কক্সবাজার ‘রেড জোনে’ আবারও লকডাউন

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজারে ‘রেড জোন’ পৌর এলাকাকে আবারও লকডাউন ঘোষণা করেছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। গতকাল বিকালে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আজ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ কার্যকর ও অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমগ্র পৌরসভাকে রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রেড জোনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বিবেচনায় ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

১. রেড জোন এলাকায়-

ক. সব প্রকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সব জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবে।

খ. সব ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহনকরী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি গ্রহণ করবে। এম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যত্তিবর্গের (অনডিউটি) পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে। গ. সব ধরনের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র রোববার ও বৃহস্পতিবার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঘ. কেবলমাত্র কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। কেবলমাত্র রোববার ও বৃহস্পতিবার ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা থাকবে। সব হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঙ. জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মীদের রেড জোনে কাজ করার নিমিত্ত কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রেড জোনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কক্সবাজার সদর কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।

চ. সব প্রকার গণপরিবহন টার্মিনাল রেড জোনের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে।

ছ. প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোন প্রকার ত্রাণ, খাদ্যসামগ্রী বা অন্য কোন পণ্য বিতরণ করা যাবে না।

এতদউদ্দেশে গঠিত ওয়ার্ড কমিটিসমূহ নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দায়িত্বপালন করবে।

কোভিড ১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

উল্লেখ্য, গত ৬৩ দিনে মোট ৭৩৫১ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। তারমধ্যে ৯৫৮ জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেল। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৮৭৭ জন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কক্সবাজার সদর উপজেলায়। যেখানে ৩৬৪ জন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া মহেশখালীতে ৩৪ জন, টেকনাফে ৪১ জন, উখিয়ায় ১১০ জন, রামু ৫৩ জন, চকরিয়ায় ১৮৯ জন, কুতুবদিয়ায় ৩ জন এবং পেকুয়ায় ৪৭ জন রয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩৫ জন রোহিঙ্গা। অন্যরা কক্সবাজার জেলার নিকটবর্তী বান্দরবান জেলার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও, সীতাকুঞ্জ, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার বাসিন্দা।

আরও খবর
মশক নিধন কার্যক্রম শুরু আজ থেকে
পরিবেশ সংরক্ষণে যত্নবান হলে ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেয়া সহজ হতো : তথ্যমন্ত্রী
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. গোলাম কিবরিয়ার মৃত্যু
আম পরিবহনে ‘ম্যাংগো’ স্পেশাল ট্রেন
মানবিক সহায়তায় ৯ হাজার টন চাল ও ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ
স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় অনিয়ম খতিয়ে দেখা হচ্ছে দুদক চেয়ারম্যান
মন্দায় টিকে থাকতে কৃষিখাতের ওপর জোর দিতে হবে মির্জা ফখরুল
চেয়ারম্যান রাঢ়ী গ্রেফতার
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা তালিকায় বিত্তশালীদের নাম
জেলেরা নেই জেলে তালিকায়
গোয়েন্দা পুলিশের ওপর হামলা, ৮ আসামি ছিনতাই
হোটেল-মোটেল খোলার প্রস্তুতি
স্নানযাত্রা উৎসব পালিত
সাত দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ
করোনা পরিস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান, তিন জনকে জরিমানা

শনিবার, ০৬ জুন ২০২০ , ২৩ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৩ শাওয়াল ১৪৪১

কক্সবাজার ‘রেড জোনে’ আবারও লকডাউন

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজারে ‘রেড জোন’ পৌর এলাকাকে আবারও লকডাউন ঘোষণা করেছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। গতকাল বিকালে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আজ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ কার্যকর ও অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমগ্র পৌরসভাকে রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রেড জোনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বিবেচনায় ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

১. রেড জোন এলাকায়-

ক. সব প্রকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সব জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবে।

খ. সব ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহনকরী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি গ্রহণ করবে। এম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যত্তিবর্গের (অনডিউটি) পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে। গ. সব ধরনের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র রোববার ও বৃহস্পতিবার কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঘ. কেবলমাত্র কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। কেবলমাত্র রোববার ও বৃহস্পতিবার ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা থাকবে। সব হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবিলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান এর আওতার বাইরে থাকবে।

ঙ. জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মীদের রেড জোনে কাজ করার নিমিত্ত কক্সবাজার প্রেসক্লাব কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রেড জোনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কক্সবাজার সদর কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।

চ. সব প্রকার গণপরিবহন টার্মিনাল রেড জোনের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে।

ছ. প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোন প্রকার ত্রাণ, খাদ্যসামগ্রী বা অন্য কোন পণ্য বিতরণ করা যাবে না।

এতদউদ্দেশে গঠিত ওয়ার্ড কমিটিসমূহ নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দায়িত্বপালন করবে।

কোভিড ১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

উল্লেখ্য, গত ৬৩ দিনে মোট ৭৩৫১ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। তারমধ্যে ৯৫৮ জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেল। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৮৭৭ জন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কক্সবাজার সদর উপজেলায়। যেখানে ৩৬৪ জন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া মহেশখালীতে ৩৪ জন, টেকনাফে ৪১ জন, উখিয়ায় ১১০ জন, রামু ৫৩ জন, চকরিয়ায় ১৮৯ জন, কুতুবদিয়ায় ৩ জন এবং পেকুয়ায় ৪৭ জন রয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩৫ জন রোহিঙ্গা। অন্যরা কক্সবাজার জেলার নিকটবর্তী বান্দরবান জেলার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও, সীতাকুঞ্জ, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার বাসিন্দা।