নারায়ণগঞ্জে অনতিবিলম্বে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করুন

নারায়ণগঞ্জে নভেল করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোন পরীক্ষাগার নেই বলে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়রসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিলম্বে সিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, উক্ত জেলায় সিসিআর ল্যাব স্থাপনের মতো উপযোগী কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

৮ মার্চ দেশে প্রথম যে দুজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয় তাদের একজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের। এরপর দেশে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯-এ যত মানুষ আক্রান্ত হয়ে তার বড় একটি অংশই এই জেলার বাসিন্দা। উক্ত রোগে মৃত্যুর হারও এই জেলায় তুলনামূলকভাবে বেশি। গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর উক্ত রোগে যে সাতজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে তার চারজনই নারায়ণগঞ্জের। এই জেলার চিকিৎসক, নার্সসহ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই জেলা থেকেই দেশের অন্যান্য এলাকায় করোনাভাইরাস বিস্তৃত হচ্ছে। অথচ সেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোন ল্যাব স্থাপন করা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের মতো হটস্পটে সবার আগে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা জরুরি ছিল। শুরু থেকেই সেখানকার বাসিন্দাদের ব্যাপকহারে পরীক্ষার আওতায় আনা জরুরি ছিল। বিশেষ কর্মসূত্রে যারা উক্ত জেলায় অবস্থান করছে তাদের পরীক্ষা করে কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হলে জেলায় জেলায় কোভিড-১৯ রোগ হয়তো এত দ্রুত বিস্তৃত হতো না। কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করার প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বরাবরই ধীরে চলো নীতিতে কাজ করতে দেখা গেছে। শুরুতে তারা একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই টেস্ট করার সুবিধা সীমাবদ্ধ রেখেছে। এখন আরও ল্যাব স্থাপন করা হলেও নারায়ণগঞ্জের মতো হটস্পটে কোন সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, উক্ত জেলায় সিসিআর ল্যাব স্থাপনের মতো উপযোগী কোন প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের এই বক্তব্য আমাদের বোধগম্য নয়। অনেক দেশ কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য রাতারাতি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। দেশেও এমন হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। অথচ একটি হটস্পটে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা যাবে না সেটা মেনে নেয়া যায় না। রাজধানীর সন্নিকটে একটি জেলায় যদি ল্যাব স্থাপন করা না যায় তাহলে আগামীতে নতুন করে দেশের প্রত্যন্ত কোন এলাকা হটস্পটে পরিণত হলে মন্ত্রণালয় কী করবে সেটা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বলতে চাই, অনতিবিলম্বে নারায়ণগঞ্জে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করতে হবে। আগামীতে এ ধরনের হটস্পটে ল্যাব তৈরির জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

সর্বশেষ খবরে জানা যায়, গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি টিম নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল শুধু রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য; কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারা যায়নি। এইভাবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা যে আসলে ফাঁকিবাজি তা নারায়ণগঞ্জের ঘটনা থেকে জানা যায়।

মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০২০ , ৮ বৈশাখ ১৪২৭, ২৬ শাবান ১৪৪১

নারায়ণগঞ্জে অনতিবিলম্বে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করুন

নারায়ণগঞ্জে নভেল করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোন পরীক্ষাগার নেই বলে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়রসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিলম্বে সিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, উক্ত জেলায় সিসিআর ল্যাব স্থাপনের মতো উপযোগী কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

৮ মার্চ দেশে প্রথম যে দুজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয় তাদের একজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জের। এরপর দেশে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯-এ যত মানুষ আক্রান্ত হয়ে তার বড় একটি অংশই এই জেলার বাসিন্দা। উক্ত রোগে মৃত্যুর হারও এই জেলায় তুলনামূলকভাবে বেশি। গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর উক্ত রোগে যে সাতজনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে তার চারজনই নারায়ণগঞ্জের। এই জেলার চিকিৎসক, নার্সসহ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই জেলা থেকেই দেশের অন্যান্য এলাকায় করোনাভাইরাস বিস্তৃত হচ্ছে। অথচ সেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কোন ল্যাব স্থাপন করা হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের মতো হটস্পটে সবার আগে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা জরুরি ছিল। শুরু থেকেই সেখানকার বাসিন্দাদের ব্যাপকহারে পরীক্ষার আওতায় আনা জরুরি ছিল। বিশেষ কর্মসূত্রে যারা উক্ত জেলায় অবস্থান করছে তাদের পরীক্ষা করে কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হলে জেলায় জেলায় কোভিড-১৯ রোগ হয়তো এত দ্রুত বিস্তৃত হতো না। কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করার প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বরাবরই ধীরে চলো নীতিতে কাজ করতে দেখা গেছে। শুরুতে তারা একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই টেস্ট করার সুবিধা সীমাবদ্ধ রেখেছে। এখন আরও ল্যাব স্থাপন করা হলেও নারায়ণগঞ্জের মতো হটস্পটে কোন সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, উক্ত জেলায় সিসিআর ল্যাব স্থাপনের মতো উপযোগী কোন প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের এই বক্তব্য আমাদের বোধগম্য নয়। অনেক দেশ কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য রাতারাতি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে। দেশেও এমন হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। অথচ একটি হটস্পটে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করা যাবে না সেটা মেনে নেয়া যায় না। রাজধানীর সন্নিকটে একটি জেলায় যদি ল্যাব স্থাপন করা না যায় তাহলে আগামীতে নতুন করে দেশের প্রত্যন্ত কোন এলাকা হটস্পটে পরিণত হলে মন্ত্রণালয় কী করবে সেটা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বলতে চাই, অনতিবিলম্বে নারায়ণগঞ্জে সিসিআর ল্যাব স্থাপন করতে হবে। আগামীতে এ ধরনের হটস্পটে ল্যাব তৈরির জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

সর্বশেষ খবরে জানা যায়, গত সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি টিম নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার কথা ছিল শুধু রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার জন্য; কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারা যায়নি। এইভাবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা যে আসলে ফাঁকিবাজি তা নারায়ণগঞ্জের ঘটনা থেকে জানা যায়।