মার্চের বেতন পাননি ৩ লাখ ১৩ হাজার পোশাক শ্রমিক

এপ্রিলের ১৬ তারিখের মধ্যে মার্চের বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হলেও এখনও প্রায় ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ পোশাক শ্রমিক বেতন পাননি। গতকাল পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে আরও বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ শ্রমিক মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের ৮৭ শতাংশ। আর সংগঠনটির সদস্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ শ্রমিক এখনো মার্চ মাসের বেতন পাননি, যা বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের ১৩ শতাংশ। বিজিএমইএ থেকে জানানো হয়, বিজিএমইএর কারখানায় কর্মরত ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭ শ্রমিকের মধ্যে ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ জন মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন। এ হিসাবে এখনও মার্চ মাসের বেতন পাননি ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ গার্মেন্টস শ্রমিক। বিজিএমইএর সদস্য দুই হাজার ২৭৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক হাজার ৬৬৫টি প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ ৭৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে। এছাড়া ঢাকার ৯৭ এবং চট্টগ্রামের ১১৯ প্রতিষ্ঠানের বেতন পরিশোধ প্রক্রিয়াধীন। এর আগে গত বুধবার বিজিএমইএ থেকে জানানো হয়, দুই হাজার ২৭৪ কারখানার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় রয়েছে ৩৭২টি যার মধ্যে মার্চের বেতন দিয়েছে ২০১ প্রতিষ্ঠান। গাজীপুরের ৮১৮ কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ৪৩২টি, সাভার আশুলিয়ায় ৪৯১টির মধ্যে বেতন দিয়েছে ২৪৩, নারায়ণগঞ্জে ২৬৯ পোশাক কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ১১৮, চট্টগ্রামের ৩২৪ কারখানার মধ্যে ১৫৬ এবং প্রত্যন্ত এলাকার ৪২টি গার্মেন্টসের মধ্যে ৩৬ গার্মেন্টসের মালিকরা মোট ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করেছেন।

বিপরীতে গত বুধবার পর্যন্ত এক হাজার ৮৮টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেননি মালিকরা। বেতন না পেয়ে করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়েও মার্চ মাসের বেতন-ভাতার দাবিতে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এ পরিস্থিতিতে গতকাল সকালে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এক বিবৃতিতে জানায়, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সব পোশাক শ্রমিকের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এখনও ৩০ শতাংশ শ্রমিক মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পায়নি।

সংগঠনটির সভাপতি আমিরুল হক আমিন এ বিবৃতিতে বলেন, প্রায় ৩০ শতাংশ পোশাক শ্রমিক আজও মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পেল না। অথচ ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সব গার্মেন্টসে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এমনকি যেসব মালিক ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে না, তাদের কারখানার লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দেন প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু সরকারের নির্দেশ অমান্য করে এই মালিকরা বেতন-ভাতা পরিশোধ করল না। যারা বেতন দিয়েছে সেসব কারখানার মধ্যে আবার কোন কোন মালিক মার্চ মাসের পাঁচ দিনের বেতন কর্তন করেছেন, এটিও বেআইনি এবং অন্যায়। তাই অবিলম্বে সব পোশাক শ্রমিকের বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে অবিলম্বে এসব মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০২০ , ৪ বৈশাখ ১৪২৭, ২২ শাবান ১৪৪১

মার্চের বেতন পাননি ৩ লাখ ১৩ হাজার পোশাক শ্রমিক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

এপ্রিলের ১৬ তারিখের মধ্যে মার্চের বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হলেও এখনও প্রায় ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ পোশাক শ্রমিক বেতন পাননি। গতকাল পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে আরও বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ শ্রমিক মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শ্রমিকদের ৮৭ শতাংশ। আর সংগঠনটির সদস্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তিন লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ শ্রমিক এখনো মার্চ মাসের বেতন পাননি, যা বিজিএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের ১৩ শতাংশ। বিজিএমইএ থেকে জানানো হয়, বিজিএমইএর কারখানায় কর্মরত ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭ শ্রমিকের মধ্যে ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ জন মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন। এ হিসাবে এখনও মার্চ মাসের বেতন পাননি ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩১৭ গার্মেন্টস শ্রমিক। বিজিএমইএর সদস্য দুই হাজার ২৭৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক হাজার ৬৬৫টি প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ ৭৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের মার্চের বেতন পরিশোধ করেছে। এছাড়া ঢাকার ৯৭ এবং চট্টগ্রামের ১১৯ প্রতিষ্ঠানের বেতন পরিশোধ প্রক্রিয়াধীন। এর আগে গত বুধবার বিজিএমইএ থেকে জানানো হয়, দুই হাজার ২৭৪ কারখানার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় রয়েছে ৩৭২টি যার মধ্যে মার্চের বেতন দিয়েছে ২০১ প্রতিষ্ঠান। গাজীপুরের ৮১৮ কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ৪৩২টি, সাভার আশুলিয়ায় ৪৯১টির মধ্যে বেতন দিয়েছে ২৪৩, নারায়ণগঞ্জে ২৬৯ পোশাক কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ১১৮, চট্টগ্রামের ৩২৪ কারখানার মধ্যে ১৫৬ এবং প্রত্যন্ত এলাকার ৪২টি গার্মেন্টসের মধ্যে ৩৬ গার্মেন্টসের মালিকরা মোট ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করেছেন।

বিপরীতে গত বুধবার পর্যন্ত এক হাজার ৮৮টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেননি মালিকরা। বেতন না পেয়ে করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়েও মার্চ মাসের বেতন-ভাতার দাবিতে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এ পরিস্থিতিতে গতকাল সকালে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এক বিবৃতিতে জানায়, ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সব পোশাক শ্রমিকের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এখনও ৩০ শতাংশ শ্রমিক মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পায়নি।

সংগঠনটির সভাপতি আমিরুল হক আমিন এ বিবৃতিতে বলেন, প্রায় ৩০ শতাংশ পোশাক শ্রমিক আজও মার্চ মাসের বেতন-ভাতা পেল না। অথচ ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সব গার্মেন্টসে বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এমনকি যেসব মালিক ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করবে না, তাদের কারখানার লাইসেন্স নবায়ন না করাসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দেন প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু সরকারের নির্দেশ অমান্য করে এই মালিকরা বেতন-ভাতা পরিশোধ করল না। যারা বেতন দিয়েছে সেসব কারখানার মধ্যে আবার কোন কোন মালিক মার্চ মাসের পাঁচ দিনের বেতন কর্তন করেছেন, এটিও বেআইনি এবং অন্যায়। তাই অবিলম্বে সব পোশাক শ্রমিকের বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়ে অবিলম্বে এসব মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।