দেশে করোনা পরিস্থিতি

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৯ নতুন শনাক্ত ৪৩৪

মরণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক ৪৩৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন নারী ও পুরুষসহ ৯ জন। সবমিলিয়ে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ১১০ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। কঠোর নিয়ন্ত্রণ, জরিমানা ও সাজার পরও মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং লডডাউন মেনে ঘরে অবস্থান করছে না। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ লডডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অমান্য করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামাজিক দূরত্ব এবং লকডাউন কার্যকর করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিবে। আক্রান্ত ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

অনলাইনে বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ১২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে দুই হাজার ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৮টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তারমধ্যে আরও ৪৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩৮২-এ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও নয়জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দু’জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৮৭। ব্রিফিং এ বলা হয়, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও চারজন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব তিনজন এবং চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৮৯ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৭৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দু’জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৭৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৬৮ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৪২৪ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৭ হাজার ১২ জনকে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৫৯২ জনকে এবং এ পর্যন্তÍ নেয়া হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৮০৬ জনকে। বর্তমানে মোট হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৭ হাজার ৯৩১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫ হাজার ৮৭৪ জন। মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৮৩ হাজার ৮০২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৯২ জন। যারা কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন, তবে তাদের এ মুহূর্তে ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো। বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তা-ব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের প্রায় ২৫ লাখ। এক লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। তবে সাড়ে ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় পুলিশের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীও। প্রতিদিন সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাস্তায় অযোথা ঘোরাফেরা করার কারণে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। সংক্রমণ আইনে মামলা দেয়া ছাড়াও অভিনব কায়দায় শাস্তি দেয়া হচ্ছে। এরপরও মানুষ অযথা রাস্তাঘাট ও পাড়ামহল্লায় আড্ডা দিচ্ছে। নানা ছুতোয় ঘর থেকে বের হয়ে ঘোরাফেরা করছে।

image
আরও খবর
বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার বেশি
কোভিড-১৯ : চরম বিপর্যয় আসতে এখনও বাকি
৪৫ দেশ ও অঞ্চলে এখনও কোন মৃত্যু হয়নি
দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মামলা
৩৩৩ নাম্বারে ফোন দিলে ত্রাণ ও খাদ্য পৌঁছে যাবে
‘বিশ্বস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে’
ইতিহাসে প্রথমবার জ্বালানি তেলের দাম শূন্যের নিচে
ঘরে ঘরে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হবে
অবৈধভাবে করোনা শনাক্তকরণ কিট ও নকল সুরক্ষাসামগ্রী আমদানি
চাল চোরের ক্ষমা নেই কাদের
করোনায় ২০ ঘণ্টা অফিস করে চলেছেন তিনি
ব্যর্থতার দায় নিয়ে রোমানিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ
৩৬১ ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত

বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০ , ৯ বৈশাখ ১৪২৭, ২৭ শাবান ১৪৪১

দেশে করোনা পরিস্থিতি

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৯ নতুন শনাক্ত ৪৩৪

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

মরণঘাতী মহামারী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক ৪৩৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন নারী ও পুরুষসহ ৯ জন। সবমিলিয়ে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ১১০ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৮২ জনে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। কঠোর নিয়ন্ত্রণ, জরিমানা ও সাজার পরও মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং লডডাউন মেনে ঘরে অবস্থান করছে না। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ লডডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা অমান্য করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সামাজিক দূরত্ব এবং লকডাউন কার্যকর করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিবে। আক্রান্ত ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

অনলাইনে বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ১২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরমধ্যে দুই হাজার ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৮টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তারমধ্যে আরও ৪৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩৮২-এ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও নয়জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দু’জন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৮৭। ব্রিফিং এ বলা হয়, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও চারজন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব তিনজন এবং চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন।

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৮৯ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৭৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দু’জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৭৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৬৮ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৪২৪ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৭ হাজার ১২ জনকে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৫৯২ জনকে এবং এ পর্যন্তÍ নেয়া হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৮০৬ জনকে। বর্তমানে মোট হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৭ হাজার ৯৩১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫ হাজার ৮৭৪ জন। মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৮৩ হাজার ৮০২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৯২ জন। যারা কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন, তবে তাদের এ মুহূর্তে ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো। বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তা-ব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের প্রায় ২৫ লাখ। এক লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। তবে সাড়ে ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় পুলিশের পাশাপাশি টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীও। প্রতিদিন সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে রাস্তায় অযোথা ঘোরাফেরা করার কারণে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। সংক্রমণ আইনে মামলা দেয়া ছাড়াও অভিনব কায়দায় শাস্তি দেয়া হচ্ছে। এরপরও মানুষ অযথা রাস্তাঘাট ও পাড়ামহল্লায় আড্ডা দিচ্ছে। নানা ছুতোয় ঘর থেকে বের হয়ে ঘোরাফেরা করছে।