চাল সংগ্রহে প্রণোদনার দাবি অযৌক্তিক

গুদামে গত ৩ মাসে চালের মজুদ প্রায় পাঁচ লাখ টন কমেছে। অন্যদিকে এ সময়ে সরকারের গুদামে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র দেড় লাখ টন ধান-চাল। এতদিন সংগ্রহ ধীরগতিতে এগোলেও দুই সপ্তাহ ধরে তা প্রায় থমকে গেছে। চালকল মালিকরা সরকারি গুদামে ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর এবার তারা নতুন গোঁ ধরেছেন। প্রতি কেজি চালে আরও ৪ টাকা প্রণোদনা না দিলে তারা সরকারি গুদামে আর চাল দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

চালকল মালিকদের উল্লিখিত দাবি অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। চাল সংগ্রহ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেনি যে চাল সংগ্রহের জন্য কল মালিকদের প্রণোদনা দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর গত মে মাসে প্রকাশিত বাংলাদেশে দানাদার খাদ্য পরিস্থিতি শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এবার রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৬১ লাখ টন চাল উৎপাদিত হবে। অর্থাৎ চালের এমন কোন সংকট নেই যে, চাল সংগ্রহের জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। বস্তুত চালকল মালিকরা করোনার দুর্যোগকে কাজে লাগিয়ে প্রণোদনার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। চাল সংগ্রহের ধীরগতি যে মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা সেটাও না বোঝার কিছু নেই। সরকারকে এ ব্যাপারে সজাগ হতে হবে। চালকল মালিকদের অযৌক্তিক দাবিকে অগ্রাহ্য করে সাধারণ মানুষের স্বার্থে চাল সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে হবে।

কোনভাবেই এই মুহূর্তে চালের সংগ্রহ মূল্য বাড়ানো ঠিক হবে না। এখন দাম বাড়ালে কৃষক তো লাভবান হবেনই না, অন্যদিকে সরকারও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার বাজারেও চালের দাম বেড়ে যেতে পারে। করোনার কারণে একটি সংকটময় অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। চালকল মালিকেরা এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অতি মুনাফা করতে পারে। সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর প্রস্তুতি নেয়া দরকার। সরকারের উচিত হবে, দরপত্রের মাধ্যমে দ্রুত চাল কিনে গুদামে সংগ্রহ বাড়ানো। যেসব চালকল মালিক নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চাল দেবে না বা চুক্তির বরখেলাপ করবে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করতে হবে। তাদের ব্যবসায়িক অনুমোদন বাতিল করতে হবে।

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

চাল সংগ্রহে প্রণোদনার দাবি অযৌক্তিক

গুদামে গত ৩ মাসে চালের মজুদ প্রায় পাঁচ লাখ টন কমেছে। অন্যদিকে এ সময়ে সরকারের গুদামে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র দেড় লাখ টন ধান-চাল। এতদিন সংগ্রহ ধীরগতিতে এগোলেও দুই সপ্তাহ ধরে তা প্রায় থমকে গেছে। চালকল মালিকরা সরকারি গুদামে ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর এবার তারা নতুন গোঁ ধরেছেন। প্রতি কেজি চালে আরও ৪ টাকা প্রণোদনা না দিলে তারা সরকারি গুদামে আর চাল দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।

চালকল মালিকদের উল্লিখিত দাবি অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য। চাল সংগ্রহ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেনি যে চাল সংগ্রহের জন্য কল মালিকদের প্রণোদনা দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর গত মে মাসে প্রকাশিত বাংলাদেশে দানাদার খাদ্য পরিস্থিতি শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এবার রেকর্ড পরিমাণ ৩ কোটি ৬১ লাখ টন চাল উৎপাদিত হবে। অর্থাৎ চালের এমন কোন সংকট নেই যে, চাল সংগ্রহের জন্য প্রণোদনা দিতে হবে। বস্তুত চালকল মালিকরা করোনার দুর্যোগকে কাজে লাগিয়ে প্রণোদনার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। চাল সংগ্রহের ধীরগতি যে মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা সেটাও না বোঝার কিছু নেই। সরকারকে এ ব্যাপারে সজাগ হতে হবে। চালকল মালিকদের অযৌক্তিক দাবিকে অগ্রাহ্য করে সাধারণ মানুষের স্বার্থে চাল সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে হবে।

কোনভাবেই এই মুহূর্তে চালের সংগ্রহ মূল্য বাড়ানো ঠিক হবে না। এখন দাম বাড়ালে কৃষক তো লাভবান হবেনই না, অন্যদিকে সরকারও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার বাজারেও চালের দাম বেড়ে যেতে পারে। করোনার কারণে একটি সংকটময় অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। চালকল মালিকেরা এ ধরনের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অতি মুনাফা করতে পারে। সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর প্রস্তুতি নেয়া দরকার। সরকারের উচিত হবে, দরপত্রের মাধ্যমে দ্রুত চাল কিনে গুদামে সংগ্রহ বাড়ানো। যেসব চালকল মালিক নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চাল দেবে না বা চুক্তির বরখেলাপ করবে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করতে হবে। তাদের ব্যবসায়িক অনুমোদন বাতিল করতে হবে।