করোনায় পিছিয়ে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ

করোনা দুর্যোগে পিছিয়ে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ। বাংলাদেশ ও চায়নার যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটন (৬৬০ মেগাওয়াট) চলতি বছর জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার কথা। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশি-বিদেশি অধিকাংশ কর্মীই এখন কর্মস্থলে নেই। ফলে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটটি সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতায় উৎপাদনে এসেছে, যা ২০১৯ সালের জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের সিএসমসির যৌথ (৫০ : ৫০) অশীংদারিত্বে গঠিত বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) তত্ত্বাবধানে চীনের এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের এনইপিসি। আমদানি করা কয়লায় চালিত দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র।

প্রকল্পের দেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এনডব্লিউপিজিসিএল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই হাজার চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিক এবং প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি কর্মী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে কাজ করছে। সম্প্রতি চীনা কর্মীদের প্রায় ৭০০ জন ছুটিতে নিজ দেশে গিয়ে বৈশ্বিক করোনা দুর্যোগের কারণে আটকে গেছে। সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশের কর্মীরাও কাজ থেকে বিরত রয়েছে। তাই আপতত দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ বন্ধ।

বিসিপিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশরী এএম খোরশেদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, করোনার কারণে চীন থেকে কর্মীরা আসার অনুমতি পাচ্ছে না। দেশি শ্রমিকরাও কাজে নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তাদের অধিকাংশকে ছুটি দেয়া হয়েছে। এদিকে বিসিপিসিএলের চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট ও এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) ইতোমধ্যে প্রকল্পের বিলম্বের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।

দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গেলেও প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর হলেও ৬৬০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি এখন বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। গত বছরের জুনে চালুর কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে গত জানুয়ারি মাসে এই ইউনিট থেকে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কেন্দ্রটি এতদিন পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছিল। এখন প্রতিদিন পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় অর্থাৎ ৬৬০ মেগাওয়াট লোডে চালিয়ে দেখা হচ্ছে। দেখা গেছে, কেন্দ্রটি ৬৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার, ২০ এপ্রিল ২০২০ , ৭ বৈশাখ ১৪২৭, ২৫ শাবান ১৪৪১

করোনায় পিছিয়ে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ

image

করোনা দুর্যোগে পিছিয়ে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ। বাংলাদেশ ও চায়নার যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটন (৬৬০ মেগাওয়াট) চলতি বছর জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার কথা। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশি-বিদেশি অধিকাংশ কর্মীই এখন কর্মস্থলে নেই। ফলে যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটটি সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতায় উৎপাদনে এসেছে, যা ২০১৯ সালের জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশের নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের সিএসমসির যৌথ (৫০ : ৫০) অশীংদারিত্বে গঠিত বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) তত্ত্বাবধানে চীনের এক্সিম ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের এনইপিসি। আমদানি করা কয়লায় চালিত দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র।

প্রকল্পের দেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান এনডব্লিউপিজিসিএল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই হাজার চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিক এবং প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি কর্মী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে কাজ করছে। সম্প্রতি চীনা কর্মীদের প্রায় ৭০০ জন ছুটিতে নিজ দেশে গিয়ে বৈশ্বিক করোনা দুর্যোগের কারণে আটকে গেছে। সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশের কর্মীরাও কাজ থেকে বিরত রয়েছে। তাই আপতত দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ বন্ধ।

বিসিপিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশরী এএম খোরশেদুল আলম এ বিষয়ে বলেন, করোনার কারণে চীন থেকে কর্মীরা আসার অনুমতি পাচ্ছে না। দেশি শ্রমিকরাও কাজে নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে তাদের অধিকাংশকে ছুটি দেয়া হয়েছে। এদিকে বিসিপিসিএলের চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট ও এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) ইতোমধ্যে প্রকল্পের বিলম্বের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।

দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গেলেও প্রথম ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর হলেও ৬৬০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি এখন বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। গত বছরের জুনে চালুর কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে গত জানুয়ারি মাসে এই ইউনিট থেকে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কেন্দ্রটি এতদিন পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছিল। এখন প্রতিদিন পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় অর্থাৎ ৬৬০ মেগাওয়াট লোডে চালিয়ে দেখা হচ্ছে। দেখা গেছে, কেন্দ্রটি ৬৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।