জাতিসংঘ তদন্তের দাবি আফ্রিকার দেশগুলোর

আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্য স্থানে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা বর্ণবাদ ও পুলিশি ববর্রতার জাতিসংঘ তদন্তের দাবি জানিয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। এ আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে আফ্রিকার দেশগুলো। রয়টার্স।

বার্তা সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গতকাল বুধবার এ প্রস্তাবনার ওপর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে একটি জরুরি বিতর্ক অধিবেশন হওয়ার কথা। আফ্রিকার দেশগুলোর প থেকে বুরকিনা ফাসো এ বিতর্ক অধিবেশনের আহ্বান জানানোর পর পরিষদের দেশগুলো মঙ্গলবার তাতে সম্মতি জানায়।

গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ (২৫ মে) থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতনে পর পর দু’জন কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এ দুই মার্কিনির একজন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফয়েড আর অপরজন ২৭ বছরের তরুণ রাইশার্ড ব্রুকস। এই দুই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গত ২৫ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলা ব্যাপক পুলিশি বর্বরতা ও বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলনে রূপ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরক্ষায় আফ্রিকার দেশগুলোও তৎপরতা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে আফ্রিকার দেশগুলো। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো এ প্রস্তাবটি এখনো উপস্থাপন করা না হলেও জেনেভার মানবাধিকার পরিষদের সদরদফতরের কূটনীতিকদের মধ্যে ইতোমধ্যেই এর অনুলিপি (কপি) বিতরণ করা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নিপীড়নে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনি জর্জ ফয়েড হত্যার প্রোপটে আফ্রিকার দেশগুলো এমন উদ্যোগ নিয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলোর এ খসড়া প্রস্তাবনায় একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। যে কমিশন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী আফ্রিকান ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের বিরুদ্ধে চলমান বর্ণবাদী নিপীড়নসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লড়ঘন এবং আরো নানা অন্যায়, অবিচার খতিয়ে দেখবে।

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরায় সোচ্চার হয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নামা মানুষদের ওপর পুলিশের বর্বরতার ঘটনা নিয়ে প্রস্তাবনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় (ফেডারেল), অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় সরকার পর্যায়েও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশি তৎপরতা এবং বিক্ষোভকারী, পথচারী ও সংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে প্রস্তাবনায়।

যুক্তরাষ্ট্র এখন আর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদেও সদস্য নয়। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পপাতদুষ্টতার অভিযোগে দুই বছর আগেই পরিষদ ছেড়ে বেরিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফ্রিকার দেশগুলোর এ উদ্যোগের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোকেও তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শনিবার, ২০ জুন ২০২০ , ৬ আষাঢ় ১৪২৭, ২৭ শাওয়াল ১৪৪১

যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ-পুলিশি বর্বরতা

জাতিসংঘ তদন্তের দাবি আফ্রিকার দেশগুলোর

সংবাদ ডেস্ক |

আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্য স্থানে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা বর্ণবাদ ও পুলিশি ববর্রতার জাতিসংঘ তদন্তের দাবি জানিয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। এ আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে আফ্রিকার দেশগুলো। রয়টার্স।

বার্তা সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, গতকাল বুধবার এ প্রস্তাবনার ওপর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে একটি জরুরি বিতর্ক অধিবেশন হওয়ার কথা। আফ্রিকার দেশগুলোর প থেকে বুরকিনা ফাসো এ বিতর্ক অধিবেশনের আহ্বান জানানোর পর পরিষদের দেশগুলো মঙ্গলবার তাতে সম্মতি জানায়।

গত মে মাসের শেষ সপ্তাহ (২৫ মে) থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের নির্যাতনে পর পর দু’জন কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এ দুই মার্কিনির একজন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফয়েড আর অপরজন ২৭ বছরের তরুণ রাইশার্ড ব্রুকস। এই দুই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গত ২৫ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে চলা ব্যাপক পুলিশি বর্বরতা ও বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলনে রূপ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরক্ষায় আফ্রিকার দেশগুলোও তৎপরতা শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করেছে আফ্রিকার দেশগুলো। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো এ প্রস্তাবটি এখনো উপস্থাপন করা না হলেও জেনেভার মানবাধিকার পরিষদের সদরদফতরের কূটনীতিকদের মধ্যে ইতোমধ্যেই এর অনুলিপি (কপি) বিতরণ করা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নিপীড়নে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিনি জর্জ ফয়েড হত্যার প্রোপটে আফ্রিকার দেশগুলো এমন উদ্যোগ নিয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলোর এ খসড়া প্রস্তাবনায় একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। যে কমিশন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী আফ্রিকান ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের বিরুদ্ধে চলমান বর্ণবাদী নিপীড়নসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লড়ঘন এবং আরো নানা অন্যায়, অবিচার খতিয়ে দেখবে।

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের অধিকার সুরায় সোচ্চার হয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নামা মানুষদের ওপর পুলিশের বর্বরতার ঘটনা নিয়ে প্রস্তাবনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় (ফেডারেল), অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় সরকার পর্যায়েও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশি তৎপরতা এবং বিক্ষোভকারী, পথচারী ও সংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে প্রস্তাবনায়।

যুক্তরাষ্ট্র এখন আর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদেও সদস্য নয়। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পপাতদুষ্টতার অভিযোগে দুই বছর আগেই পরিষদ ছেড়ে বেরিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আফ্রিকার দেশগুলোর এ উদ্যোগের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোকেও তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।