অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে : বিপিজিএমইএ

সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে হবে এবং অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে অভিমত দিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। গতকাল ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দেয়া প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ অভিমত দেয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষে সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এ প্রতিক্রিয়া দেন। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও আগামী অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে মোকাবিলার লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিতকরণ, নতুন শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের লক্ষ্য- প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন-এটা সরকারের অত্যন্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। তবে এসব লক্ষ্যপূরণ ও সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিতে হবে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। প্লাস্টিক বর্জ্য হতে রি-সাইক্লিং করে প্লাস্টিক দানা উৎপাদন পরিবেশবান্ধব, এর মূসক অব্যাহতি দেয়ায় বর্তমান সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারীতে নিম্ন আয়ের দরিদ্র ও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যবহার্য প্লাস্টিকের থালা বাসন, জগ মগ, বাটি, গ্লাস, সবজি ধোয়ার ব্যবহার্য জালি, গামলা, বালতি, খাবার ঢাকার ঢাকনি, ঝুড়ি, বদনা, সাবান দানি, মসলার ট্রে, পিঁড়ি বা টুল, ময়লার ঝুড়ি, হাতপাখা হতে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়নি। ভ্যাট দিয়ে বর্তমানে এ সমস্ত পণ্য অতি দরিদ্র তৃণমূলের মানুষ ক্রয় করতে পারবেন না। কাজেই টিফিন ক্যারিয়ার ও পানির বোতলের ন্যায় উল্লিখিত পণ্য হতে মূসক অব্যাহতির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

মূসক আইনের ধারা ২(৪৮) এবং ১০(১) এ মূসক অব্যাহতির বিধান চালু থাকা এবং টার্নওভার করের সুবিধা বহাল রাখায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের সাধারণ আদেশ ১৭/মূসক/২০১৯ তাং ১৭/০৭/১৯ইং-এর মাধ্যমে প্লাস্টিক সেক্টরের সব উৎপাদিত পণ্যকে টার্নওভার নির্বিশেষে ভ্যাটের আওতায় নিবন্ধিত করার বিধান চালু করেছেন। ফলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প ভ্যাট দিয়ে কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে না। ভ্যাট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এনবিআরের ওই সাধারণ আদেশ বাতিল করার অনুরোধ জানাচ্ছি। করোনা মহামারীর মধ্যে শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে, সেজন্য আমরা সদাশয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে বাজেটে ঘোষিত প্রণোদনা ও অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা প্রদান প্রক্রিয়া বাস্তবভিত্তিক, সহজ এবং সরল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, সমিতি, চেম্বার, এফবিসিসিআই-এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটির তত্ত্বাবধানে অনুদান, ঋণ এবং বিনিয়োগের মঞ্জুরি এবং অন্যান্য সহায়তা অনুমোদন প্রদান করার বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করা আবশ্যক, অন্যথায় ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা এই সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করোনার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও স্থানীয় উৎপাদকদের উৎপাদন এবং সরবরাহ পর্যায়ে এক বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে যারা সার্জিক্যাল মাস্ক ও পিপিই তৈরি করবে তাদের ভ্যাট মওকুফ করা, করোনা প্রতিরোধে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম আমদানি সহজলভ্য করতে শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে। ফ্রিজ এসির ওপর মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ডিটারজেন্টের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা বাড়ানো হবে। রেফ্রিজারেটর ও এসির কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা বাড়ছে। দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল ও উপকরণ আমদানি করার ক্ষেত্রে অগ্রিম করের পরিমাণ ৫ শতাংশ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ নির্ধারণ, এছাড়া অগ্রিম কর সমন্বয় করার জন্য দুই কর মেয়াদের পরিবর্তে চার কর মেয়াদে সমন্বয় করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার ৩৫ শতাংশ, বাজেটে এই স্তরের করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, উৎসে কর অব্যাহতি ০ দশমিক ৫ শতাংশ আগামী দুই বছরের জন্য বৃদ্ধি করা, প্লাস্টিক পণ্যে আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা বাজেটের ভালো দিক।

বিপিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা করার পাশাপাশি করহার কমানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে, এতে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীরা উপকৃত হবেন। অন্যদিকে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ, একইভাবে সর্বনিম্ন করহার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা, করোনাকালীন যারা সময়মতো করের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি, তাদের দণ্ড সুদ মাফ করা ও যারা প্রথমবারের মতো অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ২ হাজার টাকা কর রেয়াত দেয়া হচ্ছে। আমরা এ সব শিল্প বাণিজ্য এবং ভোক্তাবান্ধব বাজেট প্রস্তাবনার জন্য সদাশয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। প্রস্তাবিত বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হবে বড় জোর দুই লাখ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নিম্নমুখী অর্থনৈতিক পরিবেশে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হয়নি বলে মনে হয়। এতে উৎপাদন খাতসহ সাধারণ ভোক্তাদের অতিরিক্ত পরোক্ষ করভার বহন করতে হবে। বাজেটে শুল্ক ও কর বিষয়ে জন প্রত্যাশা অনুযায়ী আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হলে বাজেট আরও কল্যাণকর হবে বলে আমরা মনে করছি।

সোমবার, ১৫ জুন ২০২০ , ১ আষাঢ় ১৪২৭, ২২ শাওয়াল ১৪৪১

অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে : বিপিজিএমইএ

সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে হবে এবং অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে বলে অভিমত দিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)। গতকাল ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দেয়া প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ অভিমত দেয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষে সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এ প্রতিক্রিয়া দেন। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও আগামী অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে মোকাবিলার লক্ষ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বিপিজিএমইএ সভাপতি বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিতকরণ, নতুন শিল্পোদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের লক্ষ্য- প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করেছেন-এটা সরকারের অত্যন্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। তবে এসব লক্ষ্যপূরণ ও সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য সরকারকে তহবিলের জোগান বাড়াতে অর্থের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় ও অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিতে হবে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। প্লাস্টিক বর্জ্য হতে রি-সাইক্লিং করে প্লাস্টিক দানা উৎপাদন পরিবেশবান্ধব, এর মূসক অব্যাহতি দেয়ায় বর্তমান সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারীতে নিম্ন আয়ের দরিদ্র ও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ব্যবহার্য প্লাস্টিকের থালা বাসন, জগ মগ, বাটি, গ্লাস, সবজি ধোয়ার ব্যবহার্য জালি, গামলা, বালতি, খাবার ঢাকার ঢাকনি, ঝুড়ি, বদনা, সাবান দানি, মসলার ট্রে, পিঁড়ি বা টুল, ময়লার ঝুড়ি, হাতপাখা হতে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়নি। ভ্যাট দিয়ে বর্তমানে এ সমস্ত পণ্য অতি দরিদ্র তৃণমূলের মানুষ ক্রয় করতে পারবেন না। কাজেই টিফিন ক্যারিয়ার ও পানির বোতলের ন্যায় উল্লিখিত পণ্য হতে মূসক অব্যাহতির জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

মূসক আইনের ধারা ২(৪৮) এবং ১০(১) এ মূসক অব্যাহতির বিধান চালু থাকা এবং টার্নওভার করের সুবিধা বহাল রাখায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের সাধারণ আদেশ ১৭/মূসক/২০১৯ তাং ১৭/০৭/১৯ইং-এর মাধ্যমে প্লাস্টিক সেক্টরের সব উৎপাদিত পণ্যকে টার্নওভার নির্বিশেষে ভ্যাটের আওতায় নিবন্ধিত করার বিধান চালু করেছেন। ফলে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প ভ্যাট দিয়ে কারখানা চালু রাখা সম্ভব হবে না। ভ্যাট আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এনবিআরের ওই সাধারণ আদেশ বাতিল করার অনুরোধ জানাচ্ছি। করোনা মহামারীর মধ্যে শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ঋণ/বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে, সেজন্য আমরা সদাশয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তবে বাজেটে ঘোষিত প্রণোদনা ও অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা প্রদান প্রক্রিয়া বাস্তবভিত্তিক, সহজ এবং সরল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, সমিতি, চেম্বার, এফবিসিসিআই-এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ কমিটির তত্ত্বাবধানে অনুদান, ঋণ এবং বিনিয়োগের মঞ্জুরি এবং অন্যান্য সহায়তা অনুমোদন প্রদান করার বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করা আবশ্যক, অন্যথায় ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি খাতের উদ্যোক্তারা এই সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হবে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করোনার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও স্থানীয় উৎপাদকদের উৎপাদন এবং সরবরাহ পর্যায়ে এক বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে যারা সার্জিক্যাল মাস্ক ও পিপিই তৈরি করবে তাদের ভ্যাট মওকুফ করা, করোনা প্রতিরোধে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম আমদানি সহজলভ্য করতে শুল্ক ছাড় দেয়া হয়েছে। ফ্রিজ এসির ওপর মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ডিটারজেন্টের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা বাড়ানো হবে। রেফ্রিজারেটর ও এসির কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা বাড়ছে। দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল ও উপকরণ আমদানি করার ক্ষেত্রে অগ্রিম করের পরিমাণ ৫ শতাংশ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ নির্ধারণ, এছাড়া অগ্রিম কর সমন্বয় করার জন্য দুই কর মেয়াদের পরিবর্তে চার কর মেয়াদে সমন্বয় করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করহার ৩৫ শতাংশ, বাজেটে এই স্তরের করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, উৎসে কর অব্যাহতি ০ দশমিক ৫ শতাংশ আগামী দুই বছরের জন্য বৃদ্ধি করা, প্লাস্টিক পণ্যে আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক আরোপ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা বাজেটের ভালো দিক।

বিপিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা করার পাশাপাশি করহার কমানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে, এতে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীরা উপকৃত হবেন। অন্যদিকে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ, একইভাবে সর্বনিম্ন করহার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা, করোনাকালীন যারা সময়মতো করের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি, তাদের দণ্ড সুদ মাফ করা ও যারা প্রথমবারের মতো অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ২ হাজার টাকা কর রেয়াত দেয়া হচ্ছে। আমরা এ সব শিল্প বাণিজ্য এবং ভোক্তাবান্ধব বাজেট প্রস্তাবনার জন্য সদাশয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। প্রস্তাবিত বাজেটে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হবে বড় জোর দুই লাখ কোটি টাকা। এ অবস্থায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নিম্নমুখী অর্থনৈতিক পরিবেশে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হয়নি বলে মনে হয়। এতে উৎপাদন খাতসহ সাধারণ ভোক্তাদের অতিরিক্ত পরোক্ষ করভার বহন করতে হবে। বাজেটে শুল্ক ও কর বিষয়ে জন প্রত্যাশা অনুযায়ী আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হলে বাজেট আরও কল্যাণকর হবে বলে আমরা মনে করছি।