ফিরছে স্বরূপে

দীর্ঘ দুই মাস পর গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ঢাকামুখী যাত্রীদের নৌরুট দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আবার স্বরূপে ফিরতে শুরু করেছে। ব্যস্ততা বেড়ে গেছে বাস টার্মিনাল লঞ্চ ও ফেরিঘাটে। তবে গত কয়েক দিনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি। গতকাল যাত্রী ছিল কম। অন্যদিকে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্য শিমুলিয়াঘাট এলাকায় একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিনিধি, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় পর গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ঘাট আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছে। যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করায় নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকা পড়ছে যাত্রীবাহী বাস। তবে যাত্রীর চাপ অপেক্ষাকৃত কম।

গতকাল দুপুরে সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ দিন পর গণপরিবহন চালুসহ লকডাউন শিথিল হওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকায়। এ সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে  দেখা যায়নি অনেককেই। এ সময় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া জেলা পরিষদের রেস্ট হাউস পর্যন্ত শতাধিক যাত্রীবাহী বাস নদী পাড়ের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহনসহ অন্য যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ফেরিঘাটে সাধারণ যাত্রীদের তেমন চাপ না থাকলেও লঞ্চ ঘাটে ঢাকামুখী পায়ে হাঁটা ও পরিবহন যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা যায়। তবে আজও গতকাল ঢাকা থেকে আসছে অনেক যাত্রী। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আবদুল্লাহ রনি জানান, স্বাভাবিক সময় থেকেই দুপুরের দিকে পরিবহনের চাপ একটু বেশি থাকে। যে কারণে কিছু যাত্রীবাহী বাস সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। তবে ওই সব বাসগুলোকে ফেরির নাগাল পেতে সামান্য সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এ নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে।

অন্যদিকে প্রতিনিধি জানান, শিবচর (মাদারীপুর)

দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরির পাশাপাশি লঞ্চ ও স্পিডবোটে কর্মস্থলমুখো যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনের চেয়ে সোমবার এ রুটে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক অনেক কম ছিল। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে লঞ্চ ও স্পিডবোটে নো মাক্স নো জার্নি মেনে মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। তবে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক কম হলেও কেউ মানছে না সামাজিক দূরত্ব। এতে করোনা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগে একটি লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৪ মার্চ দুপুর থেকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ ও আড়াই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফেরি চালু থাকায় সাধারণ যাত্রীরা ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিত। অবশেষে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সোমবার কাঁঠালবাড়ি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গত দুই দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম। তবে ফেরি পারাপারে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার লঞ্চ ও স্পিডবোটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নিরাপত্তা সামগ্রী রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটে মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে তোলা হচ্ছে না। তবে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক কম থাকলেও লঞ্চ ও স্পিডবোটে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব মানছে না কেউ। এদিন যাত্রীদের কাছ থেকে ৩৫ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা আদায়ের অভিযোগে তানভীর-৪ নামক একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায়ের কারণে একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কোন অবস্থাতেই লঞ্চে বেশি ভাড়া আদায় করতে দেয়া হবে না।

মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, লঞ্চ ও স্পিডবোট চালু হওয়ায় যাত্রীরা ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে পারাপার হচ্ছে। গত কয়েক দিনের চেয়ে যাত্রী চাপ কম থাকলেও লঞ্চে গুণে গুণে নির্ধারিত যাত্রী তোলা হচ্ছে। আর মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে লঞ্চে উঠতে দেয়া হচ্ছে না।

মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০ , ১৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ৯ শাওয়াল ১৪৪১

দৌলতদিয়া-শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট

ফিরছে স্বরূপে

সংবাদ ডেস্ক |

দীর্ঘ দুই মাস পর গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ঢাকামুখী যাত্রীদের নৌরুট দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আবার স্বরূপে ফিরতে শুরু করেছে। ব্যস্ততা বেড়ে গেছে বাস টার্মিনাল লঞ্চ ও ফেরিঘাটে। তবে গত কয়েক দিনের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি। গতকাল যাত্রী ছিল কম। অন্যদিকে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্য শিমুলিয়াঘাট এলাকায় একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিনিধি, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় পর গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ঘাট আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছে। যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করায় নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকা পড়ছে যাত্রীবাহী বাস। তবে যাত্রীর চাপ অপেক্ষাকৃত কম।

গতকাল দুপুরে সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ দিন পর গণপরিবহন চালুসহ লকডাউন শিথিল হওয়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকায়। এ সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে  দেখা যায়নি অনেককেই। এ সময় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া জেলা পরিষদের রেস্ট হাউস পর্যন্ত শতাধিক যাত্রীবাহী বাস নদী পাড়ের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহনসহ অন্য যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ফেরিঘাটে সাধারণ যাত্রীদের তেমন চাপ না থাকলেও লঞ্চ ঘাটে ঢাকামুখী পায়ে হাঁটা ও পরিবহন যাত্রীদের চাপ লক্ষ্য করা যায়। তবে আজও গতকাল ঢাকা থেকে আসছে অনেক যাত্রী। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আবু আবদুল্লাহ রনি জানান, স্বাভাবিক সময় থেকেই দুপুরের দিকে পরিবহনের চাপ একটু বেশি থাকে। যে কারণে কিছু যাত্রীবাহী বাস সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। তবে ওই সব বাসগুলোকে ফেরির নাগাল পেতে সামান্য সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এ নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে।

অন্যদিকে প্রতিনিধি জানান, শিবচর (মাদারীপুর)

দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরির পাশাপাশি লঞ্চ ও স্পিডবোটে কর্মস্থলমুখো যাত্রীরা পারাপার হচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনের চেয়ে সোমবার এ রুটে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক অনেক কম ছিল। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে লঞ্চ ও স্পিডবোটে নো মাক্স নো জার্নি মেনে মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। তবে লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের ভিড় তুলনামূলক কম হলেও কেউ মানছে না সামাজিক দূরত্ব। এতে করোনা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগে একটি লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৪ মার্চ দুপুর থেকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ ও আড়াই শতাধিক স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফেরি চালু থাকায় সাধারণ যাত্রীরা ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিত। অবশেষে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সোমবার কাঁঠালবাড়ি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গত দুই দিনের তুলনায় যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম। তবে ফেরি পারাপারে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার লঞ্চ ও স্পিডবোটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নিরাপত্তা সামগ্রী রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটে মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে তোলা হচ্ছে না। তবে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক কম থাকলেও লঞ্চ ও স্পিডবোটে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব মানছে না কেউ। এদিন যাত্রীদের কাছ থেকে ৩৫ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা আদায়ের অভিযোগে তানভীর-৪ নামক একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায়ের কারণে একটি লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কোন অবস্থাতেই লঞ্চে বেশি ভাড়া আদায় করতে দেয়া হবে না।

মাদারীপুর সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, লঞ্চ ও স্পিডবোট চালু হওয়ায় যাত্রীরা ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে পারাপার হচ্ছে। গত কয়েক দিনের চেয়ে যাত্রী চাপ কম থাকলেও লঞ্চে গুণে গুণে নির্ধারিত যাত্রী তোলা হচ্ছে। আর মাক্স ছাড়া কোন যাত্রীকে লঞ্চে উঠতে দেয়া হচ্ছে না।