মানুষকে ঘরে রাখতে ই-কমার্সের কোন বিকল্প নেই : বাণিজ্যমন্ত্রী

করোনা পরিস্থিতিতে ই-কমার্স পরিচালনায় কোন সমস্যা দেখা দিলে তা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন। তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে ঘরে রাখতে ই-কমার্সের কোন বিকল্প নেই। আর ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিয়ে মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব। গতকাল করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত সাধারণ ছুটি চলাকালীন জনসাধারণকে সহযোগিতা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের ই-কমার্স সংক্রান্ত গৃহীত পদক্ষেপ এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাব যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ই-কমার্স তারই একটা অংশ। করোনাভাইরাসে যখন গোটা বিশ্ব আক্রান্ত তখন ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভব করলাম। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ সবাই যেমন করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইনে কাজ করেছে একইভাবে ই-কমার্সে যারা কাজ করছেন তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করছেন। করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে মানুষের ঘরে রাখার কোন বিকল্প নেই, মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব হয়েছে ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিয়ে। এজন্য ই-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। তবে ই-কমার্স কার্যক্রম চালাতে বেশকিছু সমস্যা কথা শুনলাম। এসব সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে। আমরা ই-কমার্সকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি, আগামীতে সেটা অব্যাহত থাকবে। ই-কমার্সকে আরও এগিয়ে নিয়ে আমরা সবাই মিলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতা করব।

ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আবদুল হক অনু করোনাভাইরাসের প্রভাবে ই-কমার্স খাতের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, বর্তমানে ই-ক্যাবের মেম্বর সংখ্যা হচ্ছে ১ হাজার ২০০ জন। বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের বাজার ৮ হাজার কোটি টাকা। এ সেক্টরে কাজ করছে ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মী। এরমধ্যে ২৬ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং ৭৪ শতাংশ হচ্ছে পুরুষ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে ই-কমার্সের অবদান দশমিক দুই শতাংশ। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন ৮০ হাজার পরিবার ই-কমার্সের থেকে সেবা নিয়ে থাকেন। করোনাভাইরাসের কারণে মোট ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিত্যপণ্য এবং ওষুধ সরবরাহ করেছে। করোনার কারণে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় ই-কমার্স খাতে প্রতিমাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬৬৬ কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমাদের ই-কমার্স খাতে ৫ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে করোনাকালে প্রায় ৯০ শতাংশ ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। যারা সীমিত আকারে কাজ করেছে তারাও সে অর্থে ব্যবসা করেনি, যেটুকু পেরেছে মানবসেবা করেছে। এখন ই-কমার্স খাতে আলাদা খাত ঘোষণা করার সময় এসেছে। কারন আমরা ব্যাংক ঋণ নিতে গেলে সমস্যায় পরতে হবে। আমরা সবাই কিন্তু মিডিয়াম-স্মল এন্টারপ্রিনিয়ার তাই আমাদের জন্য করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা যদি প্রণোদনা নাও পায় তারপরও আমরা আগামী কয়েক বছরের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স মওকুফ চাই। করোনার সময়ে আমরা ২ শতাংশ সুদে ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ব্যাংক ঋণ চাই।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ই-ক্যাব উপদেষ্টা নাহিম রাজ্জাক, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এফবিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০২০ , ৩১ বৈশাখ ১৪২৭, ২০ রমাজান ১৪৪১

মানুষকে ঘরে রাখতে ই-কমার্সের কোন বিকল্প নেই : বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনা পরিস্থিতিতে ই-কমার্স পরিচালনায় কোন সমস্যা দেখা দিলে তা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন। তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে ঘরে রাখতে ই-কমার্সের কোন বিকল্প নেই। আর ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিয়ে মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব। গতকাল করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত সাধারণ ছুটি চলাকালীন জনসাধারণকে সহযোগিতা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের ই-কমার্স সংক্রান্ত গৃহীত পদক্ষেপ এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাব যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ই-কমার্স তারই একটা অংশ। করোনাভাইরাসে যখন গোটা বিশ্ব আক্রান্ত তখন ই-কমার্সের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভব করলাম। ডাক্তার, নার্স, পুলিশ সবাই যেমন করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইনে কাজ করেছে একইভাবে ই-কমার্সে যারা কাজ করছেন তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করছেন। করোনা প্রাদুর্ভাব রোধে মানুষের ঘরে রাখার কোন বিকল্প নেই, মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব হয়েছে ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিয়ে। এজন্য ই-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। তবে ই-কমার্স কার্যক্রম চালাতে বেশকিছু সমস্যা কথা শুনলাম। এসব সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে। আমরা ই-কমার্সকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি, আগামীতে সেটা অব্যাহত থাকবে। ই-কমার্সকে আরও এগিয়ে নিয়ে আমরা সবাই মিলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতা করব।

ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আবদুল হক অনু করোনাভাইরাসের প্রভাবে ই-কমার্স খাতের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, বর্তমানে ই-ক্যাবের মেম্বর সংখ্যা হচ্ছে ১ হাজার ২০০ জন। বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের বাজার ৮ হাজার কোটি টাকা। এ সেক্টরে কাজ করছে ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মী। এরমধ্যে ২৬ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং ৭৪ শতাংশ হচ্ছে পুরুষ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে ই-কমার্সের অবদান দশমিক দুই শতাংশ। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন ৮০ হাজার পরিবার ই-কমার্সের থেকে সেবা নিয়ে থাকেন। করোনাভাইরাসের কারণে মোট ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিত্যপণ্য এবং ওষুধ সরবরাহ করেছে। করোনার কারণে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় ই-কমার্স খাতে প্রতিমাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬৬৬ কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমাদের ই-কমার্স খাতে ৫ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে করোনাকালে প্রায় ৯০ শতাংশ ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। যারা সীমিত আকারে কাজ করেছে তারাও সে অর্থে ব্যবসা করেনি, যেটুকু পেরেছে মানবসেবা করেছে। এখন ই-কমার্স খাতে আলাদা খাত ঘোষণা করার সময় এসেছে। কারন আমরা ব্যাংক ঋণ নিতে গেলে সমস্যায় পরতে হবে। আমরা সবাই কিন্তু মিডিয়াম-স্মল এন্টারপ্রিনিয়ার তাই আমাদের জন্য করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা যদি প্রণোদনা নাও পায় তারপরও আমরা আগামী কয়েক বছরের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স মওকুফ চাই। করোনার সময়ে আমরা ২ শতাংশ সুদে ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ব্যাংক ঋণ চাই।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ই-ক্যাব উপদেষ্টা নাহিম রাজ্জাক, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এফবিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।