আইসিইউ অক্সিজেন ও বিশেষজ্ঞের অভাব

‘নতুন করে হচ্ছে ১২০টি আইসিইউ সিট’

করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আক্রান্তদের মধ্যে যে সব রোগী শ্বাসকষ্ট হয় তাদের জন্য আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞসহ নানা সমস্যার কারণে আইসিইউ যেন এখন সোনার হরিণ হয়ে পড়েছে। কয়েকটি হাসপাতালে আইসিইউ থাকলেও রোগীর তুলনায় কম। আর হঠাৎ করে জোড়াতালি দিয়ে আইসিইউ হয় না। অক্সিজেন প্ল্যান্টের দরকার। তিন মাস আগে থেকে এসব প্রস্তুতি নেয়ার দরকার ছিল তা করা হয়নি। কত রোগী আক্রান্ত হবে আর কত রোগীর জন্য আইসিইউ লাগবে তার একটি ছক তৈরি করে পদক্ষেপ নেয়ার দরকার ছিল। কিন্তু কিছুই করা হয়নি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বর্তমানে সারাদেশে করোনাভাইরাসের রোগীর জন্য সারাদেশে দুই শতাধিক আইসিইউ আছে। আর অন্য রোগের রোগীর জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার আইসিইউ আছে বলে আইসিইউ বিশেষজ্ঞ জানান।

চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, কত লোক আক্রান্ত হতে পারে এর কোন হিসাব নেই। আক্রান্তের সংখ্যা প্রথমে ১ জন ছিল। এখন বেড়ে প্রায় আড়াই হাজার হয়েছে। এ সংখ্যা বেড়েই চলছে। অন্তত তিন মাস আগ থেকে পরিকল্পনা মতে, কাজ করার দরকার ছিল। হঠাৎ করে জোড়াতালি দিয়ে আইসিইউ হয় না। অক্সিজেন প্ল্যান্ট লাগে। আইসিইউ জনবলের জন্য ট্রেনিং লাগে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে আগে থেকে ছক তৈরি করে কাজ করার দরকার ছিল তা করা হয়নি। এখন ঠেলাধাক্কা দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

আইসিইউ বিশেষজ্ঞ কমিটির একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা রোগীদের জন্য নতুন করে ১২০টি আইসিইউ বিভিন্ন হাসপাতালে দেয়া হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৫ ভাগ রোগীর আইসিইউ দরকার। সে অনুপাতে আইসিইউ নেই। ভেন্টিলেটার ও অন্য যন্ত্রপাতি এবং টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। আইসিইউ বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক বলেন, এখন সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ দেয়া হচ্ছে। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ কিছু হাসপাতালে আইসিইউ আছে। ঢাকার কোন কোন হাসপাতালে ১২ থেকে ২০টি আইসিইউ থাকলেও ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতালে কোন আইসিইউ নেই। আর আইসিইউর জন্য আলাদা জায়গা, ভেন্টিলেটার, যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু হঠাৎ করে বিশেষজ্ঞ পাওয়া কষ্টকর। সরকার নতুন করে জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য ৫০০ বেড চালু করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে ১২০টি নতুন বেড চালু করেছে। সিলেট, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে এসব বেড চালু করা হয়েছে। অন্যগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে বলে এ বিশেষজ্ঞ জানান। তিনি বলেন, আইসিইউ চালানোর জন্য ইতোমধ্যে অনেককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক স্থানে ভেন্টিলেটার, অক্সিজেন ও বিশেষজ্ঞ জনবলের অভাবের কারণে আইসিইউ বসানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে আইসিইউ বিশেষজ্ঞ সংকট মারাত্মক। সারাদেশে বিশেষজ্ঞ আছে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন। যার কারণে আপাতত অ্যানেসথেসিয়া, অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার দিয়ে কোনমতে কাজ চালিয়ে নেয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ চালু করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সও দরকার। এ জন্য সময় লাগবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারের দরকার। এছাড়াও আইসিইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহ, এক্স-রে মেশিন, ইসিজি মেশিন, আলাদা মনিটরসহ অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ দরকার।

আইসিইউ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালসহ অন্য হাসপাতাল মিলে এখন ৬শ’র মতো আইসিইউ আছে। ইউরোপ, আমেরিকা, ইতালি ও জার্মানিসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে আইসিইউ বেশি থাকলেও এখন মহামারীর সময় যে পরিমাণ আইসিইউ দরকার তা পর্যাপ্ত নেই। এখন চিকিৎসা ক্ষেত্রে আইসিইউর চাহিদা বাড়ছে। সেই অনুপাতে আইসিইউ সংকট থাকায় বিশ্বজুড়ে সমস্যা হচ্ছে। আইসিইউ চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি করতে সময় লাগে। সরকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ তৈরিতে যে জনবল লাগবে এবং জনবলের উন্নয়ন ও প্রাশিক্ষণের প্রক্রিয়ার জন্য ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

সূত্র জানায়, প্রতিটি আইসিইউর জন্য বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞ আছে মাত্র ১শ’ থেকে ১৫০ জন। সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসকের পদ আছে প্রায় ১২শ’। এর মধ্যে অনেক পদ এখনও শূন্য রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আলাদা আইসিইউ চালু করলে ৫শ’ বেডের জন্য ৩ জন করে নার্স কমপক্ষে ১৫শ’ নার্স দরকার। তাদের আবার প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। করোনাভাইরাসের রোগীর ডিউটি করলে তাদের আলাদাভাবে রাখতে হবে। ১৫ দিন উিউটি আর ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। আইসিইউ বেডের জন্য পালাক্রমে ডিউটি করতে হলে ৬শ’ থেকে ৭শ’ ডাক্তার দরকার আছে। এরপর টেকনিশিয়ান থেকে ক্লিনার সবই লাগবে। এসব বিষয় নিয়ে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া কমিটি কাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশের মুমূর্ষু রোগীর জন্য স্বজনরা আইসিইউ না পেয়ে অনেকেই দ্বারে দ্বারে ঘুরে তদবির করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সিট সংকট থাকায় ভিআইপি তদবিরেও কাজ হয় না। রোগী সুস্থ হলে অথবা মারা গেলে কেউ খালি হয়। আইসিইউর জন্য অনেকেই সিরিয়াল দিয়ে রাখে। কিন্তু তাতেও আইসিইউ পাওয়া যায় না। করোনাভাইরাসে শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য আইসিইউ খুবই দরকার। এ ভয়াবহ মহারীর সময় দ্রুত ইউনিট তৈরি করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন।

আরও খবর
কেউ ফের সংক্রমিত হবেন না এমন প্রমাণ নেই ডব্লিউএইচও
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাতীয় পরামর্শক কমিটি গঠন
করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না যেসব দেশ
চীন থেকে আনা হলো করোনা পরীক্ষার কিট ও পিপিই
তিন পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার ৮ গ্রামের মানুষ কঠোর হোম কোয়ারেন্টিনে
আগামী বছর প্রবৃদ্ধির রেকর্ড করবে বাংলাদেশ
দেশে করোনায় আরও ৭ মৃত্যু নতুন শনাক্ত ৩১২ জন
করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের সাড়ে ১১ কোটি মানুষ
বাড়িওয়ালার পুড়িয়ে মারার হুমকি, পালিয়ে আসে কার্তিক দাস
রংপুর থেকে ৫ হাজার শ্রমিক যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে
অবশেষে নারায়ণগঞ্জে বসছে পিসিআর মেশিন
যে কারণে করোনার বিস্তার ঘটেনি শিবচরে

সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ , ৭ বৈশাখ ১৪২৭, ২৫ শাবান ১৪৪১

করোনা রোগী বাড়ছে, চিকিৎসা সুযোগ বাড়ছে না

আইসিইউ অক্সিজেন ও বিশেষজ্ঞের অভাব

‘নতুন করে হচ্ছে ১২০টি আইসিইউ সিট’

বাকিবিল্লাহ |

করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আক্রান্তদের মধ্যে যে সব রোগী শ্বাসকষ্ট হয় তাদের জন্য আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞসহ নানা সমস্যার কারণে আইসিইউ যেন এখন সোনার হরিণ হয়ে পড়েছে। কয়েকটি হাসপাতালে আইসিইউ থাকলেও রোগীর তুলনায় কম। আর হঠাৎ করে জোড়াতালি দিয়ে আইসিইউ হয় না। অক্সিজেন প্ল্যান্টের দরকার। তিন মাস আগে থেকে এসব প্রস্তুতি নেয়ার দরকার ছিল তা করা হয়নি। কত রোগী আক্রান্ত হবে আর কত রোগীর জন্য আইসিইউ লাগবে তার একটি ছক তৈরি করে পদক্ষেপ নেয়ার দরকার ছিল। কিন্তু কিছুই করা হয়নি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বর্তমানে সারাদেশে করোনাভাইরাসের রোগীর জন্য সারাদেশে দুই শতাধিক আইসিইউ আছে। আর অন্য রোগের রোগীর জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার আইসিইউ আছে বলে আইসিইউ বিশেষজ্ঞ জানান।

চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, কত লোক আক্রান্ত হতে পারে এর কোন হিসাব নেই। আক্রান্তের সংখ্যা প্রথমে ১ জন ছিল। এখন বেড়ে প্রায় আড়াই হাজার হয়েছে। এ সংখ্যা বেড়েই চলছে। অন্তত তিন মাস আগ থেকে পরিকল্পনা মতে, কাজ করার দরকার ছিল। হঠাৎ করে জোড়াতালি দিয়ে আইসিইউ হয় না। অক্সিজেন প্ল্যান্ট লাগে। আইসিইউ জনবলের জন্য ট্রেনিং লাগে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে আগে থেকে ছক তৈরি করে কাজ করার দরকার ছিল তা করা হয়নি। এখন ঠেলাধাক্কা দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

আইসিইউ বিশেষজ্ঞ কমিটির একজন কর্মকর্তা বলেন, করোনা রোগীদের জন্য নতুন করে ১২০টি আইসিইউ বিভিন্ন হাসপাতালে দেয়া হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৫ ভাগ রোগীর আইসিইউ দরকার। সে অনুপাতে আইসিইউ নেই। ভেন্টিলেটার ও অন্য যন্ত্রপাতি এবং টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। আইসিইউ বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক বলেন, এখন সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ দেয়া হচ্ছে। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ কিছু হাসপাতালে আইসিইউ আছে। ঢাকার কোন কোন হাসপাতালে ১২ থেকে ২০টি আইসিইউ থাকলেও ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতালে কোন আইসিইউ নেই। আর আইসিইউর জন্য আলাদা জায়গা, ভেন্টিলেটার, যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু হঠাৎ করে বিশেষজ্ঞ পাওয়া কষ্টকর। সরকার নতুন করে জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য ৫০০ বেড চালু করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে ১২০টি নতুন বেড চালু করেছে। সিলেট, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে এসব বেড চালু করা হয়েছে। অন্যগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে বলে এ বিশেষজ্ঞ জানান। তিনি বলেন, আইসিইউ চালানোর জন্য ইতোমধ্যে অনেককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক স্থানে ভেন্টিলেটার, অক্সিজেন ও বিশেষজ্ঞ জনবলের অভাবের কারণে আইসিইউ বসানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে আইসিইউ বিশেষজ্ঞ সংকট মারাত্মক। সারাদেশে বিশেষজ্ঞ আছে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন। যার কারণে আপাতত অ্যানেসথেসিয়া, অ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার দিয়ে কোনমতে কাজ চালিয়ে নেয়ার চিন্তা ভাবনা চলছে। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ চালু করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সও দরকার। এ জন্য সময় লাগবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারের দরকার। এছাড়াও আইসিইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহ, এক্স-রে মেশিন, ইসিজি মেশিন, আলাদা মনিটরসহ অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ দরকার।

আইসিইউ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালসহ অন্য হাসপাতাল মিলে এখন ৬শ’র মতো আইসিইউ আছে। ইউরোপ, আমেরিকা, ইতালি ও জার্মানিসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে আইসিইউ বেশি থাকলেও এখন মহামারীর সময় যে পরিমাণ আইসিইউ দরকার তা পর্যাপ্ত নেই। এখন চিকিৎসা ক্ষেত্রে আইসিইউর চাহিদা বাড়ছে। সেই অনুপাতে আইসিইউ সংকট থাকায় বিশ্বজুড়ে সমস্যা হচ্ছে। আইসিইউ চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরি করতে সময় লাগে। সরকার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ তৈরিতে যে জনবল লাগবে এবং জনবলের উন্নয়ন ও প্রাশিক্ষণের প্রক্রিয়ার জন্য ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

সূত্র জানায়, প্রতিটি আইসিইউর জন্য বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞ আছে মাত্র ১শ’ থেকে ১৫০ জন। সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসকের পদ আছে প্রায় ১২শ’। এর মধ্যে অনেক পদ এখনও শূন্য রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আলাদা আইসিইউ চালু করলে ৫শ’ বেডের জন্য ৩ জন করে নার্স কমপক্ষে ১৫শ’ নার্স দরকার। তাদের আবার প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। করোনাভাইরাসের রোগীর ডিউটি করলে তাদের আলাদাভাবে রাখতে হবে। ১৫ দিন উিউটি আর ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। আইসিইউ বেডের জন্য পালাক্রমে ডিউটি করতে হলে ৬শ’ থেকে ৭শ’ ডাক্তার দরকার আছে। এরপর টেকনিশিয়ান থেকে ক্লিনার সবই লাগবে। এসব বিষয় নিয়ে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া কমিটি কাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাদেশের মুমূর্ষু রোগীর জন্য স্বজনরা আইসিইউ না পেয়ে অনেকেই দ্বারে দ্বারে ঘুরে তদবির করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সিট সংকট থাকায় ভিআইপি তদবিরেও কাজ হয় না। রোগী সুস্থ হলে অথবা মারা গেলে কেউ খালি হয়। আইসিইউর জন্য অনেকেই সিরিয়াল দিয়ে রাখে। কিন্তু তাতেও আইসিইউ পাওয়া যায় না। করোনাভাইরাসে শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য আইসিইউ খুবই দরকার। এ ভয়াবহ মহারীর সময় দ্রুত ইউনিট তৈরি করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন।