পুলিশে বরাদ্দ কাটছাঁট নাকচ ট্রাম্পের

গত মাসের শেষ সপ্তাহে (২৫ মে) নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নিমর্মতা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে উত্তাল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যেই পুলিশ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি উঠেছে। তবে এমন দাবি উপেক্ষা করেই মার্কিন পুলিশ বিভাগের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পুলিশের তহবিল বরাদ্দের কোন কাটছাঁট হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়েছেন তিনি। বিবিসি, আল-জাজিরা।

গংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনেপোলিসে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাঁটুর চাপে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। ২৫ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টানা চলমান বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি ওঠে। এতে অঙ্গরাজ্য ও নগর পর্যায়েও পুলিশ বিভাগে তহবিল বরাদ্দ কমানোর স্লোগান উঠেছে ।

এমন দাবির ঠিক বিপরীতে অবস্থান নিয়ে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে দেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, ‘আমাদের কোন পুলিশ বিভাগ ভেঙে ফেলা হবে না, কমানো হবে না পুলিশের বাজেটও।’

এ সময় আমেরিকার পুলিশ বিভাগে অনেক আগে থেকেই নানা সমস্যা বিরাজ করছে- এ বিষয়টিও অস্বীকার করেন ট্রাম্প। বরং পুলিশের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, দেশের ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ পুলিশ কর্মকর্তাই ‘অসাধারণ মানুষ’। তারা দারুণ কাজ করছেন। নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন তারা। এদিনের বৈঠকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘পুলিশের জন্যই আমরা শান্তিতে বাস করতে পারছি।’ তবে পুলিশের বিরুদ্ধে বর্বরতার যে অভিযোগ উঠছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বিভাগে যাতে কোন খারাপ কর্মকর্তা না থাকেন সেটি আমদের নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে ফ্লয়েড হত্যাকা-কে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান টানা বিক্ষোভের ১৪ দিনের মুখে গত রোববার স্থানীয় মিনেপোলিস সিটি কাউন্সিল পুলিশ বিভাগ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির উদার গণতন্ত্রপন্থি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইন প্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পুলিশ বিভাগে পরিবর্তন আনতে আমূল সংস্কার আইনের প্রস্তাব করেন। ডেমোক্র্যাটরা পুলিশের ক্ষমতা কমানো এবং কাজের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা চান। তবে পুলিশের তহবিল বরাদ্দ কমানোর বিষয়টি সমর্থন করেছেন খুব কম জনই।

চলতি বছরের ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন পুলিশ ব্যবস্থায় সংস্কার জরুরি বলে মত দিলেও তিনিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতোই পুলিশে তহবিল বরাদ্দ কমানোর দরকার নেই বলেই মনে করেন।

শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০ , ২৯ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৯ শাওয়াল ১৪৪১

বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ

পুলিশে বরাদ্দ কাটছাঁট নাকচ ট্রাম্পের

সংবাদ ডেস্ক |

গত মাসের শেষ সপ্তাহে (২৫ মে) নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নিমর্মতা ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে উত্তাল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যেই পুলিশ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি উঠেছে। তবে এমন দাবি উপেক্ষা করেই মার্কিন পুলিশ বিভাগের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পুলিশের তহবিল বরাদ্দের কোন কাটছাঁট হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়েছেন তিনি। বিবিসি, আল-জাজিরা।

গংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গত ২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনেপোলিসে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাঁটুর চাপে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ঝড় ওঠে। ২৫ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টানা চলমান বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি ওঠে। এতে অঙ্গরাজ্য ও নগর পর্যায়েও পুলিশ বিভাগে তহবিল বরাদ্দ কমানোর স্লোগান উঠেছে ।

এমন দাবির ঠিক বিপরীতে অবস্থান নিয়ে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে দেশের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, ‘আমাদের কোন পুলিশ বিভাগ ভেঙে ফেলা হবে না, কমানো হবে না পুলিশের বাজেটও।’

এ সময় আমেরিকার পুলিশ বিভাগে অনেক আগে থেকেই নানা সমস্যা বিরাজ করছে- এ বিষয়টিও অস্বীকার করেন ট্রাম্প। বরং পুলিশের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, দেশের ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ পুলিশ কর্মকর্তাই ‘অসাধারণ মানুষ’। তারা দারুণ কাজ করছেন। নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন তারা। এদিনের বৈঠকে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘পুলিশের জন্যই আমরা শান্তিতে বাস করতে পারছি।’ তবে পুলিশের বিরুদ্ধে বর্বরতার যে অভিযোগ উঠছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ বিভাগে যাতে কোন খারাপ কর্মকর্তা না থাকেন সেটি আমদের নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে ফ্লয়েড হত্যাকা-কে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান টানা বিক্ষোভের ১৪ দিনের মুখে গত রোববার স্থানীয় মিনেপোলিস সিটি কাউন্সিল পুলিশ বিভাগ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির উদার গণতন্ত্রপন্থি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আইন প্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পুলিশ বিভাগে পরিবর্তন আনতে আমূল সংস্কার আইনের প্রস্তাব করেন। ডেমোক্র্যাটরা পুলিশের ক্ষমতা কমানো এবং কাজের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা চান। তবে পুলিশের তহবিল বরাদ্দ কমানোর বিষয়টি সমর্থন করেছেন খুব কম জনই।

চলতি বছরের ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন পুলিশ ব্যবস্থায় সংস্কার জরুরি বলে মত দিলেও তিনিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতোই পুলিশে তহবিল বরাদ্দ কমানোর দরকার নেই বলেই মনে করেন।