বেইজিংয়ের মাংস-সামুদ্রিক খাবারের বাজারে ভয়াবহ মাত্রায় করোনা

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের একটি পাইকারি খাদ্য বাজারের মাংস ও সামুদ্রিক খাবারে ভয়াবহ মাত্রায় নতুন করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এলাকাটিতে কম তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বেশি হওয়াই করোনাভাইরাসের মাত্রা বাড়ার কারণ বলে বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেইজিংয়ে প্রায় ৫ মাস পর (গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে) ১১ জুনে আবার নতুন করে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বেইজিংয়ে বৃহত্তম সিনফাদি বাজার থেকে গত সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টার মধ্যেই খাবারে ভাইরাসটির মারাত্মক উপস্থিতি ধরা পড়ার প্রাথমিক এ প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দিলেন কর্মকর্তারা। বেইজিংয়ের ৮০ শতাংশ সবজি ও মাংস সরবরাহ হয় সিনফাদি বাজার থেকে। বাজারটিতে খাদ্য গুদাম আছে ও সেখানে প্রতিদিন ১৫ হাজার টন সামুদ্রিক খাবার, টন টন সবজি ও ফল কেনাবেচা হয়।

সিনফাদি বাজারে কাজ করা যাদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই সামুদ্রিক খাবার এবং জলজ পণ্য কেনাবেচার কাজ করেছেন। অন্যরা মাংস কেনাবেচার কাজ করেছেন। তবে সামুদ্রিক খাবারের বাজারের কর্মীদের মধ্যে অন্যদের চাইতে সংক্রমণ ধরা পড়েছে আগে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বৃহস্পতিবারের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন চীনের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’র প্রধান উ সানিউ।

তিনি বলেন, কম তাপমাত্রা ভাইরাস টিকে থাকার জন্য অনুকূল। এছাড়াও, বেশি আর্দ্রতার কারণেও সামুদ্রিক খাবারের বাজারগুলো করোনার প্রাদুর্ভাবের উৎস হতে পারে। প্রাথমিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে এমন ধারণাই পাওয়া যাচ্ছে।

তবে বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার বলেও জানান উ। গত সপ্তাহে সিনফাদি বাজারে আমদানি করা স্যামন মাছ কাটার চপিং বোর্ডে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

ভারতে বৃহস্পতিবার ১৪ হাজার ৫২ জনের করোনা শনাক্ত

এরপরই ভাইরাসটি ছড়ানোর আশঙ্কায় চীন ইউরোপ থেকে স্যামন আমদানি বন্ধ করেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এমনকি স্যামন মাছ না খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।

চীনের পাইকারি খাবারের বাজারগুলোতে নোংরা পরিবেশ এবং সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ায় এসব স্থান ভাইরাসের উৎস হয়ে উঠছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে বাজারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা এবং মানসম্মত স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো দরকার। আগের দিন বুধবার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলেছে চীনের সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন (সিসিডিআই)।

এদিকে করোনার সার্বক্ষণিক তথ্য রাখা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের সর্বশেষ দেয়া তথ্য অনুসারে, ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া বিশ্বে মহামারী করোনায় গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। একইদিন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৮ জন।

শনিবার, ২০ জুন ২০২০ , ৬ আষাঢ় ১৪২৭, ২৭ শাওয়াল ১৪৪১

বেইজিংয়ের মাংস-সামুদ্রিক খাবারের বাজারে ভয়াবহ মাত্রায় করোনা

সংবাদ ডেস্ক |

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের একটি পাইকারি খাদ্য বাজারের মাংস ও সামুদ্রিক খাবারে ভয়াবহ মাত্রায় নতুন করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এলাকাটিতে কম তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বেশি হওয়াই করোনাভাইরাসের মাত্রা বাড়ার কারণ বলে বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বেইজিংয়ে প্রায় ৫ মাস পর (গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে) ১১ জুনে আবার নতুন করে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বেইজিংয়ে বৃহত্তম সিনফাদি বাজার থেকে গত সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টার মধ্যেই খাবারে ভাইরাসটির মারাত্মক উপস্থিতি ধরা পড়ার প্রাথমিক এ প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দিলেন কর্মকর্তারা। বেইজিংয়ের ৮০ শতাংশ সবজি ও মাংস সরবরাহ হয় সিনফাদি বাজার থেকে। বাজারটিতে খাদ্য গুদাম আছে ও সেখানে প্রতিদিন ১৫ হাজার টন সামুদ্রিক খাবার, টন টন সবজি ও ফল কেনাবেচা হয়।

সিনফাদি বাজারে কাজ করা যাদের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই সামুদ্রিক খাবার এবং জলজ পণ্য কেনাবেচার কাজ করেছেন। অন্যরা মাংস কেনাবেচার কাজ করেছেন। তবে সামুদ্রিক খাবারের বাজারের কর্মীদের মধ্যে অন্যদের চাইতে সংক্রমণ ধরা পড়েছে আগে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বৃহস্পতিবারের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন চীনের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল’র প্রধান উ সানিউ।

তিনি বলেন, কম তাপমাত্রা ভাইরাস টিকে থাকার জন্য অনুকূল। এছাড়াও, বেশি আর্দ্রতার কারণেও সামুদ্রিক খাবারের বাজারগুলো করোনার প্রাদুর্ভাবের উৎস হতে পারে। প্রাথমিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে এমন ধারণাই পাওয়া যাচ্ছে।

তবে বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার বলেও জানান উ। গত সপ্তাহে সিনফাদি বাজারে আমদানি করা স্যামন মাছ কাটার চপিং বোর্ডে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়ার কথা জানায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

ভারতে বৃহস্পতিবার ১৪ হাজার ৫২ জনের করোনা শনাক্ত

এরপরই ভাইরাসটি ছড়ানোর আশঙ্কায় চীন ইউরোপ থেকে স্যামন আমদানি বন্ধ করেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এমনকি স্যামন মাছ না খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।

চীনের পাইকারি খাবারের বাজারগুলোতে নোংরা পরিবেশ এবং সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ায় এসব স্থান ভাইরাসের উৎস হয়ে উঠছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে বাজারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা এবং মানসম্মত স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো দরকার। আগের দিন বুধবার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা বলেছে চীনের সেন্ট্রাল কমিশন ফর ডিসিপ্লিন ইন্সপেকশন (সিসিডিআই)।

এদিকে করোনার সার্বক্ষণিক তথ্য রাখা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় জনস হপকিন্সের সর্বশেষ দেয়া তথ্য অনুসারে, ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া বিশ্বে মহামারী করোনায় গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। একইদিন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ৪ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৮ জন।