কবিতাগুচ্ছ

শফিক ইমতিয়াজ

একদিন আমাদের গাছের পাতায়

সবুজ বদ্বীপে একভিড় রুদ্ধস্বর

সূর্য ওঠে, তথাপি তা ওঠে নাই তামাটে মানুষ আর

প্রতিবেশ আম-কাঁঠালের পাতার নিবিড়ে!

অচেনা ছায়ার মতো কারা যেন বহুকাল ধরে

ধেয়ে গেছে উঠোনে উঠোনে এই বিপন্ন জমাটে

তাদের আঙুলে হিমরঙ নখের হিংস্র!

খরার কামড়ে কেঁপে ওঠা বন

শীতার্ত নদীর বুকে অনুপস্থিত আকাশ।

এমন হলুদ দিনে বেদনাতাড়িত রোদে

উঠে’ এলো তুমুল তর্জনী, বজ্রকণ্ঠের নির্ঘোষ

ভেঙে দিতে আরোপিত জীবনের ছক।

একদিন আমাদের গাছের পাতায় রোদের উজ্জ্বল

অবাক তর্জনী ও বজ্রকণ্ঠ ঘিরে

গ্রীবা তোলা পৃথক স্পন্দন, বর্ণা পৃথিবীতে!

শিস্

পরাবৃত্ত শিস্, জন্ম তার ফাগুন ঔরস

ডাকছে রক্তিম স্বরে, নগরে যখন ধ্বস

নেমে গেছে শ্যামল যাপনে, মাটির মানুষ

সহজ মর্মীতা ছিঁড়ে, হয়ে অগ্নিবাহী তুষ

পোড়ায় স্বকাল, আকাশের নীল;

সতর্ক সংকেত দেয় শিসনড়া নগরকোকিল!

বাতাস বিষাক্ত করে বাজার ও পণ্যবোধ

পঙ্গু করে মানুষের সহজাত রোদ

বিপননে ঢেলে রাখা দ্রবীভূত ক্ষুর;

সমবেত জলের অঙ্কুর

ভেঙে যায়, নীরবে নীলাভ হয় ধান, প্রান্তখড়

বিপনীতে বিবিধ লেবেল: বিকোয় ঈশ্বর।

এতটা বাজার করেছে প্রসব আকীর্ণ সময়

কোকিলের কণ্ঠ বাদে আর সব দরাদরি হয়!

মুদ্রার তৃতীয় পিঠ

শবের বিতর্কসভা থেকে সরে থাকি মামুলি অভ্যাসে

কী সব জাঁকালো আয়োজন!

সেখানে উৎপন্ন আঁচ

কার্যত আমার ব্রাত্যমগজের উপযোগী নয়

তাই হাই তুলে বিরক্তি উৎপাদনের চেয়ে

মঞ্চ কিংবা দর্শকসারিতে না থাকা উত্তম মনে করি।

তাছাড়া বিতর্কসভা মানে মুদ্রার এপিঠ অথবা ওপিঠ

এই মুদ্রাবাজারের কোন পিঠেরই তো নই আমি!

অনুভব করি মুদ্রার তৃতীয় পিঠ থাকা আবশ্যক;

কে মানবে এমন অশ্রুতপূর্ব দাবি!

শবের বিতর্কসভা থেকে সরে থাকি মামুলি অভ্যাসে

সমর্পিত ঘিয়ের আগুন, তার চেয়ে নাড়ার আগুনে খাস্তা ওম!

আমরা লঘুজন, শীত নিবারণ বড় কথা

আর বিড়ি ধরাবার অমার্জিত একটু আগুন...

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৭ মহররম ১৪৪২, ২৭ আগস্ট ২০২০

কবিতাগুচ্ছ

শফিক ইমতিয়াজ

একদিন আমাদের গাছের পাতায়

সবুজ বদ্বীপে একভিড় রুদ্ধস্বর

সূর্য ওঠে, তথাপি তা ওঠে নাই তামাটে মানুষ আর

প্রতিবেশ আম-কাঁঠালের পাতার নিবিড়ে!

অচেনা ছায়ার মতো কারা যেন বহুকাল ধরে

ধেয়ে গেছে উঠোনে উঠোনে এই বিপন্ন জমাটে

তাদের আঙুলে হিমরঙ নখের হিংস্র!

খরার কামড়ে কেঁপে ওঠা বন

শীতার্ত নদীর বুকে অনুপস্থিত আকাশ।

এমন হলুদ দিনে বেদনাতাড়িত রোদে

উঠে’ এলো তুমুল তর্জনী, বজ্রকণ্ঠের নির্ঘোষ

ভেঙে দিতে আরোপিত জীবনের ছক।

একদিন আমাদের গাছের পাতায় রোদের উজ্জ্বল

অবাক তর্জনী ও বজ্রকণ্ঠ ঘিরে

গ্রীবা তোলা পৃথক স্পন্দন, বর্ণা পৃথিবীতে!

শিস্

পরাবৃত্ত শিস্, জন্ম তার ফাগুন ঔরস

ডাকছে রক্তিম স্বরে, নগরে যখন ধ্বস

নেমে গেছে শ্যামল যাপনে, মাটির মানুষ

সহজ মর্মীতা ছিঁড়ে, হয়ে অগ্নিবাহী তুষ

পোড়ায় স্বকাল, আকাশের নীল;

সতর্ক সংকেত দেয় শিসনড়া নগরকোকিল!

বাতাস বিষাক্ত করে বাজার ও পণ্যবোধ

পঙ্গু করে মানুষের সহজাত রোদ

বিপননে ঢেলে রাখা দ্রবীভূত ক্ষুর;

সমবেত জলের অঙ্কুর

ভেঙে যায়, নীরবে নীলাভ হয় ধান, প্রান্তখড়

বিপনীতে বিবিধ লেবেল: বিকোয় ঈশ্বর।

এতটা বাজার করেছে প্রসব আকীর্ণ সময়

কোকিলের কণ্ঠ বাদে আর সব দরাদরি হয়!

মুদ্রার তৃতীয় পিঠ

শবের বিতর্কসভা থেকে সরে থাকি মামুলি অভ্যাসে

কী সব জাঁকালো আয়োজন!

সেখানে উৎপন্ন আঁচ

কার্যত আমার ব্রাত্যমগজের উপযোগী নয়

তাই হাই তুলে বিরক্তি উৎপাদনের চেয়ে

মঞ্চ কিংবা দর্শকসারিতে না থাকা উত্তম মনে করি।

তাছাড়া বিতর্কসভা মানে মুদ্রার এপিঠ অথবা ওপিঠ

এই মুদ্রাবাজারের কোন পিঠেরই তো নই আমি!

অনুভব করি মুদ্রার তৃতীয় পিঠ থাকা আবশ্যক;

কে মানবে এমন অশ্রুতপূর্ব দাবি!

শবের বিতর্কসভা থেকে সরে থাকি মামুলি অভ্যাসে

সমর্পিত ঘিয়ের আগুন, তার চেয়ে নাড়ার আগুনে খাস্তা ওম!

আমরা লঘুজন, শীত নিবারণ বড় কথা

আর বিড়ি ধরাবার অমার্জিত একটু আগুন...