শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন

করোনাভাইরাস মহামারীতে সারাদেশেই ভীতসন্ত্রন্ত মানুষ। জেঁকে বসা ভয় আর আতঙ্কের এ সময়েই এলো খুশির খবর। গত রোববার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ায় অনেক পরিবারই পেয়েছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার সামান্য বাড়লেও চমক জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৩০ হাজার ৩০৪টি। মেয়েদের ফলও নজরকাড়া। ছেলেদের তুলনায় কম মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে তারা এগিয়ে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন। শিক্ষাজীবনের প্রথম ধাপটি শিক্ষার্থীরা অতিক্রম করতে পেরেছে অত্যন্ত সার্থকতার সঙ্গে। এটা অবশ্যই গৌরবের। তবে এবার এ উচ্ছ্বাসের প্রকাশটা ছিল ঘরকেন্দ্রিক। কেননা বাইরে বের হওয়ার খুব একটা উপায় ছিল না। স্কুলে গিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে সম্মিলিত হৈ-হুল্লোড়েরও সুযোগ ছিল না। তাই ফেসবুকেই আনন্দ-উৎসব সীমাবদ্ধ থেকেছে। মেয়েরা ধারাবাহিকভাবেই ভালো করছে। তবে দুঃখের বিষয় তারা কলেজের পর থেকে ঝরে পড়তে শুরু করে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। যেসব কারণে নারী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে তা দূর করতে হবে।

যারা এবার ভালো ফল লাভ করতে পারেনি, তাদের মন খারাপ করে থেমে থাকার কারণ নেই। নিয়মিত অধ্যয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো ফল লাভের পথ উন্মুক্ত রয়েছে। তারা সে সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে।

পরীক্ষার ফলের পাশাপাশি শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে কিনা, সেটা অবশ্যই দেখা দরকার। শিক্ষার মান উন্নত করতে আমাদের প্রয়োজন ভালো শিক্ষক এবং সেজন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণে জোর দেয়া উচিত। পাঠ্যবইও আকর্ষণীয় করতে হবে।

করোনার দুর্যোগে আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে এজন্য লেখাপড়া বন্ধ রাখলে চলবে না। লেখাপড়া এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের স্বাভাবিক চর্চা চালিয়ে যেতে হবে। জীবনের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে হবে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরেও এ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের ধীরগতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি অবশ্যই সমাধানযোগ্য। এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষা এবং প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংকট নিরসনে দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য হলে শিক্ষা কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার, ০২ জুন ২০২০ , ১৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ৯ শাওয়াল ১৪৪১

শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন

করোনাভাইরাস মহামারীতে সারাদেশেই ভীতসন্ত্রন্ত মানুষ। জেঁকে বসা ভয় আর আতঙ্কের এ সময়েই এলো খুশির খবর। গত রোববার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ায় অনেক পরিবারই পেয়েছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ। গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার সামান্য বাড়লেও চমক জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৩০ হাজার ৩০৪টি। মেয়েদের ফলও নজরকাড়া। ছেলেদের তুলনায় কম মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে তারা এগিয়ে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন। শিক্ষাজীবনের প্রথম ধাপটি শিক্ষার্থীরা অতিক্রম করতে পেরেছে অত্যন্ত সার্থকতার সঙ্গে। এটা অবশ্যই গৌরবের। তবে এবার এ উচ্ছ্বাসের প্রকাশটা ছিল ঘরকেন্দ্রিক। কেননা বাইরে বের হওয়ার খুব একটা উপায় ছিল না। স্কুলে গিয়ে সহপাঠীদের নিয়ে সম্মিলিত হৈ-হুল্লোড়েরও সুযোগ ছিল না। তাই ফেসবুকেই আনন্দ-উৎসব সীমাবদ্ধ থেকেছে। মেয়েরা ধারাবাহিকভাবেই ভালো করছে। তবে দুঃখের বিষয় তারা কলেজের পর থেকে ঝরে পড়তে শুরু করে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। যেসব কারণে নারী শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে তা দূর করতে হবে।

যারা এবার ভালো ফল লাভ করতে পারেনি, তাদের মন খারাপ করে থেমে থাকার কারণ নেই। নিয়মিত অধ্যয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ভালো ফল লাভের পথ উন্মুক্ত রয়েছে। তারা সে সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে।

পরীক্ষার ফলের পাশাপাশি শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে কিনা, সেটা অবশ্যই দেখা দরকার। শিক্ষার মান উন্নত করতে আমাদের প্রয়োজন ভালো শিক্ষক এবং সেজন্য শিক্ষক প্রশিক্ষণে জোর দেয়া উচিত। পাঠ্যবইও আকর্ষণীয় করতে হবে।

করোনার দুর্যোগে আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তবে এজন্য লেখাপড়া বন্ধ রাখলে চলবে না। লেখাপড়া এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের স্বাভাবিক চর্চা চালিয়ে যেতে হবে। জীবনের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে হবে। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরেও এ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের ধীরগতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি অবশ্যই সমাধানযোগ্য। এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষা এবং প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংকট নিরসনে দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য হলে শিক্ষা কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।