আগাম বন্যার আশঙ্কা এখনি প্রস্তুতি নিন

আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এবার দেশে দু’দফা আগাম বন্যা দেখা দিতে পারে। তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষের দিকে এক দফা এবং আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আরেক দফা বন্যা হতে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি মাসের শেষে বন্যা হওয়ার কথা থাকলেও দেশের কোন কোন অঞ্চলে ইতোমধ্যে আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আগাম বন্যার খবরটি উদ্বেগজনক। সাধারণত শ্রাবণ ও ভাদ্রের পূর্ণিমার আগে দেশে বন্যা দেখা দেয়। আষাঢ় সবে শুরু হয়েছে। অথচ এখনি বন্যা চোখ রাঙাচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে আগাম বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যমুনা নদীতে এখনই যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তা ১৯৮৮ সালের পর আর দেখা যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর সমতলে ৯০টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৯টি স্টেশনে পানি বেড়েছে। এবার বর্ষা মৌসুমে বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। উজানে আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়েও বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষার সঙ্গে পাহাড়ি ঢল যোগ হলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

মাত্রই কিছুদিন আগে সুপার সাইক্লোন আম্ফান দেশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। আশঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশে এর প্রভাব কম হলেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবেও দেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আগাম বন্যা দেখা দিলে দেশের বিপদ আরও বাড়বে। আগাম প্রস্তুতি নেয়া হলে হয়তো ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যেতে পারে। যেসব এলাকার মানুষ আগাম বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের যথাসময়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে। গবাদি পশু ও ফসল রক্ষায় এখনি উদ্যোগ নেয়া জরুরি। ভাঙনপ্রবণ এলাকায় নদী সংরক্ষণ করতে হবে জরুরিভিত্তিতে। যেখানে যেখানে বাঁধ সংস্কার করা দরকার সেখানে দ্রুত সংস্কার করতে হবে। বন্যার সময় ও পরবর্তীতে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে হবে। নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বন্যাজনিত অসুখ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট জনসাধারণের কাছে প্রয়োজনীয় পথ্য পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। গবাদিপশু রক্ষায় গোখাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

বিরূপ পরিবেশের কারণে অতিবৃষ্টি, আগাম বন্যার মতো দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে। বনায়ন বৃদ্ধি ও নানাবিধ দূষণ হ্রাস করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের নদ-নদী, খাল-নালা নিয়মিত খনন করতে হবে। বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মনিটর করা জরুরি।

সোমবার, ১৫ জুন ২০২০ , ১ আষাঢ় ১৪২৭, ২২ শাওয়াল ১৪৪১

আগাম বন্যার আশঙ্কা এখনি প্রস্তুতি নিন

আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এবার দেশে দু’দফা আগাম বন্যা দেখা দিতে পারে। তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষের দিকে এক দফা এবং আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আরেক দফা বন্যা হতে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি মাসের শেষে বন্যা হওয়ার কথা থাকলেও দেশের কোন কোন অঞ্চলে ইতোমধ্যে আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আগাম বন্যার খবরটি উদ্বেগজনক। সাধারণত শ্রাবণ ও ভাদ্রের পূর্ণিমার আগে দেশে বন্যা দেখা দেয়। আষাঢ় সবে শুরু হয়েছে। অথচ এখনি বন্যা চোখ রাঙাচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে আগাম বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যমুনা নদীতে এখনই যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তা ১৯৮৮ সালের পর আর দেখা যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর সমতলে ৯০টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৪৯টি স্টেশনে পানি বেড়েছে। এবার বর্ষা মৌসুমে বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। উজানে আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়েও বৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষার সঙ্গে পাহাড়ি ঢল যোগ হলে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

মাত্রই কিছুদিন আগে সুপার সাইক্লোন আম্ফান দেশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। আশঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশে এর প্রভাব কম হলেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবেও দেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন আগাম বন্যা দেখা দিলে দেশের বিপদ আরও বাড়বে। আগাম প্রস্তুতি নেয়া হলে হয়তো ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যেতে পারে। যেসব এলাকার মানুষ আগাম বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদের যথাসময়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে। গবাদি পশু ও ফসল রক্ষায় এখনি উদ্যোগ নেয়া জরুরি। ভাঙনপ্রবণ এলাকায় নদী সংরক্ষণ করতে হবে জরুরিভিত্তিতে। যেখানে যেখানে বাঁধ সংস্কার করা দরকার সেখানে দ্রুত সংস্কার করতে হবে। বন্যার সময় ও পরবর্তীতে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে হবে। নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বন্যাজনিত অসুখ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট জনসাধারণের কাছে প্রয়োজনীয় পথ্য পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। গবাদিপশু রক্ষায় গোখাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

বিরূপ পরিবেশের কারণে অতিবৃষ্টি, আগাম বন্যার মতো দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে। বনায়ন বৃদ্ধি ও নানাবিধ দূষণ হ্রাস করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের নদ-নদী, খাল-নালা নিয়মিত খনন করতে হবে। বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মনিটর করা জরুরি।