সরকারি ব্যবস্থাপনায়

রংপুর থেকে ৫ হাজার শ্রমিক যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে

রংপুর থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কৃষি শ্রমিক ধান কাটতে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যেগে গতকাল গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে ৮০ জন কৃষি শ্রমিক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকারি খরচে বাসযোগে তারা সেখানে যাচ্ছেন বলে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ আলী নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে দৈনিক সংবাদে শ্রমিকের অভাব বোরো ধান কাটা বন্ধ শিরোনামে সংবাদ ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়।

রংপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ প্রতি বছর ধান কাটা মৌসুমে হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যায় ধান কাটতে। রংপুর অঞ্চলে বোরো ধান কাটতে আরও অন্তত ১৫ দিন দেরি অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ধান ইতোমধ্যে পেকে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটা মাড়াই করা যাচ্ছে না। এবার করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এবং সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে রংপুর থেকে কৃষি শ্রমিকরা যেতে পারছে না। এমনি অবস্থায় কৃষি শ্রমিক সংকট দূর করতে এবং কৃষি শ্রমিকদের দক্ষিণাঞ্চলে পাঠাতে কৃষি মন্ত্রণালয় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত শনিবার কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক রংপুর থেকে জরুরিভিত্তিতে কৃষি শ্রমিক পাঠাতে প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং তাদের উৎসাহিত করে সরকারি খরচে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। গত শনিবার কৃষিমন্ত্রী নিজেই রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আশরাফ আলীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসন ও তাদের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ধান কাটা শ্রমিক সংকট দূর করতে রংপুর থেকে দ্রুত কৃষি শ্রমিক পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। সে কারণে কৃষি শ্রমিকদের করোনার মধ্যেও উদ্বুদ্ধ করতে নানানমুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যারা যেতে রাজি হয়েছেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সনদপত্র সিভিল সার্জেন দফতর থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা যাবেন তাদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য বাস ভাড়া করা হচ্ছে কৃষি শ্রমিকদের যাবার জন্য কোন খরচ বহন করতে হবে না সরকারি খরচে তাদের স্ব স্ব জেলা উপজেলায় পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রংপুর থেকে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন রংপুরে প্রায় দুই লাখেরও বেশি কৃষি শ্রমিক আছে যাদের অনেকেই প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে ধান কাটতে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলাসহ হাওর অঞ্চলে যায় ধান কাটতে। সেখানে তাদের মজুরি বেশি পাওয়ায় তারা প্রতিবছরই যায়। কিন্তু এবার করোনার কারণে কৃষি শ্রমিকরাও আতঙ্কিত। তারপরেও তাদের সঙ্গে কথা বলে পাঠনোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তারা কর্মহীন আর রংপুরে ধান কাটা মাড়াই আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। কারণ রংপুরে আলু উত্তোলন করার পরেই ধানের চারা রোপণ করা হয় বলে দেরিতে ধান পাকে। তিনি জানান, গতকাল গঙ্গাচড়া থেকে ৮০ জন কৃষি শ্রমিক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় যাচ্ছেন। তাদের যাবার জন্য বাস ভাড়া করা হয়েছে। জ্বালানিসহ যাবতীয় খরচ আমরাই বহন করব। সেই সঙ্গে যারাই যেতে চান তাদের সরকারি খরচে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় রংপুর থেকে দুটি কম্বাইন হারভেস্টার ধান কাটা মেশিন পাঠানো হয়েছে। ওই মেশিন ঘণ্টায় এক এক একর জমির ধান কাটতে পারে।

image

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উফশী বোরো পাকলেও শ্রমিক সংকটে তা ক্ষেতে নষ্ট হওয়ার উপক্রম -সংবাদ

আরও খবর
আইসিইউ অক্সিজেন ও বিশেষজ্ঞের অভাব
কেউ ফের সংক্রমিত হবেন না এমন প্রমাণ নেই ডব্লিউএইচও
বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাতীয় পরামর্শক কমিটি গঠন
করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না যেসব দেশ
চীন থেকে আনা হলো করোনা পরীক্ষার কিট ও পিপিই
তিন পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার ৮ গ্রামের মানুষ কঠোর হোম কোয়ারেন্টিনে
আগামী বছর প্রবৃদ্ধির রেকর্ড করবে বাংলাদেশ
দেশে করোনায় আরও ৭ মৃত্যু নতুন শনাক্ত ৩১২ জন
করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের সাড়ে ১১ কোটি মানুষ
বাড়িওয়ালার পুড়িয়ে মারার হুমকি, পালিয়ে আসে কার্তিক দাস
অবশেষে নারায়ণগঞ্জে বসছে পিসিআর মেশিন
যে কারণে করোনার বিস্তার ঘটেনি শিবচরে

সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ , ৭ বৈশাখ ১৪২৭, ২৫ শাবান ১৪৪১

সরকারি ব্যবস্থাপনায়

রংপুর থেকে ৫ হাজার শ্রমিক যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উফশী বোরো পাকলেও শ্রমিক সংকটে তা ক্ষেতে নষ্ট হওয়ার উপক্রম -সংবাদ

রংপুর থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কৃষি শ্রমিক ধান কাটতে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যেগে গতকাল গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে ৮০ জন কৃষি শ্রমিক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকারি খরচে বাসযোগে তারা সেখানে যাচ্ছেন বলে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ আলী নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে দৈনিক সংবাদে শ্রমিকের অভাব বোরো ধান কাটা বন্ধ শিরোনামে সংবাদ ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়।

রংপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ প্রতি বছর ধান কাটা মৌসুমে হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যায় ধান কাটতে। রংপুর অঞ্চলে বোরো ধান কাটতে আরও অন্তত ১৫ দিন দেরি অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলে ধান ইতোমধ্যে পেকে যাওয়ায় কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটা মাড়াই করা যাচ্ছে না। এবার করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এবং সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকাসহ বিভিন্ন কারণে রংপুর থেকে কৃষি শ্রমিকরা যেতে পারছে না। এমনি অবস্থায় কৃষি শ্রমিক সংকট দূর করতে এবং কৃষি শ্রমিকদের দক্ষিণাঞ্চলে পাঠাতে কৃষি মন্ত্রণালয় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত শনিবার কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক রংপুর থেকে জরুরিভিত্তিতে কৃষি শ্রমিক পাঠাতে প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং তাদের উৎসাহিত করে সরকারি খরচে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। গত শনিবার কৃষিমন্ত্রী নিজেই রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আশরাফ আলীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে জেলা প্রশাসন ও তাদের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে ধান কাটা শ্রমিক সংকট দূর করতে রংপুর থেকে দ্রুত কৃষি শ্রমিক পাঠানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। সে কারণে কৃষি শ্রমিকদের করোনার মধ্যেও উদ্বুদ্ধ করতে নানানমুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যারা যেতে রাজি হয়েছেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সনদপত্র সিভিল সার্জেন দফতর থেকে গ্রহণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যারা যাবেন তাদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য বাস ভাড়া করা হচ্ছে কৃষি শ্রমিকদের যাবার জন্য কোন খরচ বহন করতে হবে না সরকারি খরচে তাদের স্ব স্ব জেলা উপজেলায় পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রংপুর থেকে কৃষি শ্রমিক পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন রংপুরে প্রায় দুই লাখেরও বেশি কৃষি শ্রমিক আছে যাদের অনেকেই প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে ধান কাটতে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলাসহ হাওর অঞ্চলে যায় ধান কাটতে। সেখানে তাদের মজুরি বেশি পাওয়ায় তারা প্রতিবছরই যায়। কিন্তু এবার করোনার কারণে কৃষি শ্রমিকরাও আতঙ্কিত। তারপরেও তাদের সঙ্গে কথা বলে পাঠনোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে তারা কর্মহীন আর রংপুরে ধান কাটা মাড়াই আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। কারণ রংপুরে আলু উত্তোলন করার পরেই ধানের চারা রোপণ করা হয় বলে দেরিতে ধান পাকে। তিনি জানান, গতকাল গঙ্গাচড়া থেকে ৮০ জন কৃষি শ্রমিক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় যাচ্ছেন। তাদের যাবার জন্য বাস ভাড়া করা হয়েছে। জ্বালানিসহ যাবতীয় খরচ আমরাই বহন করব। সেই সঙ্গে যারাই যেতে চান তাদের সরকারি খরচে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় রংপুর থেকে দুটি কম্বাইন হারভেস্টার ধান কাটা মেশিন পাঠানো হয়েছে। ওই মেশিন ঘণ্টায় এক এক একর জমির ধান কাটতে পারে।