মালিকদের স্বার্থে বাসভাড়া বাড়ানো অমানবিকতা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কম আয়ের মানুষই বাসে উঠে। কার স্বার্থে বাস ভাড়া বাড়িয়েছে? মালিকদের স্বার্থে। মালিকদের আবার অনুদান দিচ্ছে। পুরো বিষয়টা হয়েছে লুটপাটের জন্য। এটা অমানবিকতা। গতকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান  শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসু, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, সদস্য মেহেদী হাসান পলাশ, অধ্যাপক শামসুর রহমান শামস, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বারবার করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবং তাদের নিয়োজিত পরামর্শক কমিটিই বলেছে আরও কিছুদিন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকও বলেছেন। ট্রেন, বাস, লঞ্চে মানুষ গাদাগাদি করে উঠছে। বাংলাদেশে গণপরিবহন এভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। আরও সময় নিতে পারত। দায়িত্বশীলতা নেই বলেই সরকার তুঘলকি কারবার করছে। জনগণকে মহাবিপদের দিকে ফেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতা। মনেই হয় না যে সরকার আছে। একেক বিভাগ একেক রকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন দিকনির্দেশনা নেই। সরকারের একলা চলো নীতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যাপারে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। ধান কাটার নামে আওয়ামী লীগ নেতারা কৃষকের পাকা ধান নষ্ট করেছেন। কোথাও কাঁচা ধান কেটেছেন। বিএনপি কৃষকের ধান কাটতে সহায়তা করেছে। সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশের কৃষি আজ ধ্বংসের মুখে। সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান-চাল কম কিনে বেশি কিনছে চালকল মালিকদের থেকে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছে। এখানেও দলীয় ব্যবসায়ী চালকল-মালিকদের মুনাফা করে দেয়। বোরো ধানের উৎপাদন হবে প্রায় দুই কোটি মেট্রিক টন। আর সরকার সংগ্র্রহ করবে ধান ৮ লাখ ও চাল ১৪ লাখ টন, যা উৎপাদনের মাত্র ৯ শতাংশ। বিএনপি এই পরিমাণ ২০ শতাংশ করার দাবি জানায়। আগামী এক বছরের জন্য পোলট্রি, ডেইরিসহ কৃষি-সংশ্লিষ্ট খাতের সব ঋণ মওকুফ করতে হবে। কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্যের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা দেয়াসহ আরও অনেক দাবি জানান তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের একলা চলো নীতি পুরোপুরিভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ৭৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ দেয়া হবে, কোন ইনসেনটিভ না। এটা কিন্তু একটা কৌশল। যে কৌশলে আপনি খুনোখুনিও হচ্ছে দেখছেন। এক ব্যাংকের ডিরেক্টর আরেক ব্যাংকের ডিরেক্টরকে ধরে নিয়ে আসছে বাসায়, তাকে বন্দুক ধরছে। তারা আবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশ থেকে চলেও যাচ্ছে। হোয়্যার ইজ গভর্নমেন্ট, সরকার কোথায়? আজকে এই কারণে পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। কিছু বললেই তো বলে যে আমরা উসকানি দেয়ার চেষ্টা করছি, আমরা সমালোচনা করছি। একজন তো প্রায় বলেন যে, বিষোদগার করবেন না। আরে বিষোদগার করে আপনারা যে অবৈধভাবে সরকার দখল করে আছেন সেটা তো বলছি না। আমরা বলছি যে, আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন, এটা পারছেন না করতে, এই জিনিসটা করা উচিত ছিল। এই জিনিসগুলোই আমরা বারবার করে বলছি। কিন্তু ওই যে, কানে দিয়েছি তুলো। যা খুশি বলেন আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা তো আছি। আমি বলি, থাকে না। জনগণের চাহিদা যদি পূরণ করা না যায়, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা যদি পূরণ না করা যায়, আর যদি ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে তাহলে কিন্তু থাকে না, চিরকাল থাকে না।

মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০ , ১৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ৯ শাওয়াল ১৪৪১

মালিকদের স্বার্থে বাসভাড়া বাড়ানো অমানবিকতা ফখরুল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কম আয়ের মানুষই বাসে উঠে। কার স্বার্থে বাস ভাড়া বাড়িয়েছে? মালিকদের স্বার্থে। মালিকদের আবার অনুদান দিচ্ছে। পুরো বিষয়টা হয়েছে লুটপাটের জন্য। এটা অমানবিকতা। গতকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান  শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসু, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, সদস্য মেহেদী হাসান পলাশ, অধ্যাপক শামসুর রহমান শামস, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বারবার করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবং তাদের নিয়োজিত পরামর্শক কমিটিই বলেছে আরও কিছুদিন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকও বলেছেন। ট্রেন, বাস, লঞ্চে মানুষ গাদাগাদি করে উঠছে। বাংলাদেশে গণপরিবহন এভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। আরও সময় নিতে পারত। দায়িত্বশীলতা নেই বলেই সরকার তুঘলকি কারবার করছে। জনগণকে মহাবিপদের দিকে ফেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতা। মনেই হয় না যে সরকার আছে। একেক বিভাগ একেক রকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সরকারের সুনির্দিষ্ট কোন দিকনির্দেশনা নেই। সরকারের একলা চলো নীতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তিনি বলেন, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যাপারে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। ধান কাটার নামে আওয়ামী লীগ নেতারা কৃষকের পাকা ধান নষ্ট করেছেন। কোথাও কাঁচা ধান কেটেছেন। বিএনপি কৃষকের ধান কাটতে সহায়তা করেছে। সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশের কৃষি আজ ধ্বংসের মুখে। সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান-চাল কম কিনে বেশি কিনছে চালকল মালিকদের থেকে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছে। এখানেও দলীয় ব্যবসায়ী চালকল-মালিকদের মুনাফা করে দেয়। বোরো ধানের উৎপাদন হবে প্রায় দুই কোটি মেট্রিক টন। আর সরকার সংগ্র্রহ করবে ধান ৮ লাখ ও চাল ১৪ লাখ টন, যা উৎপাদনের মাত্র ৯ শতাংশ। বিএনপি এই পরিমাণ ২০ শতাংশ করার দাবি জানায়। আগামী এক বছরের জন্য পোলট্রি, ডেইরিসহ কৃষি-সংশ্লিষ্ট খাতের সব ঋণ মওকুফ করতে হবে। কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্যের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা দেয়াসহ আরও অনেক দাবি জানান তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের একলা চলো নীতি পুরোপুরিভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ৭৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ দেয়া হবে, কোন ইনসেনটিভ না। এটা কিন্তু একটা কৌশল। যে কৌশলে আপনি খুনোখুনিও হচ্ছে দেখছেন। এক ব্যাংকের ডিরেক্টর আরেক ব্যাংকের ডিরেক্টরকে ধরে নিয়ে আসছে বাসায়, তাকে বন্দুক ধরছে। তারা আবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশ থেকে চলেও যাচ্ছে। হোয়্যার ইজ গভর্নমেন্ট, সরকার কোথায়? আজকে এই কারণে পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। কিছু বললেই তো বলে যে আমরা উসকানি দেয়ার চেষ্টা করছি, আমরা সমালোচনা করছি। একজন তো প্রায় বলেন যে, বিষোদগার করবেন না। আরে বিষোদগার করে আপনারা যে অবৈধভাবে সরকার দখল করে আছেন সেটা তো বলছি না। আমরা বলছি যে, আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন, এটা পারছেন না করতে, এই জিনিসটা করা উচিত ছিল। এই জিনিসগুলোই আমরা বারবার করে বলছি। কিন্তু ওই যে, কানে দিয়েছি তুলো। যা খুশি বলেন আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা তো আছি। আমি বলি, থাকে না। জনগণের চাহিদা যদি পূরণ করা না যায়, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা যদি পূরণ না করা যায়, আর যদি ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে তাহলে কিন্তু থাকে না, চিরকাল থাকে না।