মোরেলগঞ্জে জোয়ারের জলে বিধ্বস্ত ২০ কিমি. সড়ক

ভোগান্তিতে ৪ গ্রামের মানুষ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নে অতিরিক্ত জোয়ারের জলে ভেঙ্গে গেছে ২০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা। ৪ গ্রামের মানুষের জনভোগান্তি চরমে। ৯ কিলোমিটারের টেকশই ভেরিবাঁধের দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিনে মঙ্গলবার ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের বদনিভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, পানগুছি নদীর তীরবর্তী এ তিনটি গ্রাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা চলাচলের জন্য রয়েছে ইট সলিং বড় ২টি রাস্তা। কাঁচা-রাস্তা রয়েছে ছোট বড় ৮টি। গত ৫ দিনের অমাবস্যার অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে সানকিভাঙ্গা, সিঅ্যান্ডবি হয়ে চৌকিদারহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ইট সলিং রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে। সেকেন্দার শেখের বাড়ি থেকে দারুল কোরআন সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাচা রাস্তাটি ধসে গিয়ে নদীর সাথে বিলীন হয়েছে। অনুরুপ বদনীভাঙ্গা ইট ভাটা হয়ে পথেরহাট বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের ইটসলিং রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে। ৪ গ্রামের ১০ হাজার মানুষের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। এ জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো থেকে প্রতিনিয়ত চৌকিদারহাট, পথেরহাট, ছোট বাদুরাসহ পার্শ্ববর্তী ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া, কলারোন, চন্ডিপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ। বর্তমানে এ রাস্তাগুলো থেকে পায়ে হেটে না আসতে পারলেও নদী পথে ট্রলারযোগে আসতে হচ্ছে উপজেলা শহরে। এ গ্রামগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে দাখিল মাদ্রাসা ২টি, আলিম মাদ্রাসা ১, হাফিজিয়া মাদ্রাসা ২, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪। এ ছাড়াও জামে সমজিদ রয়েছে ১৪টি। কথা হয় বদনিভাঙ্গা গ্রামের ভুক্তভোগী বাসিন্দা কৃষক জলিল ফরাজি(৭০), ভ্যান শ্রমিক শফিকুল ইসলাম (৪৮), মৎস্যজীবী মোকলেসুর রহমান (৬৫), আব্দুস সোমেদ শেখ(৫০) ও ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দস শেখ (৪৮) বলেন, আমরা গরু ছাগল, হাঁস মুরগি নিয়ে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, কোথাও চলাচলের রাস্তা নেই, কোমর বাঁধা পানি ভেঙ্গে যেতে হচ্ছে হাট বাজারে। নিজ উদ্যোগে মাটি কেটে রাস্তায় দিলেও জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে পড়ছে। রাস্তাগুলো পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি জানান তারা। সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বর মো. মতিয়ার হাওলাদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ও সরকারি বরাদ্দ থেকে একাধিকবার রাস্তাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বারবার ভেঙ্গে যাচ্ছে রাস্তাগুলো। এলাকাবাসীর ভোগান্তি লাঘবের জন্য জরুরিভাবে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকরামুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি জোয়ারের পানিতে কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙ্গে ধসে পড়েছে নদীগর্ভে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। গত বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ একটি প্রতিনিধি দল নদীর তীরবর্তী এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। ভেরিবাঁধের বিষয় কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পানগুছি নদী তীরবর্তী সোলমবাড়িয়া স্লুইজ গেট থেকে সিমান্তবর্তী মরা বলেশ্বর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার টেকশই স্থায়ী ভেরিবাঁধের জোর দাবি করেন তিনি। এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে ও ধসে যাওয়া রাস্তাগুলোর খোঁজ নিয়ে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৭ মহররম ১৪৪২, ২৭ আগস্ট ২০২০

মোরেলগঞ্জে জোয়ারের জলে বিধ্বস্ত ২০ কিমি. সড়ক

ভোগান্তিতে ৪ গ্রামের মানুষ

গনেশ পাল, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

image

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নে অতিরিক্ত জোয়ারের জলে ভেঙ্গে গেছে ২০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা রাস্তা। ৪ গ্রামের মানুষের জনভোগান্তি চরমে। ৯ কিলোমিটারের টেকশই ভেরিবাঁধের দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিনে মঙ্গলবার ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের বদনিভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, পানগুছি নদীর তীরবর্তী এ তিনটি গ্রাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা চলাচলের জন্য রয়েছে ইট সলিং বড় ২টি রাস্তা। কাঁচা-রাস্তা রয়েছে ছোট বড় ৮টি। গত ৫ দিনের অমাবস্যার অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে সানকিভাঙ্গা, সিঅ্যান্ডবি হয়ে চৌকিদারহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ইট সলিং রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে। সেকেন্দার শেখের বাড়ি থেকে দারুল কোরআন সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাচা রাস্তাটি ধসে গিয়ে নদীর সাথে বিলীন হয়েছে। অনুরুপ বদনীভাঙ্গা ইট ভাটা হয়ে পথেরহাট বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের ইটসলিং রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে। ৪ গ্রামের ১০ হাজার মানুষের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। এ জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো থেকে প্রতিনিয়ত চৌকিদারহাট, পথেরহাট, ছোট বাদুরাসহ পার্শ্ববর্তী ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া, কলারোন, চন্ডিপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ। বর্তমানে এ রাস্তাগুলো থেকে পায়ে হেটে না আসতে পারলেও নদী পথে ট্রলারযোগে আসতে হচ্ছে উপজেলা শহরে। এ গ্রামগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে দাখিল মাদ্রাসা ২টি, আলিম মাদ্রাসা ১, হাফিজিয়া মাদ্রাসা ২, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪। এ ছাড়াও জামে সমজিদ রয়েছে ১৪টি। কথা হয় বদনিভাঙ্গা গ্রামের ভুক্তভোগী বাসিন্দা কৃষক জলিল ফরাজি(৭০), ভ্যান শ্রমিক শফিকুল ইসলাম (৪৮), মৎস্যজীবী মোকলেসুর রহমান (৬৫), আব্দুস সোমেদ শেখ(৫০) ও ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দস শেখ (৪৮) বলেন, আমরা গরু ছাগল, হাঁস মুরগি নিয়ে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, কোথাও চলাচলের রাস্তা নেই, কোমর বাঁধা পানি ভেঙ্গে যেতে হচ্ছে হাট বাজারে। নিজ উদ্যোগে মাটি কেটে রাস্তায় দিলেও জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে পড়ছে। রাস্তাগুলো পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি জানান তারা। সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বর মো. মতিয়ার হাওলাদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ও সরকারি বরাদ্দ থেকে একাধিকবার রাস্তাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বারবার ভেঙ্গে যাচ্ছে রাস্তাগুলো। এলাকাবাসীর ভোগান্তি লাঘবের জন্য জরুরিভাবে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকরামুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি জোয়ারের পানিতে কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙ্গে ধসে পড়েছে নদীগর্ভে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। গত বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ একটি প্রতিনিধি দল নদীর তীরবর্তী এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। ভেরিবাঁধের বিষয় কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পানগুছি নদী তীরবর্তী সোলমবাড়িয়া স্লুইজ গেট থেকে সিমান্তবর্তী মরা বলেশ্বর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার টেকশই স্থায়ী ভেরিবাঁধের জোর দাবি করেন তিনি। এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে ও ধসে যাওয়া রাস্তাগুলোর খোঁজ নিয়ে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।