শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন একটি সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এ করপোরেশনের অধীনে ১৫টি চিনিকল ও একটি যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা (রেনউইক অ্যান্ড যজ্ঞেশ্বর) রয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের চিনিকল গুলোই একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। আখ চাষ ও চিনি শিল্পের সঙ্গে দেশের প্রায় ৫ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা জড়িত।
এ করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ২৭০০ জন শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা ২০১৬ সাল থেকে তাদের প্রাপ্য গ্র্যাচুইটির প্রায় ২০০ কোটি টাকা না পাওয়ায় অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, টাকার অভাবে অনেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন না। চিকিৎসার অভাবে অনেকেই ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন এবং মারা যাওয়ার উপক্রম দেখা দিচ্ছে। টাকার অভাবে সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিবাহযোগ্য ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাসাভাড়া দিতে না পারায় সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। যেখানে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে সেখানে আমরা দিন দিন অসহায়বোধ করছি। বৈষম্যের এ জাঁতাকলে আমরা যেন হারিয়ে যাচ্ছি। অথচ আমাদের ন্যায্য পাওনাদি পরিশোধ করলে আমরাও উন্নয়নের অংশীদার হতে পারতাম। আজ অংশীদার হওয়া তো দূরের কথা আস্তে আস্তে আমরা এক এক করে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছাচ্ছি।
বিশ্বজুড়ে এখন করোনা ভাইরাসের করাল থাবা। একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ জীবনের এ পর্যায়ে পৌঁছাতে গিয়ে দেহে অনেক রোগ বাসা বাঁধে এবং এটাই স্বাভাবিক। যার কারণে দেহের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গিয়ে অ্যান্টিবডি বা যোদ্ধা সেল তৈরি করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বলেই বয়োবৃদ্ধদের ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। গ্র্যাচুইটির টাকা পেলে এসব বয়োবৃদ্ধরা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়িয়ে টিকে থাকার লড়াইটা অন্তত চালিয়ে যেতে পারতো।
আমরা তো কোন ভাতা কিংবা অনুদান চাচ্ছি না, কারও দয়া-দাক্ষিণ্য কামনা করছি না, আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য পাওনা চাচ্ছি। তা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি কেন? এ কোন পাপের ফল আমরা ভোগ করছি?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়োবৃদ্ধের একটু বেশি অসুখ বিসুখ হয় এবং এটাই স্বাভাবিক। এসব বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সকল সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেডিকেল ভাতা প্রদান করেছেন। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য ঈদ বোনাস ও বৈশাখি ভাতা প্রদানেরও নির্দেশ জারি করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে শিল্প মন্ত্রনালয় থেকে গত ২৮/০৫/২০১৯ খ্রিঃ তারিখে সুত্র নং ৩৬.০০.০০০০.০৬৪.২৮.০০৮.১১.১১৮ এর মাধ্যমে উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা এবং বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনকে অনুরোধ জানানোর পরও আমরা উল্লেখিত ভাতা পাচ্ছি না।
কৃষিবিদ একেএম সামিউল হাসান ভূঞা
অবসরপ্রাপ্ত চিফ (এমআইএস)
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন
মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ , ২ আষাঢ় ১৪২৭, ২৩ শাওয়াল ১৪৪
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন একটি সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এ করপোরেশনের অধীনে ১৫টি চিনিকল ও একটি যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা (রেনউইক অ্যান্ড যজ্ঞেশ্বর) রয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের চিনিকল গুলোই একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। আখ চাষ ও চিনি শিল্পের সঙ্গে দেশের প্রায় ৫ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা জড়িত।
এ করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ২৭০০ জন শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা ২০১৬ সাল থেকে তাদের প্রাপ্য গ্র্যাচুইটির প্রায় ২০০ কোটি টাকা না পাওয়ায় অর্থের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, টাকার অভাবে অনেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছেন না। চিকিৎসার অভাবে অনেকেই ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন এবং মারা যাওয়ার উপক্রম দেখা দিচ্ছে। টাকার অভাবে সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিবাহযোগ্য ছেলে মেয়েদের বিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাসাভাড়া দিতে না পারায় সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। যেখানে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে সেখানে আমরা দিন দিন অসহায়বোধ করছি। বৈষম্যের এ জাঁতাকলে আমরা যেন হারিয়ে যাচ্ছি। অথচ আমাদের ন্যায্য পাওনাদি পরিশোধ করলে আমরাও উন্নয়নের অংশীদার হতে পারতাম। আজ অংশীদার হওয়া তো দূরের কথা আস্তে আস্তে আমরা এক এক করে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছাচ্ছি।
বিশ্বজুড়ে এখন করোনা ভাইরাসের করাল থাবা। একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষ জীবনের এ পর্যায়ে পৌঁছাতে গিয়ে দেহে অনেক রোগ বাসা বাঁধে এবং এটাই স্বাভাবিক। যার কারণে দেহের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে গিয়ে অ্যান্টিবডি বা যোদ্ধা সেল তৈরি করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বলেই বয়োবৃদ্ধদের ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। গ্র্যাচুইটির টাকা পেলে এসব বয়োবৃদ্ধরা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়িয়ে টিকে থাকার লড়াইটা অন্তত চালিয়ে যেতে পারতো।
আমরা তো কোন ভাতা কিংবা অনুদান চাচ্ছি না, কারও দয়া-দাক্ষিণ্য কামনা করছি না, আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য পাওনা চাচ্ছি। তা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি কেন? এ কোন পাপের ফল আমরা ভোগ করছি?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়োবৃদ্ধের একটু বেশি অসুখ বিসুখ হয় এবং এটাই স্বাভাবিক। এসব বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্তদের জন্য সকল সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেডিকেল ভাতা প্রদান করেছেন। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য ঈদ বোনাস ও বৈশাখি ভাতা প্রদানেরও নির্দেশ জারি করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে শিল্প মন্ত্রনালয় থেকে গত ২৮/০৫/২০১৯ খ্রিঃ তারিখে সুত্র নং ৩৬.০০.০০০০.০৬৪.২৮.০০৮.১১.১১৮ এর মাধ্যমে উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা এবং বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনকে অনুরোধ জানানোর পরও আমরা উল্লেখিত ভাতা পাচ্ছি না।
কৃষিবিদ একেএম সামিউল হাসান ভূঞা
অবসরপ্রাপ্ত চিফ (এমআইএস)
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন