করোনাভীতি জয় করে আউশ আবাদে ব্যস্ত অদম্য কৃষক

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলাটি উত্তর-পশ্চিমে ভারত সীমান্ত ঘেষা একটি উপজেলা। অতি প্রাচীনকাল হতে এটি নওগাঁর শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। এই উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষক ধান চাষই হচ্ছে এখানকার মানুষের প্রধান ফসল। তাই একটি ফসল উঠতে না উঠতেই আরও একটির ফসলের প্রস্তুতি নেই এই এলাকার কৃষকরা। দম ফেলার সময় নেই তাদের নেই তাদের করোনা ভয়। করোনাভাইরাস মহামারীতে সবাই যখন ঘরবন্দী তখনও কৃষকেরা মৃত্যুকে উপেক্ষা করে ঘরের বাহিরে মাঠে ময়দানে অন্যের খাবার উৎপাদনে ব্যস্ত। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে বেশকিছু এলাকায় আউশ ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকেরা। জমিতে পানি সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ করছেন কৃষকরা। উপজেলা মাঠজুড়ে কৃষিজমিতে চলছে এখন আউশ ধানের চাষাবাদ। বীজ রোপণের জন্য উপযোগী করে জমি তৈরি ও বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, চারা গাছ রোপণসহ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় নানা কাজ চলছে জমিতে। উপজেলার মাঠে মাঠে চোখে পড়ছে এমন দৃশ্য। করোনার সঙ্কটকালে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার আউশ চাষিরা। করোনার প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সঙ্কটের কারণে ঘরের নারী পুরুষ একত্রে যোগ দিয়েছেন কৃষিকাজে। কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আউশ ধান চাষের জন্য তৈরি হওয়া জমিতে দ্রুত চলছে চারা রোপণের কাজ। তাদের প্রত্যাশা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আউশের বাম্পার ফলন পাবে। আবার অনেক কৃষক প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই রোপণের কাজ শেষ করেছেন। তবে সকল চাষিই ভালো ফলনের আশায় ফসলের যত্নে নিতে ক্ষেতের জমিতে সময় দিচ্ছেন। লাগানো চারা ধানগুলোর নানাভাবে পরিচর্যা করছেন। কৃষকেরা আরও জানান, তারা ভাল ফলনের আশায় পারিজা, বিআর-০৩, ৪৮ ও ৫১ জাতের ধান সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদ করছেন।

গত ইরি বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ভাল হয়েছে বাজারে দাম ছিল ভাল তাই আউশ চাষেও নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এলাকার কৃষকেরা । তবে এবার বোরোতে করোনাভাইরাস এবং আম্ফানের প্রভাবে কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা শ্রমিক শঙ্কটে ধান কাটতে বিলম্ব হয়েছে তাদের ভালই ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কয়েকজন কৃষক । সব ক্ষতি পোশাতেই আবারও কোমর বেধে নেমেছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শ্রী প্রকাশ চন্দ্রর সরকার জানান, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মাঠকর্মীদের মাধ্যমে চলতি মৌসুমে আউশ ধান আবাদ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ উপজেলার কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে কেউ কেউ জমিতে চারা রোপণ করছে। আবার কারও কারও জমিতে আরও একমাস আগে চারা রোপণ করা হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে এ বছরও লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ হবে বলে আশা করছি।

image

বদলগাছী (নওগাঁ) : করোনা ভয় উপেক্ষা করে ধান রোপণে ব্যস্ত সাহসী আদীবাসী নারীরা -সংবাদ

আরও খবর
১১ জেলায় নতুন শনাক্ত ২৫৪
তিন জেলায় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় জরিমানা
২ জেলায় কর্মহীনদের অর্থ-খাদ্য বিতরণ

মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ , ২ আষাঢ় ১৪২৭, ২৩ শাওয়াল ১৪৪

করোনাভীতি জয় করে আউশ আবাদে ব্যস্ত অদম্য কৃষক

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

image

বদলগাছী (নওগাঁ) : করোনা ভয় উপেক্ষা করে ধান রোপণে ব্যস্ত সাহসী আদীবাসী নারীরা -সংবাদ

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলাটি উত্তর-পশ্চিমে ভারত সীমান্ত ঘেষা একটি উপজেলা। অতি প্রাচীনকাল হতে এটি নওগাঁর শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। এই উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষক ধান চাষই হচ্ছে এখানকার মানুষের প্রধান ফসল। তাই একটি ফসল উঠতে না উঠতেই আরও একটির ফসলের প্রস্তুতি নেই এই এলাকার কৃষকরা। দম ফেলার সময় নেই তাদের নেই তাদের করোনা ভয়। করোনাভাইরাস মহামারীতে সবাই যখন ঘরবন্দী তখনও কৃষকেরা মৃত্যুকে উপেক্ষা করে ঘরের বাহিরে মাঠে ময়দানে অন্যের খাবার উৎপাদনে ব্যস্ত। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে বেশকিছু এলাকায় আউশ ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকেরা। জমিতে পানি সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ করছেন কৃষকরা। উপজেলা মাঠজুড়ে কৃষিজমিতে চলছে এখন আউশ ধানের চাষাবাদ। বীজ রোপণের জন্য উপযোগী করে জমি তৈরি ও বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, চারা গাছ রোপণসহ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় নানা কাজ চলছে জমিতে। উপজেলার মাঠে মাঠে চোখে পড়ছে এমন দৃশ্য। করোনার সঙ্কটকালে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার আউশ চাষিরা। করোনার প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সঙ্কটের কারণে ঘরের নারী পুরুষ একত্রে যোগ দিয়েছেন কৃষিকাজে। কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আউশ ধান চাষের জন্য তৈরি হওয়া জমিতে দ্রুত চলছে চারা রোপণের কাজ। তাদের প্রত্যাশা আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আউশের বাম্পার ফলন পাবে। আবার অনেক কৃষক প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই রোপণের কাজ শেষ করেছেন। তবে সকল চাষিই ভালো ফলনের আশায় ফসলের যত্নে নিতে ক্ষেতের জমিতে সময় দিচ্ছেন। লাগানো চারা ধানগুলোর নানাভাবে পরিচর্যা করছেন। কৃষকেরা আরও জানান, তারা ভাল ফলনের আশায় পারিজা, বিআর-০৩, ৪৮ ও ৫১ জাতের ধান সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদ করছেন।

গত ইরি বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ভাল হয়েছে বাজারে দাম ছিল ভাল তাই আউশ চাষেও নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এলাকার কৃষকেরা । তবে এবার বোরোতে করোনাভাইরাস এবং আম্ফানের প্রভাবে কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা শ্রমিক শঙ্কটে ধান কাটতে বিলম্ব হয়েছে তাদের ভালই ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কয়েকজন কৃষক । সব ক্ষতি পোশাতেই আবারও কোমর বেধে নেমেছে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শ্রী প্রকাশ চন্দ্রর সরকার জানান, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মাঠকর্মীদের মাধ্যমে চলতি মৌসুমে আউশ ধান আবাদ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ উপজেলার কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে কেউ কেউ জমিতে চারা রোপণ করছে। আবার কারও কারও জমিতে আরও একমাস আগে চারা রোপণ করা হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে এ বছরও লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ হবে বলে আশা করছি।