পাহাড় ধসের আশঙ্কা সচেতনতায় মাইকিং

খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দিনভর বৃষ্টিতে নেমে এসেছে ভোগান্তি। সকাল থেকেই অবিরাম বৃষ্টির কারণে নেমে এসেছে জনদুর্ভোগ। এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।এ অবস্থায় পাহাড়ের বাসিন্দারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। সকাল থেকে শুরু হওয়া ওই বৃষ্টির জেরে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মূল সড়কগুলোতে কিছু গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেলেও অলিগলির সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে এসে অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। অন্যদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, সপ্তাহজুড়ে এমন বৃষ্টির শাসন বাড়িয়ে দেবে জ্বর, সর্দি, কাশি। তাই করোনাকালে এই উপসর্গ এড়াতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে একের পর এক বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারী লোকজনকে এখনই সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, অতি বৃষ্টির ফলে নগরীর কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মহানগরীতে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, অক্সিজনসহ বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের আকাশের এমন গম্ভীরতা সড়কে বাড়িয়েছে পথচারীর ভোগান্তি। নি¤œ আয়ের লোকজন বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই ‘লক’ হয়ে গেছে জীবিকার চাকা। সেই সঙ্গে এমন বৃষ্টি নতুন অভিশাপ! রিকশাচালক মঞ্জু বলেন, ‘করোনার’ কারণে যাত্রী কম। ইনকাম নাই। যা একটু হতো, এখন আবার বৃষ্টি!।

অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের এক বার্তায় চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের ওই বার্তায় জানানো হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং সমুদ্রবন্দরের ওপরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের আকাশে ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যহত থাকতে পারে। তিনি জানান, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ভারি বর্ষণ হতে পারে আগামী ১সপ্তাহের মধ্যে। আর বৃষ্টির কবলে পড়ে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে বাস করা এসব লোকজনের জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় চালু করা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রীও। গতকাল সকাল থেকে নগরের সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজনকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম শুরু হয়।

এসব লোকজনকে সরিয়ে নিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সরকারি সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড়গুলোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অধিদফতর থেকে ভারি বর্ষণের আভাস পেয়ে সকাল থেকেই নগরের ৬টি সার্কেলের অধীনে থাকা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণদের সরাতে মাইকিং করা হচ্ছে।

আরও খবর
ধান-চাল কেনায় অনিয়ম করলে ব্যবস্থা : খাদ্যমন্ত্রী
ভিসা অন-অ্যারাইভাল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত
খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে কৃষিমন্ত্রী
জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি অপপ্রচারে ব্যস্ত কাদের
নির্মূল কমিটির তিন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত
২৫৯ বাংলাদেশি বিশেষ ফ্লাইটে ইতালি গেলেন
দাম কম, বিক্রি নিয়ে বিপাকে পাহাড়ের কৃষকরা
তালিকায় ইউপি চেয়ারম্যানের ৫১ আত্মীয়র নাম
রংপুরে ট্রাকসহ ব্রিজ ধসে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ
৭১ শতাংশ হাসপাতালে করোনা সুরক্ষা নেই রিজভী
ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ সদস্য বরখাস্ত
আ’লীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ : পাল্টাপাল্টি মামলা
শত কোটি টাকার পাথর নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
লকডাউন ঘোষণার আগেই ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ , ৪ আষাঢ় ১৪২৭, ২৫ শাওয়াল ১৪৪১

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে

পাহাড় ধসের আশঙ্কা সচেতনতায় মাইকিং

খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দিনভর বৃষ্টিতে নেমে এসেছে ভোগান্তি। সকাল থেকেই অবিরাম বৃষ্টির কারণে নেমে এসেছে জনদুর্ভোগ। এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।এ অবস্থায় পাহাড়ের বাসিন্দারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। সকাল থেকে শুরু হওয়া ওই বৃষ্টির জেরে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মূল সড়কগুলোতে কিছু গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেলেও অলিগলির সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে এসে অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। অন্যদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, সপ্তাহজুড়ে এমন বৃষ্টির শাসন বাড়িয়ে দেবে জ্বর, সর্দি, কাশি। তাই করোনাকালে এই উপসর্গ এড়াতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে একের পর এক বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারী লোকজনকে এখনই সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে, অতি বৃষ্টির ফলে নগরীর কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মহানগরীতে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, অক্সিজনসহ বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের আকাশের এমন গম্ভীরতা সড়কে বাড়িয়েছে পথচারীর ভোগান্তি। নি¤œ আয়ের লোকজন বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই ‘লক’ হয়ে গেছে জীবিকার চাকা। সেই সঙ্গে এমন বৃষ্টি নতুন অভিশাপ! রিকশাচালক মঞ্জু বলেন, ‘করোনার’ কারণে যাত্রী কম। ইনকাম নাই। যা একটু হতো, এখন আবার বৃষ্টি!।

অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের এক বার্তায় চট্টগ্রামসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের ওই বার্তায় জানানো হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং সমুদ্রবন্দরের ওপরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তকতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের আকাশে ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা অব্যহত থাকতে পারে। তিনি জানান, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে ভারি বর্ষণ হতে পারে আগামী ১সপ্তাহের মধ্যে। আর বৃষ্টির কবলে পড়ে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে ‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে বাস করা এসব লোকজনের জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় চালু করা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রীও। গতকাল সকাল থেকে নগরের সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৭টি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজনকে সচেতন করতে মাইকিং কার্যক্রম শুরু হয়।

এসব লোকজনকে সরিয়ে নিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সরকারি সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড়গুলোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অধিদফতর থেকে ভারি বর্ষণের আভাস পেয়ে সকাল থেকেই নগরের ৬টি সার্কেলের অধীনে থাকা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণদের সরাতে মাইকিং করা হচ্ছে।