নিম্ন-হারে কর নির্ধারণ হলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে

এম.এ. কাদের

সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা এবং দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার যে রাজস্ব আয় করে থাকে, তার বড় একটি অংশ আয়কর খাত থেকে আসে। গত ১৯-২০ অর্থবছরে দেশের মোট বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২১.৮ শতাংশ (আয়, মুনাফা ও মূলধনের উপর কর) অর্থাৎ ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকাই আয়কর খাত থেকে এসেছিল। আমাদের দেশে আয়কর আইন অনুযায়ী একজন নাগরিকের কর্মজীবন শুরু হলে পুরুষের বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলা ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৩ লাখ এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার বেশি হলে ওই নাগরিক আয়করের আওতায় আসার নিয়ম আছে। আয়কর শিথিলের পর প্রথম ৪ লাখ টাকা আয় পর্যন্ত অর্থাৎ পুরুষের ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলাদের ৭ লাখ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৮ লাখ টাকা আয় হলে সরকারকে শিথিলযোগ্য টাকার উপরের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ আয়কর দিতে হবে। একই নিয়মে ৪ লাখ টাকার পর পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য শতকরা ১৫ শতাংশ হারে, পরবর্তী ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ৬ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হলে শতকরা ২৫ শতাংশ এবং ৩০ লাখ টাকার ওপরে শতকরা ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দেয়ার বিধান রয়েছে। বর্তমান আয়কর আইন পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিথিলের পর ১ম ৪ লাখ টাকা আয়ের উপর ১০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে ৪০ হাজার টাকা। পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ হারে ৭৫ হাজার টাকা, পরবর্তী ৬ লাখ টাকা আয়ের ওপর কর দিতে হবে ২০ শতাংশ হারে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। পরবর্তী ৩০ লাখ টাকা আয় দেখালে কর দিতে হবে ২৫ শতাংশ হারে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর পরে যে কোন আয় দেখালে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। পরবর্তী ৩০ লাখ টাকার পর আর মাত্র ৫ লাখ টাকা আয় দেখালেও ৩০ শতাংশ হারে দিতে হবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। করের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বছরে শিথিলযোগ্য টাকার পর ৫০ লাখ টাকা আয় দেখালে তাকে আয়কর দিতে হবে প্রায় ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। গড় হিসাবে ৫০ লাখ টাকা আয়ের ক্ষেত্রে তাকে কর দিতে হবে ২২.৭০ শতাংশ টাকা। কোম্পানির ক্ষেত্রে এই হার এর থেকেও অনেক বেশি। সাধারণ কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ এবং সিগারেট, বিড়ি জর্দ্দা গুলসহ সব ধরনের তামাক জাত কোম্পানির কাছ থেকে শতকরা ৪৫ ভাগ কর নির্ধারণ করা থাকলেও বাস্তবে অনেকেই এই নিয়ম মেনে চলে না। এই অধিক হারে আয়কর দেওয়ার নিয়মের কারনেণই আয়কর দাতারা বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে আয়কর একেবারেই কম দিচ্ছে এবং বৈধপথে উপার্জন হওয়া সত্ত্বেও অপ্রদর্শনের কারণে এ টাকা বৈধতা হারাচ্ছে। আর এ সুযোগেই কিছু মধ্যভোগী সুবিধাবাদী, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে। তাছাড়া আবাসিক বাড়ি বা এপার্টমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে 19BBBBB ধারা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক প্রতি বর্গমিটার হিসাবে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা আছে। অভ্যন্তরীন নৌ-পথে নৌ-যানের যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতার ভিত্তিতে যাত্রী প্রতি-১২৫ টাকা ও মালামাল পরিবহন কার্গো কন্টেইনার (মাল্টি পারপাস) পরিবহনের ক্ষমতার ভিত্তিতে গ্রোস টনেজ প্রতি-১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক পথে ৫২ সিটের অধিক বাস বছরে-১৬ হাজার টাকা, ৫২ সিটের কম প্রতিটি বাস-১১ হাজার পাঁচশত টাকা, দো-তলা বাস ১৬ হাজার টাকা। মাল পরিবহন ট্রাক ৫ টনের অধিক ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ ১৬ হাজার টাকা, দেড় টনের কম ট্রাক পিক-আপ, হিউম্যান হলার অটোরিকশা-৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাইভেট গাড়ির ক্ষেত্রে ১৫০০ সিসি কার ও জিপের জন্য ১৫ হাজার, ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা, প্রতিটি মাইক্রোবাসের জন্য ২০ হাজার টাকা, ২০০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২৫০০ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা, ৩০০০ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ টাকা, ৩৫০০ সিসি থেকে যত উপরেই হোক ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ আছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন নাগরিক তার কর্মজীবন শুরু হওয়ার পরই, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রথমে ৩ হাজার টাকা সাধারণ আয়কর দিয়ে শুরু করলে ১০ লাখ টাকা তার আয়কর নথিতে সাদা টাকা হিসাবে মূলধন দেখানো নিয়ম আছে, এছাড়াও উক্ত নথিতে পৈত্রিক সম্পত্তি যোগ হতে পারে। এরপর তার কর্মজীবনের সমস্ত আয়ের ওপর নির্ধারিত কর পরিশোধের মাধ্যমে স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি ও মূলধন বাড়ার কথা থাকলেও করদাতার আয়কর নথির সঙ্গে বাস্তব অবস্থার তেমন মিল পাওয়া যায় না। তাছাড়া দেশে লাখ লাখ যানবাহন

(বাস-ট্রাক, প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রো) এবং একই ব্যক্তির একাধিক গাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকের আয়কর নথিতে মূলধন হিসাবে কমমূল্যের দুই-একটি টি গাড়ি দেখানো আছে। শুধু গাড়ির ফিটনেস সচল রাখার জন্য বাসে ১০ হাজার এবং ট্রাকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর দেয়া হয়। গাড়ির প্রকৃত সংখ্যা বা মূল্য মূলধনে দেখানো হয় না। একজন নাগরিকের বাড়ি, গাড়ি, জায়গা, জমি, সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা হলেও তার আয়কর নথিতে হিসাব লেখানো আছে হয়ত ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা, যা প্রকৃত হিসাবের ১৫ ভাগেরও কম। এতে করে সরকার করদাতার কাছ থেকে আয়কর হারাচ্ছে, অন্য দিকে অধিক কর নির্ধারণ করায় করদাতা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সরকারকে কর দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। অনেক বড় বড় ব্যবসায়ীর বৈধ পথে আয় করা অপ্রদর্শিত টাকা, অধিক হারে আয়কর নির্ধারণের কারণে সাদা টাকা হিসাবে বৈধতা না পাওয়ায়, দেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এ কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এছাড়াও অবৈধভাবে আয় করা কালো টাকাও অধিকহারে বিদেশে পাচার হচ্ছে।

উপকর কমিশনার ঝিনাইদহ, কে, এম, আ. আজিজ সাহেবের সঙ্গে আলোচনান্তে জানা যায়, ২০১৯/২০ অর্থবছরে ঝিনাইদহ জেলায় মোট করদাতার নথির সংখ্যা ১৬ হাজার, কর আদায় এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ফেব্রয়ারি পর্যন্ত আদায় করেছে ২৫ কোটি টাকা। জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সর্বনিম্ন করের টাকার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার টাকা বিভাগীয় শহরে ছিল ৫ হাজার টাকা। আমাদের জানামতে একটি উপজেলা শহরে পৌর এলাকাধীন একতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত ব্যবসায়িক এবং আবাসিক ভবনের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০টি। একেকটি ভবনের মূল্য আনুমানিক জমিসহ ১ কোটি টাকার অনেক ঊর্ধ্বে। উল্লেখিত ভবনের মূল্য আয়কর নথিতে মূলধন হিসাবে মাত্র ১ কোটি টাকা দেখালে শতকরা ২ শতাংশ হারে আয়কর ধরা হলেও তাকে ওই ভবনটির জন্য দুই লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। শুধু উপজেলা শহরেও ৩০০ ভবনের মধ্যে ১০০ ভবনও আয়কর দাতার নথিতে দেখানো নাই। উপজেলা শহরে শুধু ৩০০ বাড়ির সর্বনিম্ন ২% হারে সরকারকে আয়কর দিলে প্রতি উপজেলায় অতিরিক্ত প্রায় ৬ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে আয় হবে। একই নিয়মে প্রতি জেলা শহরে কমপক্ষে ১০ গুন হারে আয় হবে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। তাহলে ৬৪ জেলায় রাজস্ব আয় হবে ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। পুরাতন জেলা শহরে এর ১০ গুণ বেশি টাকা কর আদায় হবে। বিভাগীয় শহরে ভবনের সংখ্যা জেলা শহর থেকে অন্তত ১০ গুণ বেশি। তাহলে কর আদায় হবে হাজার হাজার কোটি টাকা। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোয় লাখ লাখ বাণিজ্যিক ও আবাসিক বাড়ির মূল্যকে মূলধন হিসাবে সর্বনিম্ন হারেও আয়কর নির্ধারণ করে আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি করলে সরকারের আয় হবে হাজার হাজার গুণ বেশি অর্থাৎ লাখ লাখ কোটি টাকা। দেশের উপার্জনক্ষম (কর্মজীবনে) ব্যক্তির জন্য আয়কর নথি একটি আয়না স্বরূপ। প্রত্যেকের আয়কর নথি বিশ্লেষণ করলে, ওই ব্যক্তির অর্থনৈতিক, সামাজিক মর্যাদা আয়না স্বরূপ বোঝার দরকার ছিল। বর্তমানে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা শুরু হওয়ায় সাধারণ এবং মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীদের লাভের হার অত্যন্ত কম। তাছাড়া অনেকের বাৎসরিক আয় থেকে খরচও অনেক বেশি। একজন নাগরিকের আয়কর শিথিলের পর বাৎসরিক আয় ৯ লাখ টাকা হলে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী তাকে কর দিতে হবে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। করদাতার কাছে করের হার অত্যন্ত বেশি হওয়ার কারণে সে কর দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। অনেক কর দাতার সঙ্গে আলাপে জানা যায়, সরকার সর্বনি¤œ হারে কর দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করলে, তারা বৈধপথে অপ্রদর্শিত আয়ের আয়কর দিয়ে সমস্ত স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার প্রদর্শন করে দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত হতে চায়। সরকার স্বল্প হারে কর নির্ধারণ করলে আয় প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় অনেক বেড়ে যাবে। অন্যদিকে বৈধ পথে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করার সুযোগ পেলে দেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিদেশে অর্থ পাচার অনেকাংশে বন্ধ হবে। তাছাড়া করদাতা স্ব-ইচ্ছায় করদিলে পরামর্শদাতা, মধ্যভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে। এতে করদাতাদের ভোগান্তি বন্ধ হবে এবং সবাই স্ব-ইচ্ছায় কর দিতে উৎসাহিত হবে।

দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে এগিয়ে নেয়ার জন্য রাজস্ব আয়ের আর কোন বিকল্প নাই। কাজেই বর্তমান হার থেকে করের হার শিথিল করে সর্বনিম্নহারে অর্থাৎ মাত্র ২% হারে কর নির্ধারণ করলে বৈধ পথে উপার্জিত অপ্রদর্শিত সম্পদ, টাকা-পয়সা ধারাবাহিক প্রমাণ সাপেক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রদর্শন করার সুযোগ দিলে সরকারের আয় যেমনি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে তেমনি অপ্রদির্শত আয় প্রদর্শনে বৈধতা পাবে এবং সরকারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে করদাতা প্রতি বছরই স্বইচ্ছায় তার সঠিক আয় প্রদর্শন করে কর দেয়ার জন্য উৎসাহিত হবে। এছাড়াও সহজ শর্তে সর্বনিম্ন কর কমিয়ে আনলে নতুন করদাতার সংখ্যাও অনেক বেড়ে যাবে, ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়ে যাবে। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য ৪৫ শতাংশের জায়গায় ১০০ শতাংশ কর নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, অবৈধ পথে আয়, ধারাবাহিকতা না থাকা, আয়ের উৎস না থাকা, অধিক হারে অপ্রত্যাশিত আয় দেখানো বা ইতিপূর্বে আয়কর নথি না থাকা, এদের এ সুযোগের আওতায় আনা যাবে না। দুর্নীতিবাজরা এ সুযোগের আওতায় আসলে অতি উৎসাহিত হয়ে কালোটাকা, সাদা করার সুযোগ নিতে পারে। প্রায় প্রতি অর্থবছরেই অধিক কর নির্ধারণ করে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। কিছু সংখ্যক লোক ছাড়া সাধারণ জনগণ এ সুযোগ নিতে পারে না। সহজ ও সর্বনিম্ন কর নির্ধারণের বিষয়টি অভিজ্ঞজনের বিচার বিশ্লেষণে এনে, জটিলতা এড়িয়ে স্বচ্ছ আইনের মাধ্যমে কর নির্ধারণের সুযোগ সৃষ্টি হলে, দেশের সচেতন সুনাগরিক নিজ ইচ্ছায় প্রতি বছর তার সঠিক আয় প্রদর্শন করে কর দিতে উৎসাহিত হবে। অধিক হারে সরকারের উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হলে, উন্নত বিশ্বের ন্যায় দ্রুত দেশের উন্নয়ন সহজ হবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন দেশকে উন্নত রাষ্টে পরিণত করা ২০৪১ সাল নয়, এর অনেক আগেই বাংলাদেশ বিশ্বের একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে ধারণা করা যায়।

[লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট]

makader958@gmail.com

শুক্রবার, ০৫ জুন ২০২০ , ২২ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১২ শাওয়াল ১৪৪১

নিম্ন-হারে কর নির্ধারণ হলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে

এম.এ. কাদের

সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা এবং দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার যে রাজস্ব আয় করে থাকে, তার বড় একটি অংশ আয়কর খাত থেকে আসে। গত ১৯-২০ অর্থবছরে দেশের মোট বাজেট ছিল পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২১.৮ শতাংশ (আয়, মুনাফা ও মূলধনের উপর কর) অর্থাৎ ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকাই আয়কর খাত থেকে এসেছিল। আমাদের দেশে আয়কর আইন অনুযায়ী একজন নাগরিকের কর্মজীবন শুরু হলে পুরুষের বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলা ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ৩ লাখ এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার বেশি হলে ওই নাগরিক আয়করের আওতায় আসার নিয়ম আছে। আয়কর শিথিলের পর প্রথম ৪ লাখ টাকা আয় পর্যন্ত অর্থাৎ পুরুষের ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলাদের ৭ লাখ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৮ লাখ টাকা আয় হলে সরকারকে শিথিলযোগ্য টাকার উপরের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ আয়কর দিতে হবে। একই নিয়মে ৪ লাখ টাকার পর পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য শতকরা ১৫ শতাংশ হারে, পরবর্তী ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ৬ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হলে শতকরা ২৫ শতাংশ এবং ৩০ লাখ টাকার ওপরে শতকরা ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দেয়ার বিধান রয়েছে। বর্তমান আয়কর আইন পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিথিলের পর ১ম ৪ লাখ টাকা আয়ের উপর ১০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে ৪০ হাজার টাকা। পরবর্তী ৫ লাখ টাকা আয়ের জন্য কর দিতে হবে ১৫ শতাংশ হারে ৭৫ হাজার টাকা, পরবর্তী ৬ লাখ টাকা আয়ের ওপর কর দিতে হবে ২০ শতাংশ হারে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। পরবর্তী ৩০ লাখ টাকা আয় দেখালে কর দিতে হবে ২৫ শতাংশ হারে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর পরে যে কোন আয় দেখালে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। পরবর্তী ৩০ লাখ টাকার পর আর মাত্র ৫ লাখ টাকা আয় দেখালেও ৩০ শতাংশ হারে দিতে হবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। করের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বছরে শিথিলযোগ্য টাকার পর ৫০ লাখ টাকা আয় দেখালে তাকে আয়কর দিতে হবে প্রায় ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। গড় হিসাবে ৫০ লাখ টাকা আয়ের ক্ষেত্রে তাকে কর দিতে হবে ২২.৭০ শতাংশ টাকা। কোম্পানির ক্ষেত্রে এই হার এর থেকেও অনেক বেশি। সাধারণ কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ এবং সিগারেট, বিড়ি জর্দ্দা গুলসহ সব ধরনের তামাক জাত কোম্পানির কাছ থেকে শতকরা ৪৫ ভাগ কর নির্ধারণ করা থাকলেও বাস্তবে অনেকেই এই নিয়ম মেনে চলে না। এই অধিক হারে আয়কর দেওয়ার নিয়মের কারনেণই আয়কর দাতারা বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে আয়কর একেবারেই কম দিচ্ছে এবং বৈধপথে উপার্জন হওয়া সত্ত্বেও অপ্রদর্শনের কারণে এ টাকা বৈধতা হারাচ্ছে। আর এ সুযোগেই কিছু মধ্যভোগী সুবিধাবাদী, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে। তাছাড়া আবাসিক বাড়ি বা এপার্টমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে 19BBBBB ধারা অনুযায়ী এলাকাভিত্তিক প্রতি বর্গমিটার হিসাবে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা আছে। অভ্যন্তরীন নৌ-পথে নৌ-যানের যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতার ভিত্তিতে যাত্রী প্রতি-১২৫ টাকা ও মালামাল পরিবহন কার্গো কন্টেইনার (মাল্টি পারপাস) পরিবহনের ক্ষমতার ভিত্তিতে গ্রোস টনেজ প্রতি-১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক পথে ৫২ সিটের অধিক বাস বছরে-১৬ হাজার টাকা, ৫২ সিটের কম প্রতিটি বাস-১১ হাজার পাঁচশত টাকা, দো-তলা বাস ১৬ হাজার টাকা। মাল পরিবহন ট্রাক ৫ টনের অধিক ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ ১৬ হাজার টাকা, দেড় টনের কম ট্রাক পিক-আপ, হিউম্যান হলার অটোরিকশা-৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাইভেট গাড়ির ক্ষেত্রে ১৫০০ সিসি কার ও জিপের জন্য ১৫ হাজার, ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকা, প্রতিটি মাইক্রোবাসের জন্য ২০ হাজার টাকা, ২০০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২৫০০ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা, ৩০০০ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ টাকা, ৩৫০০ সিসি থেকে যত উপরেই হোক ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ আছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন নাগরিক তার কর্মজীবন শুরু হওয়ার পরই, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রথমে ৩ হাজার টাকা সাধারণ আয়কর দিয়ে শুরু করলে ১০ লাখ টাকা তার আয়কর নথিতে সাদা টাকা হিসাবে মূলধন দেখানো নিয়ম আছে, এছাড়াও উক্ত নথিতে পৈত্রিক সম্পত্তি যোগ হতে পারে। এরপর তার কর্মজীবনের সমস্ত আয়ের ওপর নির্ধারিত কর পরিশোধের মাধ্যমে স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি ও মূলধন বাড়ার কথা থাকলেও করদাতার আয়কর নথির সঙ্গে বাস্তব অবস্থার তেমন মিল পাওয়া যায় না। তাছাড়া দেশে লাখ লাখ যানবাহন

(বাস-ট্রাক, প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রো) এবং একই ব্যক্তির একাধিক গাড়ি থাকা সত্ত্বেও অনেকের আয়কর নথিতে মূলধন হিসাবে কমমূল্যের দুই-একটি টি গাড়ি দেখানো আছে। শুধু গাড়ির ফিটনেস সচল রাখার জন্য বাসে ১০ হাজার এবং ট্রাকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর দেয়া হয়। গাড়ির প্রকৃত সংখ্যা বা মূল্য মূলধনে দেখানো হয় না। একজন নাগরিকের বাড়ি, গাড়ি, জায়গা, জমি, সম্পদের মূল্য ৫ কোটি টাকা হলেও তার আয়কর নথিতে হিসাব লেখানো আছে হয়ত ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা, যা প্রকৃত হিসাবের ১৫ ভাগেরও কম। এতে করে সরকার করদাতার কাছ থেকে আয়কর হারাচ্ছে, অন্য দিকে অধিক কর নির্ধারণ করায় করদাতা দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সরকারকে কর দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। অনেক বড় বড় ব্যবসায়ীর বৈধ পথে আয় করা অপ্রদর্শিত টাকা, অধিক হারে আয়কর নির্ধারণের কারণে সাদা টাকা হিসাবে বৈধতা না পাওয়ায়, দেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এ কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এছাড়াও অবৈধভাবে আয় করা কালো টাকাও অধিকহারে বিদেশে পাচার হচ্ছে।

উপকর কমিশনার ঝিনাইদহ, কে, এম, আ. আজিজ সাহেবের সঙ্গে আলোচনান্তে জানা যায়, ২০১৯/২০ অর্থবছরে ঝিনাইদহ জেলায় মোট করদাতার নথির সংখ্যা ১৬ হাজার, কর আদায় এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ কোটি টাকা। চলতি বছরের ফেব্রয়ারি পর্যন্ত আদায় করেছে ২৫ কোটি টাকা। জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সর্বনিম্ন করের টাকার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার টাকা বিভাগীয় শহরে ছিল ৫ হাজার টাকা। আমাদের জানামতে একটি উপজেলা শহরে পৌর এলাকাধীন একতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত ব্যবসায়িক এবং আবাসিক ভবনের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০০টি। একেকটি ভবনের মূল্য আনুমানিক জমিসহ ১ কোটি টাকার অনেক ঊর্ধ্বে। উল্লেখিত ভবনের মূল্য আয়কর নথিতে মূলধন হিসাবে মাত্র ১ কোটি টাকা দেখালে শতকরা ২ শতাংশ হারে আয়কর ধরা হলেও তাকে ওই ভবনটির জন্য দুই লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে। শুধু উপজেলা শহরেও ৩০০ ভবনের মধ্যে ১০০ ভবনও আয়কর দাতার নথিতে দেখানো নাই। উপজেলা শহরে শুধু ৩০০ বাড়ির সর্বনিম্ন ২% হারে সরকারকে আয়কর দিলে প্রতি উপজেলায় অতিরিক্ত প্রায় ৬ কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব খাতে আয় হবে। একই নিয়মে প্রতি জেলা শহরে কমপক্ষে ১০ গুন হারে আয় হবে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। তাহলে ৬৪ জেলায় রাজস্ব আয় হবে ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। পুরাতন জেলা শহরে এর ১০ গুণ বেশি টাকা কর আদায় হবে। বিভাগীয় শহরে ভবনের সংখ্যা জেলা শহর থেকে অন্তত ১০ গুণ বেশি। তাহলে কর আদায় হবে হাজার হাজার কোটি টাকা। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোয় লাখ লাখ বাণিজ্যিক ও আবাসিক বাড়ির মূল্যকে মূলধন হিসাবে সর্বনিম্ন হারেও আয়কর নির্ধারণ করে আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি করলে সরকারের আয় হবে হাজার হাজার গুণ বেশি অর্থাৎ লাখ লাখ কোটি টাকা। দেশের উপার্জনক্ষম (কর্মজীবনে) ব্যক্তির জন্য আয়কর নথি একটি আয়না স্বরূপ। প্রত্যেকের আয়কর নথি বিশ্লেষণ করলে, ওই ব্যক্তির অর্থনৈতিক, সামাজিক মর্যাদা আয়না স্বরূপ বোঝার দরকার ছিল। বর্তমানে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা শুরু হওয়ায় সাধারণ এবং মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ীদের লাভের হার অত্যন্ত কম। তাছাড়া অনেকের বাৎসরিক আয় থেকে খরচও অনেক বেশি। একজন নাগরিকের আয়কর শিথিলের পর বাৎসরিক আয় ৯ লাখ টাকা হলে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী তাকে কর দিতে হবে প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। করদাতার কাছে করের হার অত্যন্ত বেশি হওয়ার কারণে সে কর দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে। অনেক কর দাতার সঙ্গে আলাপে জানা যায়, সরকার সর্বনি¤œ হারে কর দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করলে, তারা বৈধপথে অপ্রদর্শিত আয়ের আয়কর দিয়ে সমস্ত স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার প্রদর্শন করে দায়বদ্ধতা থেকে মুক্ত হতে চায়। সরকার স্বল্প হারে কর নির্ধারণ করলে আয় প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় অনেক বেড়ে যাবে। অন্যদিকে বৈধ পথে অপ্রদর্শিত আয় প্রদর্শন করার সুযোগ পেলে দেশে বিনিয়োগের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বিদেশে অর্থ পাচার অনেকাংশে বন্ধ হবে। তাছাড়া করদাতা স্ব-ইচ্ছায় করদিলে পরামর্শদাতা, মধ্যভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে। এতে করদাতাদের ভোগান্তি বন্ধ হবে এবং সবাই স্ব-ইচ্ছায় কর দিতে উৎসাহিত হবে।

দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে এগিয়ে নেয়ার জন্য রাজস্ব আয়ের আর কোন বিকল্প নাই। কাজেই বর্তমান হার থেকে করের হার শিথিল করে সর্বনিম্নহারে অর্থাৎ মাত্র ২% হারে কর নির্ধারণ করলে বৈধ পথে উপার্জিত অপ্রদর্শিত সম্পদ, টাকা-পয়সা ধারাবাহিক প্রমাণ সাপেক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রদর্শন করার সুযোগ দিলে সরকারের আয় যেমনি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে তেমনি অপ্রদির্শত আয় প্রদর্শনে বৈধতা পাবে এবং সরকারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে করদাতা প্রতি বছরই স্বইচ্ছায় তার সঠিক আয় প্রদর্শন করে কর দেয়ার জন্য উৎসাহিত হবে। এছাড়াও সহজ শর্তে সর্বনিম্ন কর কমিয়ে আনলে নতুন করদাতার সংখ্যাও অনেক বেড়ে যাবে, ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়ে যাবে। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য ৪৫ শতাংশের জায়গায় ১০০ শতাংশ কর নির্ধারণ করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, অবৈধ পথে আয়, ধারাবাহিকতা না থাকা, আয়ের উৎস না থাকা, অধিক হারে অপ্রত্যাশিত আয় দেখানো বা ইতিপূর্বে আয়কর নথি না থাকা, এদের এ সুযোগের আওতায় আনা যাবে না। দুর্নীতিবাজরা এ সুযোগের আওতায় আসলে অতি উৎসাহিত হয়ে কালোটাকা, সাদা করার সুযোগ নিতে পারে। প্রায় প্রতি অর্থবছরেই অধিক কর নির্ধারণ করে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। কিছু সংখ্যক লোক ছাড়া সাধারণ জনগণ এ সুযোগ নিতে পারে না। সহজ ও সর্বনিম্ন কর নির্ধারণের বিষয়টি অভিজ্ঞজনের বিচার বিশ্লেষণে এনে, জটিলতা এড়িয়ে স্বচ্ছ আইনের মাধ্যমে কর নির্ধারণের সুযোগ সৃষ্টি হলে, দেশের সচেতন সুনাগরিক নিজ ইচ্ছায় প্রতি বছর তার সঠিক আয় প্রদর্শন করে কর দিতে উৎসাহিত হবে। অধিক হারে সরকারের উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হলে, উন্নত বিশ্বের ন্যায় দ্রুত দেশের উন্নয়ন সহজ হবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন দেশকে উন্নত রাষ্টে পরিণত করা ২০৪১ সাল নয়, এর অনেক আগেই বাংলাদেশ বিশ্বের একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে ধারণা করা যায়।

[লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট]

makader958@gmail.com