স্মার্টফোন আসক্তি শিশুদের জন্য অভিশাপ

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সেই ভবিষ্যৎতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের হাতে, নিজেদের অজান্তেই আমরা তুলে দিচ্ছি, তাদের ধ্বংসের হাতিয়ার, স্মার্টফোন। গবেষকদের মতে, শিশুরা এক মিনিট কথা বললে, তাদের মস্তিষ্ক সিহর হতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। বর্তমানে, অধিকাংশ শিশুই স্মার্টফোনে আসক্ত। এই আসক্তিই পরিবর্তীতে, শিশুকে পৌঁছে দিচ্ছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

বর্তমানে বাবা-মা শিশুর কান্না থামানোর হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছেন স্মার্টফোন। শিশু কান্না করলেই বাবা-মা তার কান্না থামানোর জন্য স্মার্টফোন ফোনের ইউটিউবে গিয়ে নানা রকম কার্টুন চালিয়ে দেয়। আবার অনেক বাবা-মা তার শিশুকে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়াতে তার হাতে মোবাইলফোন ধরিয়ে দিচ্ছে। এভাবেই একটি শিশু আস্তে আস্তে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি শিশুর মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। চিকিসৎকেরা বলছেন, শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে চোখের জ্যোতি নষ্ট হওয়া, কানে কম শোনা, লিউকেমিয়াসহ নানা রকম মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। এই মোবাইল আসক্তি থেকে শিশুদের বের করে আনতে না পারলে তাদের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ কোনভাবেই ঘটানো সম্ভব হবে না। আর শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ না হলে, জাতির অগ্রগতি থেমে যাবে, জাতি পাবে মেধা শূন্য নেতৃত্ব। তাই শিশুদের স্মার্টফোনে আসক্ত করবেন না।

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার সন্তানদের ১৪ বছরের আগে স্মার্টফোন তো দূরের কথা, কোন মোবাইল ফোনই কিনে দেননি। তিনি তার সন্তানেরদের দিনে ৪৫ মিনিটের বেশি কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেন না। আপনার শিশুর অভ্যাস বদল করুন, স্মার্টফোন না দিয়ে ঐ সময়টুকু আপনার শিশুকে অন্য কোন দিকে মগ্ন রাখার চেষ্টা করুন। শিশুদের হাতে তাদের উপযোগী গল্প, উপন্যাসের বই তুলে দিন। তাদের ছোট থেকেই বই পড়তে অভ্যস্ত করুন। আপনার শিশুর জন্য ছোট্ট পরিসরে পারিবারিক লাইব্রেরি গোড়ে তুলুন। তাদের সময় দিন, তাদের সঙ্গে আড্ডা গল্প গুজব করুন, মাঝে মধ্যে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যান। শিশুর সারাদিনের পুরো সময়টাকে ভাগ করুন এবং বয়স অনুযায়ী তাকে ব্যস্ত রাখুন বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ আর খেলা দিয়ে। আপনার বাসার আশেপাশে খেলার মাঠ থাকলে শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহী করুন, এতে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক উভয় বিকাশের জন্যই উপকারী হবে।

হাসানুর রহমান

আরও খবর

শনিবার, ০৬ জুন ২০২০ , ২৩ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৩ শাওয়াল ১৪৪১

স্মার্টফোন আসক্তি শিশুদের জন্য অভিশাপ

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সেই ভবিষ্যৎতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদের হাতে, নিজেদের অজান্তেই আমরা তুলে দিচ্ছি, তাদের ধ্বংসের হাতিয়ার, স্মার্টফোন। গবেষকদের মতে, শিশুরা এক মিনিট কথা বললে, তাদের মস্তিষ্ক সিহর হতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। বর্তমানে, অধিকাংশ শিশুই স্মার্টফোনে আসক্ত। এই আসক্তিই পরিবর্তীতে, শিশুকে পৌঁছে দিচ্ছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

বর্তমানে বাবা-মা শিশুর কান্না থামানোর হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছেন স্মার্টফোন। শিশু কান্না করলেই বাবা-মা তার কান্না থামানোর জন্য স্মার্টফোন ফোনের ইউটিউবে গিয়ে নানা রকম কার্টুন চালিয়ে দেয়। আবার অনেক বাবা-মা তার শিশুকে তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়াতে তার হাতে মোবাইলফোন ধরিয়ে দিচ্ছে। এভাবেই একটি শিশু আস্তে আস্তে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি শিশুর মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। চিকিসৎকেরা বলছেন, শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে চোখের জ্যোতি নষ্ট হওয়া, কানে কম শোনা, লিউকেমিয়াসহ নানা রকম মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। এই মোবাইল আসক্তি থেকে শিশুদের বের করে আনতে না পারলে তাদের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ কোনভাবেই ঘটানো সম্ভব হবে না। আর শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ না হলে, জাতির অগ্রগতি থেমে যাবে, জাতি পাবে মেধা শূন্য নেতৃত্ব। তাই শিশুদের স্মার্টফোনে আসক্ত করবেন না।

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার সন্তানদের ১৪ বছরের আগে স্মার্টফোন তো দূরের কথা, কোন মোবাইল ফোনই কিনে দেননি। তিনি তার সন্তানেরদের দিনে ৪৫ মিনিটের বেশি কম্পিউটার ব্যবহার করতে দেন না। আপনার শিশুর অভ্যাস বদল করুন, স্মার্টফোন না দিয়ে ঐ সময়টুকু আপনার শিশুকে অন্য কোন দিকে মগ্ন রাখার চেষ্টা করুন। শিশুদের হাতে তাদের উপযোগী গল্প, উপন্যাসের বই তুলে দিন। তাদের ছোট থেকেই বই পড়তে অভ্যস্ত করুন। আপনার শিশুর জন্য ছোট্ট পরিসরে পারিবারিক লাইব্রেরি গোড়ে তুলুন। তাদের সময় দিন, তাদের সঙ্গে আড্ডা গল্প গুজব করুন, মাঝে মধ্যে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যান। শিশুর সারাদিনের পুরো সময়টাকে ভাগ করুন এবং বয়স অনুযায়ী তাকে ব্যস্ত রাখুন বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ আর খেলা দিয়ে। আপনার বাসার আশেপাশে খেলার মাঠ থাকলে শিশুকে খেলাধুলায় উৎসাহী করুন, এতে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক উভয় বিকাশের জন্যই উপকারী হবে।

হাসানুর রহমান