লকডাউনের মধ্যে দেশের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে ফসলের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এই মুহূর্তে যে দুর্যোগ পরিস্থিতি চলছে, এই পরিস্থিতিতে আমাদের সমস্ত মনোযোগ থাকা উচিত মহামারী মোকাবিলায়। তাই এখন জাতীয় বাজেট তৈরি করার কোন স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল ‘করোনা মোকাবিলায় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানসমূহের তৎপরতার কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সরকারের প্রতি সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনটি সিপিডি ও নাগরিক প্লাটফর্মের ফেসবুক পেজে লাইভ দেখানো হয়।
তিনি বলেন, করোনার কারণে এখন দেশ প্রায় অবরুদ্ধ। কৃষক তার ফসল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। গণপরিবহন, রেল যোগাযোগ ও নৌপরিবহন বন্ধ থাকায় কৃষিজাত পণ্য পরিবহন বাধার সম্মুখীন। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা এই মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের যেই সমস্ত সরবরাহ কাঠামো ছিল তা ভেঙে গেছে। এর ফলে উৎপাদকরা বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে যারা রয়েছেন তারা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব হলো সরকারের পক্ষ থেকে খুব দ্রুততার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে এই কৃষি উদ্যোক্তার কাছ থেকে ফসল শহরে আনা। বিশেষ করে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য একটি পরিবহন চ্যানেল ব্যবস্থা করা দরকার। সম্ভব হলে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে এগুলোকে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় সরবরাহের জন্য আমরা প্রস্তাব করছি। কৃষক ফসল ফলাচ্ছে সেগুলো যেন পচে না যায়। বিশেষ করে টমেটো, শশা বিভিন্ন রকমের সবজি এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আসছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমি ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরতে পারি, এই মুহূর্তে যে দুর্যোগ পরিস্থিতি চলছে, এই পরিস্থিতিতে আমাদের সমস্ত মনোযোগ থাকা উচিত মহামারী মোকাবিলায়।
মহামারী মোকাবিলার পরে স্থিতিশীল হলে তখন বিবেচনা করা উচিত। আগামী দুই তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। তবে জুন মাস পর্যন্ত একটা সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি চলমান থাকতে হবে বাজেট নিয়ে। এখন যে পরিস্থিতি আছে তাতে বাজেট তৈরির মতো পরিস্থিতি আছে বলে মনে হয় না। কারণ বাজেট শুধু ব্যয় নয় আয়ের কথাও চিন্তা করতে হবে। বাজেট নিয়ে চিন্তা করার জন্য স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই।
সাধারণত বাজেট প্রণয়নে মার্চ মাস থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের মহামারীতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনাও।
জানা গেছে, বাজেট আইন বা অর্থবিল অনুযায়ী দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই মাসে আর শেষ হয় জুন মাসে। সে অনুযায়ী প্রতি বছর জুনের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত বাজেটের উপর দীর্ঘ আলোচনার পর সেটা পাস করা হয় জুন মাসের একেবারে শেষের দিকে। সে বাজেট কার্যকর হয় জুলাইয়ের প্রথম দিন হতে।
বাংলাদেশে প্রায় ১১৫টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের সংস্থাদের নিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গঠিত। সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ব্রিফিংয়ে নিজ নিজ বাসা থেকে সংযুক্ত হন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
রবিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২০ , ৬ বৈশাখ ১৪২৭, ২৪ শাবান ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
লকডাউনের মধ্যে দেশের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে ফসলের বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করছেন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এই মুহূর্তে যে দুর্যোগ পরিস্থিতি চলছে, এই পরিস্থিতিতে আমাদের সমস্ত মনোযোগ থাকা উচিত মহামারী মোকাবিলায়। তাই এখন জাতীয় বাজেট তৈরি করার কোন স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল ‘করোনা মোকাবিলায় বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানসমূহের তৎপরতার কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সরকারের প্রতি সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনটি সিপিডি ও নাগরিক প্লাটফর্মের ফেসবুক পেজে লাইভ দেখানো হয়।
তিনি বলেন, করোনার কারণে এখন দেশ প্রায় অবরুদ্ধ। কৃষক তার ফসল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। গণপরিবহন, রেল যোগাযোগ ও নৌপরিবহন বন্ধ থাকায় কৃষিজাত পণ্য পরিবহন বাধার সম্মুখীন। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা এই মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের যেই সমস্ত সরবরাহ কাঠামো ছিল তা ভেঙে গেছে। এর ফলে উৎপাদকরা বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে যারা রয়েছেন তারা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব হলো সরকারের পক্ষ থেকে খুব দ্রুততার সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে এই কৃষি উদ্যোক্তার কাছ থেকে ফসল শহরে আনা। বিশেষ করে ঢাকায় নিয়ে আসার জন্য একটি পরিবহন চ্যানেল ব্যবস্থা করা দরকার। সম্ভব হলে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে এগুলোকে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকায় সরবরাহের জন্য আমরা প্রস্তাব করছি। কৃষক ফসল ফলাচ্ছে সেগুলো যেন পচে না যায়। বিশেষ করে টমেটো, শশা বিভিন্ন রকমের সবজি এদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আসছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. দেবপ্রিয় বলেন, আমি ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরতে পারি, এই মুহূর্তে যে দুর্যোগ পরিস্থিতি চলছে, এই পরিস্থিতিতে আমাদের সমস্ত মনোযোগ থাকা উচিত মহামারী মোকাবিলায়।
মহামারী মোকাবিলার পরে স্থিতিশীল হলে তখন বিবেচনা করা উচিত। আগামী দুই তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। তবে জুন মাস পর্যন্ত একটা সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি চলমান থাকতে হবে বাজেট নিয়ে। এখন যে পরিস্থিতি আছে তাতে বাজেট তৈরির মতো পরিস্থিতি আছে বলে মনে হয় না। কারণ বাজেট শুধু ব্যয় নয় আয়ের কথাও চিন্তা করতে হবে। বাজেট নিয়ে চিন্তা করার জন্য স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই।
সাধারণত বাজেট প্রণয়নে মার্চ মাস থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা করে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের মহামারীতে অনিশ্চয়তায় পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনাও।
জানা গেছে, বাজেট আইন বা অর্থবিল অনুযায়ী দেশে অর্থবছর শুরু হয় জুলাই মাসে আর শেষ হয় জুন মাসে। সে অনুযায়ী প্রতি বছর জুনের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত বাজেটের উপর দীর্ঘ আলোচনার পর সেটা পাস করা হয় জুন মাসের একেবারে শেষের দিকে। সে বাজেট কার্যকর হয় জুলাইয়ের প্রথম দিন হতে।
বাংলাদেশে প্রায় ১১৫টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের সংস্থাদের নিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গঠিত। সংগঠনের আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ব্রিফিংয়ে নিজ নিজ বাসা থেকে সংযুক্ত হন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপের সদস্য মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।