যার মধ্যে উন্নত দেশগুলোর লোকই বেশি।

মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ যেন না ছড়ায়, সেজন্য জনসাধারণকে ঘরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিজ্ঞানীরাও একই কথা বলছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যেহেতু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি, তাই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মুহূর্তে মানুষকে ঘরে রাখা জরুরি। করোনা নিয়ে সারাদেশে আতঙ্ক তৈরি হলেও সচেতনতার অভাবে আবার অনেক ক্ষেত্রে পেটের দায়ে সাধারণ মানুষ ঘরে থাকছে না। জনবল সংকটে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীও সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনপ্রতিনিধিদের কাজে লাগানোর কথা বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজবিজ্ঞানীরা।