দুর্নীতিতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে দুদক চেয়ারম্যান

মাস্ক বা পিপিইর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ক্রয় দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। ‘মাস্ক বা পিপিইর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এসব সুরক্ষা সামগ্রীর ক্রয় দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে এক বার্তায় এসব কথা বলেছেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক সামগ্রী ক্রয় দুর্নীতির হোতাদের ধরতে দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে গত ১৫ জুন। গঠিত টিমের অপর সদস্যরা হলেন, উপপরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান। গত ১০ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে এক জরুরি বৈঠকে করোনাকালে এম-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা বা জাল-জালিয়াতির অভিযোগটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রথমে স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটার দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এন-৯৫ এর মোড়কে করে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় ওষুধাগার (সিএমএসডি) কর্তৃপক্ষ। সিএমএসডি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা এন-৯৫ মাস্কের কোন কার্যাদেশ জেএমআইকে দেয়নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের মাধ্যমে এন-৯৫ ব্র্যান্ডের মোড়কে সাধারণ ও নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করেছিল জেএমআই গ্রুপ। এই ঘটনায় তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। পরে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ২৫ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এন-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এরপর কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে কয়েকটি হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্ক পিপিইসহ বেশকিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী পাঠানো হয়। কিন্তু এন-৯৫ মাস্কের পরিবর্তে নকল এন-৯৫ মাস্ক পাঠানো নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই নিম্নমানের পিপিই বিবরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চিকিৎসকরা। নকল এন-৯৫ মাস্ক ও নিম্নমানের পিপিই পাঠানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে চিঠি পাঠায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকদের অনত্র বদলি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যদিও তদন্ত কমিটি এখনও এ বিষয়ে কোন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কিনা বা তদন্তের কি অবস্থা সে বিষয়ে কেউ কিছুই জানে না।

আরও খবর
আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
সিলেট নগরীতে ১৯ ওয়ার্ড রেডজোনে
২৩টি কোরবানির পশুর হাট বসবে
দেশের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত বিএনপি নেতাদের বক্তব্য পাগলের প্রলাপ তথ্যমন্ত্রী
নমুনা পরীক্ষা চিকিৎসক-পুলিশসহ আরও ১৭৮ জন নতুন শনাক্ত
অ্যাডিস মশার উপদ্রব : আক্রান্ত ৩১৩ জন
দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত
বিমানে নতুন টিকিট সেল সেন্টার চালু
গ্রেফতার বেরোবির শিক্ষক সিরাজুম মনিরা বরখাস্ত
সরকারের দেয়া দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী প্রস্তুত সেনাপ্রধান
ইউনাইটেড হাসপাতালের ৪ কর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চৌদ্দগ্রাম এলাকায় ১২ কিলোমিটার ডাকাতদের স্বর্গরাজ্য
তিন দফতরে নতুন মহাপরিচালক

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে

দুর্নীতিতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

মাস্ক বা পিপিইর মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ক্রয় দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। ‘মাস্ক বা পিপিইর মতো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এসব সুরক্ষা সামগ্রীর ক্রয় দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে এক বার্তায় এসব কথা বলেছেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যবহৃত এন-৯৫ মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক সামগ্রী ক্রয় দুর্নীতির হোতাদের ধরতে দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে গত ১৫ জুন। গঠিত টিমের অপর সদস্যরা হলেন, উপপরিচালক নুরুল হুদা, সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও আতাউর রহমান। গত ১০ জুন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে থেকে এক জরুরি বৈঠকে করোনাকালে এম-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা বা জাল-জালিয়াতির অভিযোগটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রথমে স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটার দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এন-৯৫ এর মোড়কে করে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করে কেন্দ্রীয় ওষুধাগার (সিএমএসডি) কর্তৃপক্ষ। সিএমএসডি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, তারা এন-৯৫ মাস্কের কোন কার্যাদেশ জেএমআইকে দেয়নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের মাধ্যমে এন-৯৫ ব্র্যান্ডের মোড়কে সাধারণ ও নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করেছিল জেএমআই গ্রুপ। এই ঘটনায় তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। পরে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ২৫ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এন-৯৫ মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এরপর কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে কয়েকটি হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্ক পিপিইসহ বেশকিছু স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী পাঠানো হয়। কিন্তু এন-৯৫ মাস্কের পরিবর্তে নকল এন-৯৫ মাস্ক পাঠানো নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই নিম্নমানের পিপিই বিবরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চিকিৎসকরা। নকল এন-৯৫ মাস্ক ও নিম্নমানের পিপিই পাঠানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে চিঠি পাঠায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকদের অনত্র বদলি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যদিও তদন্ত কমিটি এখনও এ বিষয়ে কোন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কিনা বা তদন্তের কি অবস্থা সে বিষয়ে কেউ কিছুই জানে না।