পাবনার চরাঞ্চলে

বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’ কৃষকরা আতঙ্কের মাঝে ধান কাটছে

পাবনায় পদ্মা নদীর চর অঞ্চলে বিলুপ্তপ্রায় বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। চরের ফসলের মাঠ, ঝোপ ঝাড় এমনকি বসতবাড়িতেও দেখা মিলছে বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত সাপ ‘রাসেল ভাইপার’। ফলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে চর অঞ্চলের সাধারণ কৃষকেরা। বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপ চরের এক গৃহিনীকে দংশন করে পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় লোকজন সাপটিকে মেরে ফেলেছে। মৃত বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপটি পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। প্রতিষেধকের সহজলভ্যতা না থাকায়, আসন্ন বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে চরাঞ্চলের মানুষকে সর্তকতার সঙ্গে কাজ করা পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আসন্ন বর্ষা মৌসমে বিষাধর সাপটি জনবসিত অঞ্চলে চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাবনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল সোমবার দিনব্যাপী পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের কমরপুর বিস্তৃর্ণ পদ্মার চর অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তারা পদ্মা নদী পার হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার ভেতরে গিয়ে সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় কৃষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি চরে নতুন নতুন পোকামাকরসহ বিভিন্ন জাতের সাপের দেখা মিলছে। গেল বছর বিষধর পোকা দেখা দিয়েছিল এবার বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপরের দেখা মিলছে। চরে কাজে এসে বেশ কয়েকজন কৃষক সাপের কামরে আক্রান্ত হয়েছে। পাবনায় জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ড ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ বলেন, শনিবার রাতে সাড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া বড় পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সেলিনা খাতুন নিজ ঘরেই সাপের দংশনের শিকার হন। পরিবারের লোকজন আগ্রাসী প্রকৃতির সাপটিকে মেরে রোগীর সঙ্গেই নিয়ে আসেন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা প্রথমে সাপটিকে চিনতে না পারলেও পরে পরিবেশবিদদের সহায়তায় নিশ্চিত হন সাপটি রাসেল ভাইপার। তবে দংশন করলেও সৌভাগ্যক্রমে সেলিনার শরীরে বিষ প্রয়োগ করতে পারেনি বলেই ধারণা চিকিৎসকদের। মৃত বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপটি পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, একমাসের মধ্যে পাবনা সদর ও সুজানগর উপজেলার পদ্মার চরগুলিতেও একাধিকবার দেখা মিলেছে বিশে্ব বিষাক্ততায় পঞ্চম ও ক্ষীপ্রতার তালিকায় প্রথমে থাকা এই সাপটির। বর্ষা মৌসুমে আশপাশের লোকালয়ে ছড়িয়ে পরতে পারে এই বিষাক্ত সাপ। চর অঞ্চল গুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই সাপের প্রতিশেধক নেই বল্লেই চলে। তাই সাবধানে কাজ করতে হবে।

পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘রাসেল ভাইপার’ সাপের কথা শুনে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চর অঞ্চলগুলোতে বেশ কয়েকবার পরিদর্শনে গিয়েছি। আমাদের চোখে এখনও পরেনি ওই সাপটি। তবে এই সাপের কামড়ে বেশকিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এই সাপ খুব দ্রুত চলাচল করতে পারে ও অন্য সাপ থেকে দ্রুত বংশবিস্তার করে।

পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চর অঞ্চলের কৃষকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাবনা জেলা প্রশাসনের পরিদর্শন দলের প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকসানা মিতা বলেন, পদ্মার এই বিশাল চর অঞ্চল ফসলসহ গো বিচরণের অন্যতম স্থান। শুস্ক মৌসুমে এই চর অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। গেল বছর এই চরে বিষাক্ত বিছা পোকা দেখা দিয়েছিল। এবার বিষাক্ত সাপের কথা শোনা যাচ্ছে। কৃষকদের সাবধানে ও সর্তকতার সঙ্গে গামবুট পরে কাজ করা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চর অঞ্চলের কৃষকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিদর্শন টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আবদুল করিম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানসহ স্থানীয় কৃষক ও জন প্রতিনিধিরা সঙ্গে ছিলেন।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, ‘রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। অন্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও এ সাপটির স্বভাব ঠিক তার উল্টো, এটি ধাওয়া করে মানুষকে আক্রমণ করে। তাই প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কেবল এ সাপটির কামড়েই প্রাণ হারান। আক্রমণের ক্ষিপ্র গতি ও বিষের তীব্রতার কারণে ‘কিলিংমেশিন’ হিসেবে বদনাম রয়েছে সাপটির।’ তিনি আরও বলেন, ‘তীব্রতার দিক দিয়ে সাপটি বিশ্বের ৫ নম্বর ভয়ঙ্কর বিষধর। মাত্র এক সেকেন্ডের ১৬ ভাগের একভাগ সময়ে কাউকে কামড়ে বিষ ঢালতে পারে সাপটি! তাই কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে রাসেল ভাইপার পৃথিবীর প্রথম স্থান দখল করেছে। তাছাড়া এ সাপটির বিষ দাঁত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। এ সাপের কোন অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। বলা যায়, এর এক ছোবলেই মৃত্যু নিশ্চিত। রাসেল ভাইপারে কামড়েছে অথচ বেঁচে গেছেন এমন উদাহরণ নেই বললেই চলে। আবার কেউ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাই সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই একমাত্র পথ।’

image

পাবনা : চলনবিলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে কৃষক -সংবাদ

আরও খবর
একজনের বদলে অন্যজন হাজতে : দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
কোর্ট পরিচালনায় স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়নের নির্দেশ চেয়ে রিট
রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তার মৃত্যু
সাদ এরশাদ ও সিটি মেয়র মুখোমুখি
যুক্তরাষ্ট্রে আটকে পড়াদের ফেরতে বিশেষ ফ্লাইট ৬ জুন
ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে কুমেকের যাত্রা শুরু
নতুন কারিকুলামে পাঠদান শুরু হচ্ছে আগামী শিক্ষাবর্ষে
প্রকৌশলী বদলি নিয়ে ইইডিতে তুলকালাম কাণ্ড
বৃদ্ধকে নির্যাতনের ঘটনায় ৩ জন গ্রেফতার
এক কোটি তিন লাখ টাকা অতিরিক্ত বিল, সহকারী প্রকৌশলী সাসপেন্ড
ভৈরবে মানবপাচারকারী দলের ৩ দালাল গ্রেফতার
শাহজাদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত
১৪ হতদরিদ্রের চাল চার বছর ধরে ভোগ করছে তিন ইউপি সদস্য
করোনায় আর্তমানবতার সেবায় ‘সময় ফাউন্ডেশন’

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুন ২০২০ , ২১ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১১ শাওয়াল ১৪৪১

পাবনার চরাঞ্চলে

বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’ কৃষকরা আতঙ্কের মাঝে ধান কাটছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা

image

পাবনা : চলনবিলে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে কৃষক -সংবাদ

পাবনায় পদ্মা নদীর চর অঞ্চলে বিলুপ্তপ্রায় বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। চরের ফসলের মাঠ, ঝোপ ঝাড় এমনকি বসতবাড়িতেও দেখা মিলছে বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত সাপ ‘রাসেল ভাইপার’। ফলে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে চর অঞ্চলের সাধারণ কৃষকেরা। বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপ চরের এক গৃহিনীকে দংশন করে পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় লোকজন সাপটিকে মেরে ফেলেছে। মৃত বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপটি পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। প্রতিষেধকের সহজলভ্যতা না থাকায়, আসন্ন বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে চরাঞ্চলের মানুষকে সর্তকতার সঙ্গে কাজ করা পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আসন্ন বর্ষা মৌসমে বিষাধর সাপটি জনবসিত অঞ্চলে চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পাবনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল সোমবার দিনব্যাপী পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের কমরপুর বিস্তৃর্ণ পদ্মার চর অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তারা পদ্মা নদী পার হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার ভেতরে গিয়ে সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় স্থানীয় কৃষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি চরে নতুন নতুন পোকামাকরসহ বিভিন্ন জাতের সাপের দেখা মিলছে। গেল বছর বিষধর পোকা দেখা দিয়েছিল এবার বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপরের দেখা মিলছে। চরে কাজে এসে বেশ কয়েকজন কৃষক সাপের কামরে আক্রান্ত হয়েছে। পাবনায় জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ড ডা. আবু সালেহ মোহাম্মদ বলেন, শনিবার রাতে সাড়া ইউনিয়নের মাঝদিয়া বড় পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সেলিনা খাতুন নিজ ঘরেই সাপের দংশনের শিকার হন। পরিবারের লোকজন আগ্রাসী প্রকৃতির সাপটিকে মেরে রোগীর সঙ্গেই নিয়ে আসেন হাসপাতালে। চিকিৎসকরা প্রথমে সাপটিকে চিনতে না পারলেও পরে পরিবেশবিদদের সহায়তায় নিশ্চিত হন সাপটি রাসেল ভাইপার। তবে দংশন করলেও সৌভাগ্যক্রমে সেলিনার শরীরে বিষ প্রয়োগ করতে পারেনি বলেই ধারণা চিকিৎসকদের। মৃত বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’ সাপটি পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, একমাসের মধ্যে পাবনা সদর ও সুজানগর উপজেলার পদ্মার চরগুলিতেও একাধিকবার দেখা মিলেছে বিশে্ব বিষাক্ততায় পঞ্চম ও ক্ষীপ্রতার তালিকায় প্রথমে থাকা এই সাপটির। বর্ষা মৌসুমে আশপাশের লোকালয়ে ছড়িয়ে পরতে পারে এই বিষাক্ত সাপ। চর অঞ্চল গুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই সাপের প্রতিশেধক নেই বল্লেই চলে। তাই সাবধানে কাজ করতে হবে।

পাবনা সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘রাসেল ভাইপার’ সাপের কথা শুনে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে চর অঞ্চলগুলোতে বেশ কয়েকবার পরিদর্শনে গিয়েছি। আমাদের চোখে এখনও পরেনি ওই সাপটি। তবে এই সাপের কামড়ে বেশকিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এই সাপ খুব দ্রুত চলাচল করতে পারে ও অন্য সাপ থেকে দ্রুত বংশবিস্তার করে।

পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চর অঞ্চলের কৃষকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাবনা জেলা প্রশাসনের পরিদর্শন দলের প্রধান সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকসানা মিতা বলেন, পদ্মার এই বিশাল চর অঞ্চল ফসলসহ গো বিচরণের অন্যতম স্থান। শুস্ক মৌসুমে এই চর অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। গেল বছর এই চরে বিষাক্ত বিছা পোকা দেখা দিয়েছিল। এবার বিষাক্ত সাপের কথা শোনা যাচ্ছে। কৃষকদের সাবধানে ও সর্তকতার সঙ্গে গামবুট পরে কাজ করা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চর অঞ্চলের কৃষকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিদর্শন টিমের অন্য সদস্যরা হলেন সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা আবদুল করিম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানসহ স্থানীয় কৃষক ও জন প্রতিনিধিরা সঙ্গে ছিলেন।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, ‘রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। অন্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও এ সাপটির স্বভাব ঠিক তার উল্টো, এটি ধাওয়া করে মানুষকে আক্রমণ করে। তাই প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ কেবল এ সাপটির কামড়েই প্রাণ হারান। আক্রমণের ক্ষিপ্র গতি ও বিষের তীব্রতার কারণে ‘কিলিংমেশিন’ হিসেবে বদনাম রয়েছে সাপটির।’ তিনি আরও বলেন, ‘তীব্রতার দিক দিয়ে সাপটি বিশ্বের ৫ নম্বর ভয়ঙ্কর বিষধর। মাত্র এক সেকেন্ডের ১৬ ভাগের একভাগ সময়ে কাউকে কামড়ে বিষ ঢালতে পারে সাপটি! তাই কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে রাসেল ভাইপার পৃথিবীর প্রথম স্থান দখল করেছে। তাছাড়া এ সাপটির বিষ দাঁত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। এ সাপের কোন অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। বলা যায়, এর এক ছোবলেই মৃত্যু নিশ্চিত। রাসেল ভাইপারে কামড়েছে অথচ বেঁচে গেছেন এমন উদাহরণ নেই বললেই চলে। আবার কেউ ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাই সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই একমাত্র পথ।’