সুন্দরগঞ্জে তিস্তার ভাঙন দিশেহারা চরের মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং অবিরাম বর্ষণে তিস্তার ভাঙন ও পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যার কারণে বেসামাল হয়ে পড়েছে চরবাসী। টানা ভাঙনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর পুটিমারী, ভাটিকা পাসিয়া বাদামের চর, মাদারিপাড়া, লালচামার গ্রামে এক হাজর একর ফসলি জমি ও এক হাজার বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।

এমনকি ডুবে গেছে ফসলি জমি। ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ও বসত বাড়ি। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর বিভিন্ন চড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীতে তীব্র স্র্রোত দেখা দিয়েছে। এতে বসত বাড়ি বিলিন হচ্ছে নদী গর্ভে। বর্তমানে তিস্তার চরাঞ্চলে বেগুন, মরিচ, পটল, করলা, শশা, তোষা পাটসহ নানাবিধ ফসলের সমাহার ছিল। কিন্তু সর্বনাশা তিস্তার ভাঙনে এবং পানি বৃদ্ধিও কারণে সেসব ফসল ঘরে তোলা হল না। কথা হয়, শ্রীপুর ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের ফয়জার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন তিস্তার ভাঙনে চরবাসি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ সময় তীব্র আকারে নদী ভাঙার কথা নয়। অথচ দীর্ঘদিন থেকে দফায় দফায় নদী ভাঙন চলছে। যার কারণে শ্রীপুর ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চরের মানুষ তরিতরকারির আবাদ করে ৬ মাস সংসার চালায়। কিন্তু নদী ভাঙন এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কৃষকের এখন মাথায় হাত। তিনি বলেন তার দুই বিঘা জমির তোষা পাট ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া এক বিঘা জমির বেগুন ক্ষেতের প্রায় বেশির ভাগ নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জানান জমিতে পলি জমে

নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে, সে কারণে সামান্য পানিবৃদ্ধি পেলে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। এবং সারা বছর নদী ভাঙন অব্যাহত থাকে। নদীভাঙন ঠেকাতে হলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান,নদী ভাঙনের কারণে এক হাজার একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন এবং পানি বৃদ্ধিও কারণে সাত একর জমির তোষা পাট ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক জানান, নদী ভাঙন রোধ একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। তবে নদী সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে গত বছর ২ মে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার তিস্তার বিভিন্ন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, তিস্তা নদীকে রক্ষা এবং ভাঙন রোধ করতে হলে নদীর গতিপথ একমুখী করতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।

শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০ , ১২ আষাঢ় ১৪২৭, ৪ জিলকদ ১৪৪১

সুন্দরগঞ্জে তিস্তার ভাঙন দিশেহারা চরের মানুষ

আবদুল মতিন সরকার, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)

image

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : এভাবেই ভাঙছে তিস্তা পারের চর -সংবাদ

উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং অবিরাম বর্ষণে তিস্তার ভাঙন ও পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যার কারণে বেসামাল হয়ে পড়েছে চরবাসী। টানা ভাঙনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর পুটিমারী, ভাটিকা পাসিয়া বাদামের চর, মাদারিপাড়া, লালচামার গ্রামে এক হাজর একর ফসলি জমি ও এক হাজার বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।

এমনকি ডুবে গেছে ফসলি জমি। ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ও বসত বাড়ি। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর বিভিন্ন চড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীতে তীব্র স্র্রোত দেখা দিয়েছে। এতে বসত বাড়ি বিলিন হচ্ছে নদী গর্ভে। বর্তমানে তিস্তার চরাঞ্চলে বেগুন, মরিচ, পটল, করলা, শশা, তোষা পাটসহ নানাবিধ ফসলের সমাহার ছিল। কিন্তু সর্বনাশা তিস্তার ভাঙনে এবং পানি বৃদ্ধিও কারণে সেসব ফসল ঘরে তোলা হল না। কথা হয়, শ্রীপুর ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামের ফয়জার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন তিস্তার ভাঙনে চরবাসি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ সময় তীব্র আকারে নদী ভাঙার কথা নয়। অথচ দীর্ঘদিন থেকে দফায় দফায় নদী ভাঙন চলছে। যার কারণে শ্রীপুর ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চরের মানুষ তরিতরকারির আবাদ করে ৬ মাস সংসার চালায়। কিন্তু নদী ভাঙন এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কৃষকের এখন মাথায় হাত। তিনি বলেন তার দুই বিঘা জমির তোষা পাট ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া এক বিঘা জমির বেগুন ক্ষেতের প্রায় বেশির ভাগ নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জানান জমিতে পলি জমে

নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে, সে কারণে সামান্য পানিবৃদ্ধি পেলে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। এবং সারা বছর নদী ভাঙন অব্যাহত থাকে। নদীভাঙন ঠেকাতে হলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান,নদী ভাঙনের কারণে এক হাজার একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন এবং পানি বৃদ্ধিও কারণে সাত একর জমির তোষা পাট ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক জানান, নদী ভাঙন রোধ একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। তবে নদী সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে গত বছর ২ মে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার তিস্তার বিভিন্ন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, তিস্তা নদীকে রক্ষা এবং ভাঙন রোধ করতে হলে নদীর গতিপথ একমুখী করতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেছেন।