সম্প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সারাদেশে অনেক মানুষ সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যাসেবা পাচ্ছেন না। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যাচ্ছে রোগী, যা খুবই উদ্বেগজনক। সংবাদ মাধ্যম থেকে এমনও জানা গেছে, সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গভীর রাতে রোগীকে হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলেন। কিন্তু উক্ত রোগী হাসপাতাল ছাড়তে না চাইলে তাকে ওই রাতেই মারধর করে সেই হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে তার মৃত্যু হয়েছে। আবার রাজধানীতে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন করোনা রোগীর ২টি এক্সরে, ২টি রক্ত পরীক্ষা এবং নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট দিয়ে তার কাছ থেকে ১১ দিনে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা বিল নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় এই রোগী যতক্ষণ পর্যন্ত
টাকা পরিশোধ করতে পারেনি ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে আটকে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। যদিও এই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর প্রায় সোয়া লাখ টাকা ওই রোগীকে ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের বেসরকারি স্বাস্থ্যা কেন্দ্রগুলোতে আইসিইউ শয্যা খালি থাকা সত্ত্বেও আইসিইউ চাহিদাসম্পন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যার বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
প্রতিদিনই এমন ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, যা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাগরিকদের জন্য খুবই অপমানজনক ও অমানবিক। এ ধরনের ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন সেবাকার্য যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। স্বাস্থ্যাসবো খাতে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ও সেবা বঞ্চণা রীতিমতো অমানবিক এবং উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যখাতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিাতি এবং এই খাতের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা, দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমরা নিম্নোক্ত ব্যক্তিরা চরম ক্ষুব্ধ এবং ব্যথিত চিত্তে অত্র বিক্ষুব্ধ যৌথ বিবৃতি প্রদান করছি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চণার ঘটনায় দায়ী সব সেবাদানকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের মালিক ও পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষসহ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।
বিবৃতি স্বাক্ষরকারী হলেন- ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সভাপতি জিয়া উদ্দিন তারেক আলী, কৃষক সমিতি সভাপতি এসএমএ সবুর, সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, উন্নয়ন কর্মী রোকেয়া কবির, অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক এমএম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, ইনসাব সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ও সংস্কৃতি কর্মী একে আজাদ প্রমুখ।
শনিবার, ১৩ জুন ২০২০ , ৩০ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ২০ শাওয়াল ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
সম্প্রতি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, সারাদেশে অনেক মানুষ সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যাসেবা পাচ্ছেন না। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যাচ্ছে রোগী, যা খুবই উদ্বেগজনক। সংবাদ মাধ্যম থেকে এমনও জানা গেছে, সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গভীর রাতে রোগীকে হাসপাতাল ত্যাগ করতে বলেন। কিন্তু উক্ত রোগী হাসপাতাল ছাড়তে না চাইলে তাকে ওই রাতেই মারধর করে সেই হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে তার মৃত্যু হয়েছে। আবার রাজধানীতে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন করোনা রোগীর ২টি এক্সরে, ২টি রক্ত পরীক্ষা এবং নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট দিয়ে তার কাছ থেকে ১১ দিনে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা বিল নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় এই রোগী যতক্ষণ পর্যন্ত
টাকা পরিশোধ করতে পারেনি ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালে আটকে রাখার ঘটনাও ঘটেছে। যদিও এই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর প্রায় সোয়া লাখ টাকা ওই রোগীকে ফেরত দেয়া হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের বেসরকারি স্বাস্থ্যা কেন্দ্রগুলোতে আইসিইউ শয্যা খালি থাকা সত্ত্বেও আইসিইউ চাহিদাসম্পন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যার বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
প্রতিদিনই এমন ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, যা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাগরিকদের জন্য খুবই অপমানজনক ও অমানবিক। এ ধরনের ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাভাবিক ও দৈনন্দিন সেবাকার্য যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। স্বাস্থ্যাসবো খাতে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ও সেবা বঞ্চণা রীতিমতো অমানবিক এবং উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যখাতের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিাতি এবং এই খাতের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা, দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আমরা নিম্নোক্ত ব্যক্তিরা চরম ক্ষুব্ধ এবং ব্যথিত চিত্তে অত্র বিক্ষুব্ধ যৌথ বিবৃতি প্রদান করছি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চণার ঘটনায় দায়ী সব সেবাদানকারী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের মালিক ও পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষসহ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছি।
বিবৃতি স্বাক্ষরকারী হলেন- ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সভাপতি জিয়া উদ্দিন তারেক আলী, কৃষক সমিতি সভাপতি এসএমএ সবুর, সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, উন্নয়ন কর্মী রোকেয়া কবির, অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক এমএম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, ইনসাব সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ও সংস্কৃতি কর্মী একে আজাদ প্রমুখ।