রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের শীর্ষ চার কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত চারজন হলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. হাসান মাহমুদ রাজা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদুর রহমান খান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান ও চিফ ক্লিনিক্যাল গভর্ন্যান্স ডা. আবু সাঈদ এমএম রহমান।
উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, গত ২৭ মে ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে আগুন এবং এতে পুড়ে পাঁচজন রোগী নিহতের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন ইতোমধ্যে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে যার-ই অপরাধ পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে। প্রভাবশালী বলে কাউকে রেহাই দেয়া হবে না, অপরাধ ও দায়িত্বে অবহেলা করলে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
গত ১৪ জুন আদালতেও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের কী কারণ ছিল, অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কিনা, চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের উদ্ধারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছিল, আগুন প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তা উল্লেখ ছিল। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস এবং রাজউকও পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। যেখানে গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়।
গত ২৭ মে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুনে পুড়ে পাঁচ রোগী মারা যান। তারা হলেন- মোহাম্মদ মাহবুব (৫০), মনির হোসেন (৭৫), ভেরন অ্যান্থনি পল (৭৪), খোদেজা বেগম (৭০) ও রিয়াজ উল আলম (৫০)। গত ৩ জুন আগুনে মারা যাওয়া ভেরন অ্যান্থনি পলের মেয়ের জামাই রোনাল্ড নিকি গোমেজ বাদী হয়ে গুলশান থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এতে ইউনাইটেড হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা ও দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের আাসামি করা হয়। ঘটনার ২০ দিন পরও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মামলার তদন্ত চলছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ঠিক। কিন্তু মামলার আসামিদের দেশত্যাগ করতে দেয়া হচ্ছে না। এখন মামলার তদন্ত হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলার দুই সপ্তাহ পরেও পুলিশ কোন অগ্রগতির খবর না দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করে রোনাল্ড মিকি গোমেজ বলেন, মানসিকভাবে আমরা সবাই ভেঙে পড়েছি। আমার চোখের সামনেই সব ঘটনা ঘটল। শ্বশুর যে বেডে ছিল সেই বেড মুভ করা যায়, কিন্তু আগুন লাগার পর কেউ আমাকেও সহযোগিতা করল না আর মুভ করা বেডগুলো কেউ টেনে বের করার চেষ্টাও করলো না। কী বলব খুবই দুঃখজনক, হতাশাজনক ঘটনা! ইউনিটের এসিতে প্রথমে সামান্য আগুন লাগলে সবাইকে বললাম অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আনতে। কিন্তু ওয়ার্ড বয় বলল, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নাই। সে দৌড়ে গিয়ে আনল ফ্লোর মোছার মপ, যা দিয়ে চেষ্টা করতে গিয়ে আগুন আরও বেড়ে গেল।
শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের শীর্ষ চার কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত চারজন হলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. হাসান মাহমুদ রাজা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদুর রহমান খান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান ও চিফ ক্লিনিক্যাল গভর্ন্যান্স ডা. আবু সাঈদ এমএম রহমান।
উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, গত ২৭ মে ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে আগুন এবং এতে পুড়ে পাঁচজন রোগী নিহতের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন ইতোমধ্যে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে যার-ই অপরাধ পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে। প্রভাবশালী বলে কাউকে রেহাই দেয়া হবে না, অপরাধ ও দায়িত্বে অবহেলা করলে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
গত ১৪ জুন আদালতেও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের কী কারণ ছিল, অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কিনা, চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের উদ্ধারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছিল, আগুন প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তা উল্লেখ ছিল। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস এবং রাজউকও পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। যেখানে গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়।
গত ২৭ মে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুনে পুড়ে পাঁচ রোগী মারা যান। তারা হলেন- মোহাম্মদ মাহবুব (৫০), মনির হোসেন (৭৫), ভেরন অ্যান্থনি পল (৭৪), খোদেজা বেগম (৭০) ও রিয়াজ উল আলম (৫০)। গত ৩ জুন আগুনে মারা যাওয়া ভেরন অ্যান্থনি পলের মেয়ের জামাই রোনাল্ড নিকি গোমেজ বাদী হয়ে গুলশান থানায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এতে ইউনাইটেড হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তা ও দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের আাসামি করা হয়। ঘটনার ২০ দিন পরও কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মামলার তদন্ত চলছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ঠিক। কিন্তু মামলার আসামিদের দেশত্যাগ করতে দেয়া হচ্ছে না। এখন মামলার তদন্ত হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলার দুই সপ্তাহ পরেও পুলিশ কোন অগ্রগতির খবর না দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করে রোনাল্ড মিকি গোমেজ বলেন, মানসিকভাবে আমরা সবাই ভেঙে পড়েছি। আমার চোখের সামনেই সব ঘটনা ঘটল। শ্বশুর যে বেডে ছিল সেই বেড মুভ করা যায়, কিন্তু আগুন লাগার পর কেউ আমাকেও সহযোগিতা করল না আর মুভ করা বেডগুলো কেউ টেনে বের করার চেষ্টাও করলো না। কী বলব খুবই দুঃখজনক, হতাশাজনক ঘটনা! ইউনিটের এসিতে প্রথমে সামান্য আগুন লাগলে সবাইকে বললাম অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আনতে। কিন্তু ওয়ার্ড বয় বলল, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নাই। সে দৌড়ে গিয়ে আনল ফ্লোর মোছার মপ, যা দিয়ে চেষ্টা করতে গিয়ে আগুন আরও বেড়ে গেল।