বাজারের প্রবেশমুখে সুরক্ষা টানেল বসান

নিত্যপণ্য কেনার জন্য কাঁচাবাজার খোলা রাখা হলেও সেখানে সামাজিক দূরত্ব একদমই মানা হচ্ছে না। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী দেশের যে পাঁচটি অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি, সেখানকার বাজারগুলোতেও লোকসমাগম বেশি। এতে ভাইরাসের সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অথচ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।

কাঁচাবাজারে যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে সেটা যে কোন বাজার ঘুরলেই আঁচ করা যায়। প্রতিটি বাজারে হাজারো লোক আসছেন। সেখানে কোনভাবেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। কোন নির্দেশনাই লোকজন মানছেন না। কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত খুব একটা সচেতনামূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এসব কাঁচাবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের নামমাত্র কিছু নির্দেশনা দিয়েই দায় সারা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়েই অর্থনৈতিক কর্মকা- চালাতে হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে জরুরি হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। এটি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে মানতে হবে, মানাতে হবে। আর তা নিশ্চিত করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সিটি করপোরেশন। সেখানেও যদি গাফিলতির প্রমাণ মেলে তবে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কি হতে পারে। রমজানের কারণে বাজারে এখন ক্রেতার চাপ বেশি। কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পক্ষে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। সামাজিক দূরত্ব রাখতে প্রশাসনের তদারকি আরও কঠোর হতে হবে। প্রতিটি বাজারে পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাজারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।

কোভিড-১৯-এর বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য হাটবাজারগুলো খোলা স্থানে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে খোলা মাঠে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে হাটবাজার বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু রাজধানী এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে পর্যাপ্ত মাঠ না থাকায় এটি করা সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো, প্রয়োজনে প্রতিদিনের বাজার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে সপ্তাহে তিন দিন বাজার চালু রাখার ব্যবস্থা করা হোক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন হতে হবে। দোকানগুলোকে আরও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসানোর ব্যবস্থা করা দরকার। বিক্রেতাদের বাজারের বাইরে মূল সড়কের ফুটপাতে নিয়ে আসতে হবে। এতে কিছুটা হলেও দূরত্ব রক্ষা হবে। প্রতিটি বাজারের প্রবেশমুখে ভাইরাস থেকে সুরক্ষা টানেল বসিয়ে প্রবেশকারীদের জীবাণুমুক্ত করতে হবে; এই ব্যবস্থায় বাজারগুলোতে করোনার ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পাবে।

মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০২০ , ৮ বৈশাখ ১৪২৭, ২৬ শাবান ১৪৪১

করোনা সংক্রমণের বড় ঝুঁকি কাঁচাবাজার

বাজারের প্রবেশমুখে সুরক্ষা টানেল বসান

নিত্যপণ্য কেনার জন্য কাঁচাবাজার খোলা রাখা হলেও সেখানে সামাজিক দূরত্ব একদমই মানা হচ্ছে না। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী দেশের যে পাঁচটি অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি, সেখানকার বাজারগুলোতেও লোকসমাগম বেশি। এতে ভাইরাসের সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অথচ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।

কাঁচাবাজারে যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে সেটা যে কোন বাজার ঘুরলেই আঁচ করা যায়। প্রতিটি বাজারে হাজারো লোক আসছেন। সেখানে কোনভাবেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। কোন নির্দেশনাই লোকজন মানছেন না। কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত খুব একটা সচেতনামূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে এসব কাঁচাবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের নামমাত্র কিছু নির্দেশনা দিয়েই দায় সারা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়েই অর্থনৈতিক কর্মকা- চালাতে হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে জরুরি হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। এটি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে মানতে হবে, মানাতে হবে। আর তা নিশ্চিত করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সিটি করপোরেশন। সেখানেও যদি গাফিলতির প্রমাণ মেলে তবে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কি হতে পারে। রমজানের কারণে বাজারে এখন ক্রেতার চাপ বেশি। কয়েকজন পুলিশ সদস্যের পক্ষে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। সামাজিক দূরত্ব রাখতে প্রশাসনের তদারকি আরও কঠোর হতে হবে। প্রতিটি বাজারে পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাজারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।

কোভিড-১৯-এর বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য হাটবাজারগুলো খোলা স্থানে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে খোলা মাঠে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে হাটবাজার বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু রাজধানী এবং বিভাগীয় শহরগুলোতে পর্যাপ্ত মাঠ না থাকায় এটি করা সম্ভব হয়নি। সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হলো, প্রয়োজনে প্রতিদিনের বাজার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে সপ্তাহে তিন দিন বাজার চালু রাখার ব্যবস্থা করা হোক। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন হতে হবে। দোকানগুলোকে আরও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসানোর ব্যবস্থা করা দরকার। বিক্রেতাদের বাজারের বাইরে মূল সড়কের ফুটপাতে নিয়ে আসতে হবে। এতে কিছুটা হলেও দূরত্ব রক্ষা হবে। প্রতিটি বাজারের প্রবেশমুখে ভাইরাস থেকে সুরক্ষা টানেল বসিয়ে প্রবেশকারীদের জীবাণুমুক্ত করতে হবে; এই ব্যবস্থায় বাজারগুলোতে করোনার ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পাবে।