লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ খায়রুল কমিশনের ১১ কোম্পানি

দীর্ঘ ৯ বছরের দায়িত্ব পালন শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজ বিদায় নিচ্ছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপকের নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্বল কোম্পানির প্রথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে। তবে লভ্যাংশ না দেয়ার ক্ষেত্রে এ কমিশন থেকে আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিরগুলোর হারই সব থেকে কম।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৯৩ সালে বিএসইসি গঠনের পর শেয়ারবাজারে ২৮৪ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে (তালিকাচ্যুত ছাড়া)। এরমধ্যে ৭১টি বা ২৫ শতাংশ কোম্পানি তাদের সর্বশেষ হিসাব বছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে খায়রুল হোসনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময়কালীন তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ১১টি বা ৩.৮৭ শতাংশ। লভ্যাংশ না দেয়া বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ৯ বছরে (১৯৯৩-২০০১) তালিকাভুক্ত হওয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪৬টি। এছাড়া দ্বিতীয় ৯ বছরের ১৪টি। অর্থাৎ কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে অনুমোদন পাওয়া ৬০টি প্রতিষ্ঠান তাদের সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোন ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসি গঠন হওয়ার পরে গত ২৭ বছরে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) চলে গেছে ৩৫টি। এরমধ্যে প্রথম ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়ার কোম্পানি থেকে ৩৩টি ও দ্বিতীয় ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া দুটি রয়েছে। যে সব কোম্পানির অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। এ প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ দেয় না।

এদিকে শেয়ারবাজারে কমিশন গঠনের পরে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৮৪টি এখন শেয়ারবাজারে রয়েছে। তবে গত বছরের রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইংসহ এ পর্যন্ত শেয়ারবাজারের ইতিহাসে যোগ্যতার অভাবে ৩৮টি কোম্পানি তালিকাচ্যুত বা শেয়ারবাজার থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এরমধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে রহিমা ফুডসহ তালিকাভুক্ত হওয়া কিছু কোম্পানি রয়েছে। যেগুলোর লভ্যাংশ তো দূরের কথা, কোন হদিস নেই। এ হিসাবে কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে তালিকাভুক্ত হয়ে লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানির সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই আরও বেশি। এছাড়া কমিশন গঠন হওয়ার পরে তালিকাভুক্ত হয়েছে এমন আরও ছয়টি কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতির জন্য সম্ভাব্য তালিকায় রেখেছে ডিএসই। এরমধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, ইমাম বাটন, বেক্সিমকো সিনথেটিক্স ও শ্যামপুর সুগার মিলস এ তালিকায় রয়েছে। আর দ্বিতীয় ৯ বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়া শাইনপুকুর সিরামিকসও সম্ভাব্য তালিকাচ্যুতির তালিকায় রয়েছে।

খায়রুল হোসেন নেতৃত্বাধীন কমিশনে আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলো লভ্যাংশ দেবে না সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, ফেমিলিটেক্স বিডি, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, অ্যাপোলো ইস্পাত, জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।

বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০২০ , ৩১ বৈশাখ ১৪২৭, ২০ রমাজান ১৪৪১

লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ খায়রুল কমিশনের ১১ কোম্পানি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

দীর্ঘ ৯ বছরের দায়িত্ব পালন শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজ বিদায় নিচ্ছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপকের নেতৃত্বাধীন কমিশনের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্বল কোম্পানির প্রথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনের অভিযোগ রয়েছে। তবে লভ্যাংশ না দেয়ার ক্ষেত্রে এ কমিশন থেকে আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিরগুলোর হারই সব থেকে কম।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৯৩ সালে বিএসইসি গঠনের পর শেয়ারবাজারে ২৮৪ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে (তালিকাচ্যুত ছাড়া)। এরমধ্যে ৭১টি বা ২৫ শতাংশ কোম্পানি তাদের সর্বশেষ হিসাব বছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে খায়রুল হোসনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময়কালীন তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ১১টি বা ৩.৮৭ শতাংশ। লভ্যাংশ না দেয়া বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ৯ বছরে (১৯৯৩-২০০১) তালিকাভুক্ত হওয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪৬টি। এছাড়া দ্বিতীয় ৯ বছরের ১৪টি। অর্থাৎ কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে অনুমোদন পাওয়া ৬০টি প্রতিষ্ঠান তাদের সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোন ধরনের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসি গঠন হওয়ার পরে গত ২৭ বছরে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) চলে গেছে ৩৫টি। এরমধ্যে প্রথম ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়ার কোম্পানি থেকে ৩৩টি ও দ্বিতীয় ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া দুটি রয়েছে। যে সব কোম্পানির অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। এ প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ দেয় না।

এদিকে শেয়ারবাজারে কমিশন গঠনের পরে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৮৪টি এখন শেয়ারবাজারে রয়েছে। তবে গত বছরের রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইংসহ এ পর্যন্ত শেয়ারবাজারের ইতিহাসে যোগ্যতার অভাবে ৩৮টি কোম্পানি তালিকাচ্যুত বা শেয়ারবাজার থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এরমধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে রহিমা ফুডসহ তালিকাভুক্ত হওয়া কিছু কোম্পানি রয়েছে। যেগুলোর লভ্যাংশ তো দূরের কথা, কোন হদিস নেই। এ হিসাবে কমিশন গঠনের প্রথম ১৮ বছরে তালিকাভুক্ত হয়ে লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানির সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই আরও বেশি। এছাড়া কমিশন গঠন হওয়ার পরে তালিকাভুক্ত হয়েছে এমন আরও ছয়টি কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতির জন্য সম্ভাব্য তালিকায় রেখেছে ডিএসই। এরমধ্যে কমিশন গঠনের প্রথম ৯ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, ইমাম বাটন, বেক্সিমকো সিনথেটিক্স ও শ্যামপুর সুগার মিলস এ তালিকায় রয়েছে। আর দ্বিতীয় ৯ বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হওয়া শাইনপুকুর সিরামিকসও সম্ভাব্য তালিকাচ্যুতির তালিকায় রয়েছে।

খায়রুল হোসেন নেতৃত্বাধীন কমিশনে আইপিও অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলো লভ্যাংশ দেবে না সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, ফেমিলিটেক্স বিডি, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, অ্যাপোলো ইস্পাত, জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স।