বিড়ির কর বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রস্তাবিত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর কর বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিড়ি শ্রমিকরা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, রাজধানীসহ দেশের ৩০টির ও অধিক স্থানে এ মানববন্ধন পালিত হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়িতে প্যাকেট প্রতি ৪ টাকা ও সিগারেটে মাত্র ২ টাকা দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ মানববন্ধন করেছেন তারা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এমকে বাঙালি, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি প্যাকেট বিড়িতে ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪ টাকা যা শতকরা বৃদ্ধির হার ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অপরদিকে কম দামি সিগারেটে প্রতি প্যাকেটে দাম বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ টাকা যা শতকরা বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ সিগারেটের চেয়ে বিড়িতে প্যাকেট প্রতি ২ টাকা বেশি এবং শতকরা ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। এটি বিড়ি শিল্পের ওপর চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। বিদেশি সিগারেট কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই এ বৈষম্য করা হয়েছে। যা দেশীয় শিল্পের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ ছাড়া কিছুই নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করার জন্য যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল প্রস্তাবিত বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে বলেন বক্তরা। সরকার একদিকে মুখে ধূমপান বন্ধের কথা বললেও সিগারেটের বাজার সহজলভ্য করে দিয়েছে। ফলে সরকার ধূমপান মুক্ত করার জন্য যে ঘোষণা দিয়েছে তার পরিবর্তে সিগারেটের ভোক্তা বৃদ্ধি পাবে বৈ কমবে না। বাস্তবে বিদেশি সিগারেট কোম্পানির সঙ্গে সরকারের অংশিদারিত্ব না ছাড়লে আমলাতান্ত্রিক প্ররোচনায় সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা কখনোই সম্ভবপর হবে না।

এছাড়াও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি। পাশাপাশি বেশি দামি সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি না পাওয়ায় কোম্পানির আয়ের সীমা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকার বেশি ট্যাক্স প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হয়েছে। তারা আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে তা এ শিল্পের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। এর ফলে বিড়ি ফ্যাক্টরি সংখ্যা কমে যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে পড়বে লাখ লাখ বিড়ি শ্রমিক। যার ফলে শ্রমিকরা করোনায় আক্রান্ত না হয়ে অনাহারেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে। এছাড়াও নকল বিড়ি বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। সরকার রাজস্ব হারাবে। মানববন্ধন থেকে ৬টি দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো, বিড়ির ওপর ট্যাক্স কমাতে হবে, বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে, কম দামি সিগারেট ও বেশি দামি সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে, নকল বিড়ির ব্যবসা বন্ধ করতে হবে, ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে, কোনভাবেই করোনা পরিস্থিতিতে ও ভবিষ্যতেও বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি না করে বিড়ি শিল্পের ক্ষতি করা সমীচীন নয়।

রবিবার, ১৪ জুন ২০২০ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭, ২১ শাওয়াল ১৪৪

বিড়ির কর বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

প্রস্তাবিত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর কর বাড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিড়ি শ্রমিকরা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, রাজধানীসহ দেশের ৩০টির ও অধিক স্থানে এ মানববন্ধন পালিত হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়িতে প্যাকেট প্রতি ৪ টাকা ও সিগারেটে মাত্র ২ টাকা দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে এ মানববন্ধন করেছেন তারা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এমকে বাঙালি, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি প্যাকেট বিড়িতে ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪ টাকা যা শতকরা বৃদ্ধির হার ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অপরদিকে কম দামি সিগারেটে প্রতি প্যাকেটে দাম বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ টাকা যা শতকরা বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ সিগারেটের চেয়ে বিড়িতে প্যাকেট প্রতি ২ টাকা বেশি এবং শতকরা ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। এটি বিড়ি শিল্পের ওপর চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। বিদেশি সিগারেট কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই এ বৈষম্য করা হয়েছে। যা দেশীয় শিল্পের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ ছাড়া কিছুই নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করার জন্য যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল প্রস্তাবিত বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে বলেন বক্তরা। সরকার একদিকে মুখে ধূমপান বন্ধের কথা বললেও সিগারেটের বাজার সহজলভ্য করে দিয়েছে। ফলে সরকার ধূমপান মুক্ত করার জন্য যে ঘোষণা দিয়েছে তার পরিবর্তে সিগারেটের ভোক্তা বৃদ্ধি পাবে বৈ কমবে না। বাস্তবে বিদেশি সিগারেট কোম্পানির সঙ্গে সরকারের অংশিদারিত্ব না ছাড়লে আমলাতান্ত্রিক প্ররোচনায় সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা কখনোই সম্ভবপর হবে না।

এছাড়াও মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি। পাশাপাশি বেশি দামি সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি না পাওয়ায় কোম্পানির আয়ের সীমা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকার বেশি ট্যাক্স প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হয়েছে। তারা আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ি শিল্পের ওপর যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে তা এ শিল্পের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। এর ফলে বিড়ি ফ্যাক্টরি সংখ্যা কমে যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে পড়বে লাখ লাখ বিড়ি শ্রমিক। যার ফলে শ্রমিকরা করোনায় আক্রান্ত না হয়ে অনাহারেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে। এছাড়াও নকল বিড়ি বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। সরকার রাজস্ব হারাবে। মানববন্ধন থেকে ৬টি দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো, বিড়ির ওপর ট্যাক্স কমাতে হবে, বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে হবে, কম দামি সিগারেট ও বেশি দামি সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে, নকল বিড়ির ব্যবসা বন্ধ করতে হবে, ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে, কোনভাবেই করোনা পরিস্থিতিতে ও ভবিষ্যতেও বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি না করে বিড়ি শিল্পের ক্ষতি করা সমীচীন নয়।