বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত হতে যাচ্ছে চীন

চীন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য অংশীদার। তবে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ভারসাম্য খুব ভালো নয়। চীন থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে প্রায় ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের মতো। এর বিপরীতে বাংলাদেশ চীনে রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলারের নিচে। তবে সম্প্রতি চীন বাংলাদেশের অনেকগুলো পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা দিয়েছে। এরমধ্যে দিয়ে দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চীন বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে এ বাণিজ্য সুবিধা কার্যকর হবে। এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ এসব সুবিধা পেতে শুরু করবে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীন থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার বিপরীতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সার্বিক দিকনির্দেশনায় ও বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে চীনের সঙ্গে বিনিময়পত্র বা লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করে। দীর্ঘ সমঝোতার পর ১৬ জুন চীন বাংলাদেশকে শর্তহীনভাবে ৯৭ শতাংশ পণ্যে অর্থাৎ মোট ৮ হাজার ২৫৬টি এইচএসকোড শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করে আদেশ জারি করে। ফলে চীনের বাজারে বাংলাদেশের সব সম্ভাবনাময় পণ্য শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় একপক্ষীয়ভাবে বা ইউনিল্যাটারালি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এ সুবিধা প্রদান করায় বাংলাদেশকে এর বিপরীতে কোন ছাড় দিতে হবে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, চীন ১৪০ কোটি জনসংখ্যার একটি বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে এ দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইভাবে উৎপাদন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) প্রবেশাধিকার সুবিধা পেলে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতাসম্পন্ন প্রায় সব পণ্য চীনে শুল্কমুক্ত কোটামুক্তভাবে প্রবেশের সুবিধা পাবে। ফলে চীনে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়, যা বাংলাদেশের বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে ভুটান, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে পিটিএ চূড়ান্তকরণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকার মার্কোসার জোটের দেশগুলো ও পূর্ব ইউরোপের বাণিজ্য জোটের সঙ্গে এফটিএ আলোচনা চলছে।

চীন ১ জুলাই থেকে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্রাথমিকভাবে এ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশসহ ৩৩টি স্বল্পোন্নত দেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তাদের চীনের ৬০ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়। কিন্তু চীনের দেয়া এ সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতার অনুকূল কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতা আছে এমন অনেক পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি সম্ভাবনাময় পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের জন্য চীনকে অনুরোধ করে। যদিও চীন ২০১৩ সালে শুল্কমুক্ত সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৪০টিতে উন্নীত করে। এরমধ্যে ২৪টি স্বল্পোন্নত দেশ যারা ১ জানুয়ারি ২০১৫-এর আগে চীনের সঙ্গে লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করেছে, তারা ৯৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে, ১২টি স্বল্পোন্নত দেশ যারা ১ জানুয়ারি ২০১৫-এর পরে লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করেছে, তারা ৯৫ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে এবং বাংলাদেশ ও মৌরিতানিয়া মাত্র ৬০ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে এ সুবিধা পেয়ে আসছিল। বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চীন অবহিত করে যে, লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ৯৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। তবে শর্তারোপ করে যে, স্বল্পোন্নত দেশকে দেয়া সুবিধা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (এপিটিএ) আওতায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য বিদ্যমান সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না।

এপিটিএর আওতায় শুল্ক সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য মূল্য সংযোজনের হার ৩৫ শতাংশ হলেও স্বল্পোন্নত দেশের জন্য চীনের প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় মূল্য সংযোজনের হার ৪০ শতাংশ। চীনের আরোপিত শর্ত মেনে স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করবে কিনা সে বিষয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের মতামত গ্রহণ ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণের জন্য চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। দীর্ঘ সমঝোতার পর ১৬ জুন চীন বাংলাদেশকে শর্তহীনভাবে ৯৭ শতাংশ পণ্যে অর্থাৎ মোট ৮ হাজার ২৫৬টি এইচএসকোড শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করে আদেশ জারি করে।

রবিবার, ২১ জুন ২০২০ , ৭ আষাঢ় ১৪২৭, ২৮ শাওয়াল ১৪৪১

বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত হতে যাচ্ছে চীন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

চীন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য অংশীদার। তবে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ভারসাম্য খুব ভালো নয়। চীন থেকে বাংলাদেশ পণ্য আমদানি করে প্রায় ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের মতো। এর বিপরীতে বাংলাদেশ চীনে রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলারের নিচে। তবে সম্প্রতি চীন বাংলাদেশের অনেকগুলো পণ্যে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা দিয়েছে। এরমধ্যে দিয়ে দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চীন বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে এ বাণিজ্য সুবিধা কার্যকর হবে। এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ এসব সুবিধা পেতে শুরু করবে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীন থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার বিপরীতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল মাত্র বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিচে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সার্বিক দিকনির্দেশনায় ও বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের নেতৃত্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে চীনের সঙ্গে বিনিময়পত্র বা লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করে। দীর্ঘ সমঝোতার পর ১৬ জুন চীন বাংলাদেশকে শর্তহীনভাবে ৯৭ শতাংশ পণ্যে অর্থাৎ মোট ৮ হাজার ২৫৬টি এইচএসকোড শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করে আদেশ জারি করে। ফলে চীনের বাজারে বাংলাদেশের সব সম্ভাবনাময় পণ্য শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় একপক্ষীয়ভাবে বা ইউনিল্যাটারালি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এ সুবিধা প্রদান করায় বাংলাদেশকে এর বিপরীতে কোন ছাড় দিতে হবে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, চীন ১৪০ কোটি জনসংখ্যার একটি বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে এ দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, একইভাবে উৎপাদন ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) প্রবেশাধিকার সুবিধা পেলে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতাসম্পন্ন প্রায় সব পণ্য চীনে শুল্কমুক্ত কোটামুক্তভাবে প্রবেশের সুবিধা পাবে। ফলে চীনে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়, যা বাংলাদেশের বাণিজ্যবৈষম্য কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরমধ্যে ভুটান, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে পিটিএ চূড়ান্তকরণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকার মার্কোসার জোটের দেশগুলো ও পূর্ব ইউরোপের বাণিজ্য জোটের সঙ্গে এফটিএ আলোচনা চলছে।

চীন ১ জুলাই থেকে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, প্রাথমিকভাবে এ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশসহ ৩৩টি স্বল্পোন্নত দেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তাদের চীনের ৬০ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়। কিন্তু চীনের দেয়া এ সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতার অনুকূল কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতা আছে এমন অনেক পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি সম্ভাবনাময় পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদানের জন্য চীনকে অনুরোধ করে। যদিও চীন ২০১৩ সালে শুল্কমুক্ত সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৪০টিতে উন্নীত করে। এরমধ্যে ২৪টি স্বল্পোন্নত দেশ যারা ১ জানুয়ারি ২০১৫-এর আগে চীনের সঙ্গে লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করেছে, তারা ৯৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে, ১২টি স্বল্পোন্নত দেশ যারা ১ জানুয়ারি ২০১৫-এর পরে লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করেছে, তারা ৯৫ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে এবং বাংলাদেশ ও মৌরিতানিয়া মাত্র ৬০ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে এ সুবিধা পেয়ে আসছিল। বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চীন অবহিত করে যে, লেটার অব এক্সচেঞ্জ স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ৯৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনে শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। তবে শর্তারোপ করে যে, স্বল্পোন্নত দেশকে দেয়া সুবিধা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (এপিটিএ) আওতায় স্বল্পোন্নত দেশের জন্য বিদ্যমান সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না।

এপিটিএর আওতায় শুল্ক সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য মূল্য সংযোজনের হার ৩৫ শতাংশ হলেও স্বল্পোন্নত দেশের জন্য চীনের প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় মূল্য সংযোজনের হার ৪০ শতাংশ। চীনের আরোপিত শর্ত মেনে স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করবে কিনা সে বিষয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের মতামত গ্রহণ ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণের জন্য চীনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। দীর্ঘ সমঝোতার পর ১৬ জুন চীন বাংলাদেশকে শর্তহীনভাবে ৯৭ শতাংশ পণ্যে অর্থাৎ মোট ৮ হাজার ২৫৬টি এইচএসকোড শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা প্রদান করে আদেশ জারি করে।