করোনায় পেছাতে পারে বাজেট ঘোষণা

করোনাভাইরাসের কারণে পুরো দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিস বন্ধ করে সবাইকে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। এ পরিস্থিতে আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা দুই মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে সারাদেশে সরকারি ছুটি চলছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ছুটি আরও বাড়তে পারে। এজন্য বাজেট প্রণয়নের প্রস্তুতি বাধার মুখে পড়েছে। সাধারণ ছুটির মধ্যে সব ধরনের প্রাক-বাজেট আলোচনাও বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র ই-নথির মাধ্যমে অনলাইনে অতি জরুরি কিছু কাজ করছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাই আগামী বাজেট ঘোষণা দুই মাস পিছিয়ে আগস্টে হতে পারে। তবে এটা চূড়ান্ত নয়। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

বাজেট আইন বা অর্থবিল অনুযায়ী দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই মাসে আর শেষ হয় জুন মাসে। সে অনুযায়ী প্রতি বছর জুনের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনার পর সেটা পাস করা হয় জুন মাসের একেবারে শেষের দিকে। সে বাজেট কার্যকর হয় জুলাইয়ের প্রথম দিন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বাজেট ঘোষণা পেছানোর জন্য ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট ঘোষণা না পেছানোর পক্ষে মত দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে বলেছেন এখনই পেছানোর ঘোষণা নয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলতি মাসের শেষের দিকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাধারণত বাজেট প্রণয়নে মার্চ মাস থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছে এনবিআর আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা। জানা গেছে, নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে পৃথকভাবে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বসে। গত ১১ মার্চ এনবিআরের প্রথম সচিব (মূসক নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা) ড. আবু নুর রাশেদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট আলোচনা শুরু হচ্ছে ১৯ মার্চ। মোট ২৮টি খাত-উপখাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের শুল্ক, ভ্যাট ও করসংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করবে এনবিআর। এটি চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। অবশ্য কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন ই মেইলের মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। অর্থমন্ত্রণালয়ের আলোচনা কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে দেশে সাধারণ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ অবস্থায় প্রাক-বাজেট আলোচনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের কাজও এ সময় হয়ে থাকে। সেটির কাজও স্থবির হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এতদিনে আমাদের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ ছুটির কারণে সব অফিস এখন বন্ধ। ফলে সে কাজটিও করা সম্ভব হচ্ছে না।

আরও খবর
এ অবস্থার উত্তোরণ ঘটাতে পারবো প্রধানমন্ত্রী
ঘরোয়া ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
প্রাথমিক শিক্ষকদের পেনশন প্রদানে মডেল যশোর
আইজিপির দায়িত্ব নিলেন বেনজীর
নারায়ণগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে আটক তিন শতাধিক
রংপুর-শরীয়তপুর লকডাউন ঘোষণা
সংক্রমিত এলাকা ও ডাক্তার মিলবে অ্যাপে
সিঙ্গাপুরে মাস্ক না পরলে ৩০০ ডলার জরিমানা
প্রবাসীর মৃত্যু হলে পরিবার পাবে ৩ লাখ টাকা
নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালের সুপারসহ ১৭ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় আক্রান্তের গুজব ছড়িয়ে হামলা কলেজছাত্রীসহ আহত ১১
প্রতিদিন টেলিফোন করেই ধরা খায় মাজেদ
টাঙ্গাইলের মৃৎশিল্পীদের স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২০ , ৩ বৈশাখ ১৪২৭, ২১ শাবান ১৪৪১

করোনায় পেছাতে পারে বাজেট ঘোষণা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

করোনাভাইরাসের কারণে পুরো দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিস বন্ধ করে সবাইকে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। এ পরিস্থিতে আগামী বাজেট প্রণয়নের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা দুই মাস পিছিয়ে যেতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে সারাদেশে সরকারি ছুটি চলছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ছুটি আরও বাড়তে পারে। এজন্য বাজেট প্রণয়নের প্রস্তুতি বাধার মুখে পড়েছে। সাধারণ ছুটির মধ্যে সব ধরনের প্রাক-বাজেট আলোচনাও বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র ই-নথির মাধ্যমে অনলাইনে অতি জরুরি কিছু কাজ করছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তাই আগামী বাজেট ঘোষণা দুই মাস পিছিয়ে আগস্টে হতে পারে। তবে এটা চূড়ান্ত নয়। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

বাজেট আইন বা অর্থবিল অনুযায়ী দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই মাসে আর শেষ হয় জুন মাসে। সে অনুযায়ী প্রতি বছর জুনের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনার পর সেটা পাস করা হয় জুন মাসের একেবারে শেষের দিকে। সে বাজেট কার্যকর হয় জুলাইয়ের প্রথম দিন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বাজেট ঘোষণা পেছানোর জন্য ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট ঘোষণা না পেছানোর পক্ষে মত দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে বলেছেন এখনই পেছানোর ঘোষণা নয়। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চলতি মাসের শেষের দিকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাধারণত বাজেট প্রণয়নে মার্চ মাস থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছে এনবিআর আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা। জানা গেছে, নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে পৃথকভাবে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বসে। গত ১১ মার্চ এনবিআরের প্রথম সচিব (মূসক নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা) ড. আবু নুর রাশেদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট আলোচনা শুরু হচ্ছে ১৯ মার্চ। মোট ২৮টি খাত-উপখাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের শুল্ক, ভ্যাট ও করসংক্রান্ত বিষয়ে মতবিনিময় করবে এনবিআর। এটি চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। অবশ্য কিছু ব্যবসায়ী সংগঠন ই মেইলের মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। অর্থমন্ত্রণালয়ের আলোচনা কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে।

করোনাভাইরাসের কারণে দেশে সাধারণ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ অবস্থায় প্রাক-বাজেট আলোচনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের কাজও এ সময় হয়ে থাকে। সেটির কাজও স্থবির হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এতদিনে আমাদের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ ছুটির কারণে সব অফিস এখন বন্ধ। ফলে সে কাজটিও করা সম্ভব হচ্ছে না।