বোধহীন পরিবেশে বড় হচ্ছে শিশুরা

এসএম মুকুল

একটি শিশুকে প্রশ্ন করা হলো- বলতো মাছ কোথায় থাকে? ক্ষাণিক ভেবে সে জবাব দিল- ফ্রিজে। কোমলমতি একটি শিশুর মুখে এমন কথা শুনলে অবাক হওয়ার কোন কারণ কি আছে। যে শিশুটি রোজ রোজ মাকে ফ্রিজ থেকে মাছের পোটলা বের করে রান্না করতে দেখে আর বাবাকে কাটা ও আছিল বিহীন মাছ বাজার থেকে এনে ফ্রিজে রাখতে দেখে- তার ধারণা এমন হওয়াটাই বরং স্বাভাবিক। আমাদের শিশুরা এখন মাছ খায়, কিন্তু মাছের নাম জানে না। পাঠ্যপুস্তকে নাম পড়ে শিখলেও- সে মাছগুলোর অবয়ব সম্পর্কে ধারণা রাখে না। কি করেই জানবে। আমরা কি কোন মাছের কি নাম সে শিক্ষা দিতে পারছি। নড়েচড়ে এমন জ্যান্ত মাছ তো শিশুরা দেখতেই পায় না। শিশুরা মাছের বাজারে যায় না। জ্যান্ত অথবা মৃত আস্ত মাছটিই বা ক’জন শিশু দেখতে পায়। পুকুর বা নদীতে দাপাদাপি করে গোসলের স্বাদ পাচ্ছে একালের শিশুরা। কালবৈশাখী ঝড় কি জিনিস ওরা কি জানে। কবিতার ছন্দে হয়তোবা পড়া শেখে- তবে ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর সুখ কি তারা পায়। পাকা ধানের গন্ধ, গ্রামের মেঠোপথ, কুয়াশাচ্ছন্ন সূর্যোদয়ের দৃশ্য একালের ক’জন শিশুর ভাগ্যে জোটে। ঢাকার সত্তরোর্ধ্ব একজন দাদা তার নাতি-নাতনিকে বাঁশ গাছ চেনাতে সারা শহর চষে বেড়িয়েছেন। অবশেষে পৈত্রিক নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে বাঁশঝাড় এবং কলাগাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে সমর্থ হন এই মানুষটি। গাছপালা পশুপাখি আর প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই একালের শিশুদের। প্রকৃতির কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি আমরা। তাই প্রকৃতিও আমাদের কোন ছাড় দিচ্ছে না।

তুমুল প্রতিযোগিতার যুগে যান্ত্রিকতা, যশ-খ্যাতি আর অর্থের পাহাড় গড়তে গিয়ে সন্তানকে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষাটুকু দিতেও ভুলে যাচ্ছি আমরা। পারিবারিক বন্ধনহীন ছন্নছাড়া পরিবেশে বড় হচ্ছে এই উত্তরসূরি প্রজš§। সে তার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে না। শেকড় খোঁজে না। দেশপ্রেমের শিক্ষা নেই। ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারণা নেই। সে শিশুর কোন আত্মবিশ্বাস নেই। সে কি করে আত্মমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে।

বোধহীন পরিবেশে বড় করছি এ শিশুদের। চাপিয়ে দেয়া দায় দিয়ে তার বিকাশমান মেধাকে স্পন্দনহীন করে তুলছি আমরা। গাদা গাদা বইয়ের বোঝা, প্রাইভেট মাস্টার, স্কুল, কোচিং, নাচ, গান, ছবি আঁকা এবং হুজুরের কাছে ধর্মশিক্ষা এসব কিছুই এ কোমলমতি শিশুর ওপর একসঙ্গে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সে কোনটা পারবে, কোনটা তাকে দিয়ে হবে না এটুকু ভারবহন ক্ষমতা যাচাই করাও হয় না। যেন তাকে পারতেই হবে। ভালো রেজাল্ট করতেই হবে। ভালো স্কুলে চান্স পেতেই হবে। সেরা ক্ষুদে গানরাজ বা অলরাউন্ডার হতেই হবে। তা না হলে আমাদের এই জš§ যেন বৃথা যাবে। অভিভাবকদের ধারণা ঠিক এ রকমই! শিশুর প্রতি অভিভাবকত্ব ফলানো, শাসনের জালে আটকে রাখা, এটা করতে হবে, ওটা করতে পারবে না, এখনি পড়তে বসো- ইত্যাদি বাচনভঙ্গি এক ধরনের বাবা-মার নিত্যসঙ্গী। এর ব্যতিক্রম ঘটলে সন্তানের ওপর নেমে আসে শাস্তি। মা-বাবার কথা মতো না চললেই গায়ে হাত তোলা নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এ রকম চলতে থাকলে শিশুর আত্মবিশ্বাস কমে যায়। সমাজে অবাদে মিশতে পারে না। এ ধরনের বাবা-মায়েরা সন্তানের জন্য কঠিন, কঠোর নিয়মকানুন করে দেন। কিন্তু এর সুফল সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা দেন না।

এবার একটি বিজ্ঞাপনের কথা বলি। ‘তোমাদের আম লইয়া রচনা লেখন শেষ? তুমি কহ। একজন শিশু বলতে লাগলো- আম একটি সুস্বাদু, মিষ্টি ফল। একদিন এমন হইবে যে- আমকে আর বৃক্ষে হইতে হইবে না। আম থাকবে প্লাস্টিক বোতলে বা কাগজে মোরানো প্যাকেটে। আমরা মনের সুখে যখন খুশি আম খাইতে পারব। সেই আম যাকে আমরা আদর করে ফ্রুটি বলে ডাকি’। সব বিবেকবান মানুষকে প্রশ্ন করি, এ বিজ্ঞাপন থেকে শিশুরা কি শিখলো! বিজ্ঞাপনের প্রতি শিশুদের আগ্রহ প্রবল। বিজ্ঞাপন নির্মাণের ক্ষেত্রে শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা বিকাশের সুযোগ যেন রাখা হয়।

এমনিতেই আমাদের শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা চর্চার সুযোগ কম। ক্লাস, পরীক্ষা, কোচিং পড়া আর পড়ার চাপে অনেক সময় বোধহীন হয়ে বেড়ে উঠছে শিশুরা। ঘর থেকে বেরুলেই শিশুরা নানা রকম হয়রানি, বঞ্চনা ও প্রতারণার শিকার। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, বিষযুক্ত ভেজাল খাবার শিশুদের নিত্যসঙ্গী। কোথায় যাবে ওরা। ফার্মের মুরগির মতো খাঁচায় বন্দী হয়ে আছে শিশুদের দুরন্তপনা। যেখানে গাছ নেই, সবুজ উদ্যান নেই, খেলার মাঠ নেই, সাঁতরাবার পুকুর নেই। আছে যান্ত্রিকতা, দূষিত বাতাস, বিষবাষ্প, ধূলোবালি, বৃষ্টিহীন ভ্যাপসা গরম, বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন। এসব যন্ত্রণাকে সাথী করে যেসব শিশুরা বড় হচ্ছে- তারা কী করে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হবে বলতে পারেন?

এসব দায় শুধু সরকারের ওপর সব ছেড়ে দিলে চলবে না। অভিভাবক হিসেবে আমাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ছেলে মেয়ের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে অনেক বাবা-মা দায় এড়াতে চান। এটা ঠিক নয়। সিদ্ধানের মনোজগৎ সঠিকভাবে গড়ে তুলতে আর তার ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর করতে বাবা-মায়ের আচরণ হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ ও বন্ধুসুলভ। অপরিমিত কঠোরতা বা অতি স্নেহ সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সন্তানকে যে বাবা-মা অনেক ভালোবাসেন, সেটা সন্তানকে বুঝতে দিতে হবে এবং তার প্রকাশ হতে হবে সহজ ও সরলভাবে। সন্তান মা-বাবাকে কিছু বলতে চাইলে, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। কিসে বাচ্চারা খুশি হয়, কিসে দুঃখ পায় সেটা বুঝে আচরণ করতে হবে। তার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে তার নিজের জগৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে। ভালো কাজে উৎসাহ আর অনাকাক্সিক্ষত কাজের জন্য শাস্তির বদলে নিরুৎসাহিত করতে হবে। মা-বাবার সুন্দর সহনশীল সহানুভূতি-সম্পন্ন আচরণই শিশুর ভবিষ্যৎকে সুন্দর ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে পারে। সুস্থ ও সাবলীল পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশু আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে, পূরণ করবে ভবিষ্যতের প্রত্যাশা।

[লেখক : সাংবাদিক ও কৃষি-অর্থনীতি বিশ্লেষক]

writetomukul36@gmail.com

বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৭ মহররম ১৪৪২, ২৭ আগস্ট ২০২০

বোধহীন পরিবেশে বড় হচ্ছে শিশুরা

এসএম মুকুল

একটি শিশুকে প্রশ্ন করা হলো- বলতো মাছ কোথায় থাকে? ক্ষাণিক ভেবে সে জবাব দিল- ফ্রিজে। কোমলমতি একটি শিশুর মুখে এমন কথা শুনলে অবাক হওয়ার কোন কারণ কি আছে। যে শিশুটি রোজ রোজ মাকে ফ্রিজ থেকে মাছের পোটলা বের করে রান্না করতে দেখে আর বাবাকে কাটা ও আছিল বিহীন মাছ বাজার থেকে এনে ফ্রিজে রাখতে দেখে- তার ধারণা এমন হওয়াটাই বরং স্বাভাবিক। আমাদের শিশুরা এখন মাছ খায়, কিন্তু মাছের নাম জানে না। পাঠ্যপুস্তকে নাম পড়ে শিখলেও- সে মাছগুলোর অবয়ব সম্পর্কে ধারণা রাখে না। কি করেই জানবে। আমরা কি কোন মাছের কি নাম সে শিক্ষা দিতে পারছি। নড়েচড়ে এমন জ্যান্ত মাছ তো শিশুরা দেখতেই পায় না। শিশুরা মাছের বাজারে যায় না। জ্যান্ত অথবা মৃত আস্ত মাছটিই বা ক’জন শিশু দেখতে পায়। পুকুর বা নদীতে দাপাদাপি করে গোসলের স্বাদ পাচ্ছে একালের শিশুরা। কালবৈশাখী ঝড় কি জিনিস ওরা কি জানে। কবিতার ছন্দে হয়তোবা পড়া শেখে- তবে ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর সুখ কি তারা পায়। পাকা ধানের গন্ধ, গ্রামের মেঠোপথ, কুয়াশাচ্ছন্ন সূর্যোদয়ের দৃশ্য একালের ক’জন শিশুর ভাগ্যে জোটে। ঢাকার সত্তরোর্ধ্ব একজন দাদা তার নাতি-নাতনিকে বাঁশ গাছ চেনাতে সারা শহর চষে বেড়িয়েছেন। অবশেষে পৈত্রিক নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে বাঁশঝাড় এবং কলাগাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে সমর্থ হন এই মানুষটি। গাছপালা পশুপাখি আর প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই একালের শিশুদের। প্রকৃতির কাছ থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি আমরা। তাই প্রকৃতিও আমাদের কোন ছাড় দিচ্ছে না।

তুমুল প্রতিযোগিতার যুগে যান্ত্রিকতা, যশ-খ্যাতি আর অর্থের পাহাড় গড়তে গিয়ে সন্তানকে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষাটুকু দিতেও ভুলে যাচ্ছি আমরা। পারিবারিক বন্ধনহীন ছন্নছাড়া পরিবেশে বড় হচ্ছে এই উত্তরসূরি প্রজš§। সে তার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে না। শেকড় খোঁজে না। দেশপ্রেমের শিক্ষা নেই। ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারণা নেই। সে শিশুর কোন আত্মবিশ্বাস নেই। সে কি করে আত্মমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হবে।

বোধহীন পরিবেশে বড় করছি এ শিশুদের। চাপিয়ে দেয়া দায় দিয়ে তার বিকাশমান মেধাকে স্পন্দনহীন করে তুলছি আমরা। গাদা গাদা বইয়ের বোঝা, প্রাইভেট মাস্টার, স্কুল, কোচিং, নাচ, গান, ছবি আঁকা এবং হুজুরের কাছে ধর্মশিক্ষা এসব কিছুই এ কোমলমতি শিশুর ওপর একসঙ্গে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। সে কোনটা পারবে, কোনটা তাকে দিয়ে হবে না এটুকু ভারবহন ক্ষমতা যাচাই করাও হয় না। যেন তাকে পারতেই হবে। ভালো রেজাল্ট করতেই হবে। ভালো স্কুলে চান্স পেতেই হবে। সেরা ক্ষুদে গানরাজ বা অলরাউন্ডার হতেই হবে। তা না হলে আমাদের এই জš§ যেন বৃথা যাবে। অভিভাবকদের ধারণা ঠিক এ রকমই! শিশুর প্রতি অভিভাবকত্ব ফলানো, শাসনের জালে আটকে রাখা, এটা করতে হবে, ওটা করতে পারবে না, এখনি পড়তে বসো- ইত্যাদি বাচনভঙ্গি এক ধরনের বাবা-মার নিত্যসঙ্গী। এর ব্যতিক্রম ঘটলে সন্তানের ওপর নেমে আসে শাস্তি। মা-বাবার কথা মতো না চললেই গায়ে হাত তোলা নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এ রকম চলতে থাকলে শিশুর আত্মবিশ্বাস কমে যায়। সমাজে অবাদে মিশতে পারে না। এ ধরনের বাবা-মায়েরা সন্তানের জন্য কঠিন, কঠোর নিয়মকানুন করে দেন। কিন্তু এর সুফল সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা দেন না।

এবার একটি বিজ্ঞাপনের কথা বলি। ‘তোমাদের আম লইয়া রচনা লেখন শেষ? তুমি কহ। একজন শিশু বলতে লাগলো- আম একটি সুস্বাদু, মিষ্টি ফল। একদিন এমন হইবে যে- আমকে আর বৃক্ষে হইতে হইবে না। আম থাকবে প্লাস্টিক বোতলে বা কাগজে মোরানো প্যাকেটে। আমরা মনের সুখে যখন খুশি আম খাইতে পারব। সেই আম যাকে আমরা আদর করে ফ্রুটি বলে ডাকি’। সব বিবেকবান মানুষকে প্রশ্ন করি, এ বিজ্ঞাপন থেকে শিশুরা কি শিখলো! বিজ্ঞাপনের প্রতি শিশুদের আগ্রহ প্রবল। বিজ্ঞাপন নির্মাণের ক্ষেত্রে শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা বিকাশের সুযোগ যেন রাখা হয়।

এমনিতেই আমাদের শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা চর্চার সুযোগ কম। ক্লাস, পরীক্ষা, কোচিং পড়া আর পড়ার চাপে অনেক সময় বোধহীন হয়ে বেড়ে উঠছে শিশুরা। ঘর থেকে বেরুলেই শিশুরা নানা রকম হয়রানি, বঞ্চনা ও প্রতারণার শিকার। শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, বিষযুক্ত ভেজাল খাবার শিশুদের নিত্যসঙ্গী। কোথায় যাবে ওরা। ফার্মের মুরগির মতো খাঁচায় বন্দী হয়ে আছে শিশুদের দুরন্তপনা। যেখানে গাছ নেই, সবুজ উদ্যান নেই, খেলার মাঠ নেই, সাঁতরাবার পুকুর নেই। আছে যান্ত্রিকতা, দূষিত বাতাস, বিষবাষ্প, ধূলোবালি, বৃষ্টিহীন ভ্যাপসা গরম, বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন। এসব যন্ত্রণাকে সাথী করে যেসব শিশুরা বড় হচ্ছে- তারা কী করে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক হবে বলতে পারেন?

এসব দায় শুধু সরকারের ওপর সব ছেড়ে দিলে চলবে না। অভিভাবক হিসেবে আমাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ছেলে মেয়ের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে অনেক বাবা-মা দায় এড়াতে চান। এটা ঠিক নয়। সিদ্ধানের মনোজগৎ সঠিকভাবে গড়ে তুলতে আর তার ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর করতে বাবা-মায়ের আচরণ হতে হবে ভারসাম্যপূর্ণ ও বন্ধুসুলভ। অপরিমিত কঠোরতা বা অতি স্নেহ সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সন্তানকে যে বাবা-মা অনেক ভালোবাসেন, সেটা সন্তানকে বুঝতে দিতে হবে এবং তার প্রকাশ হতে হবে সহজ ও সরলভাবে। সন্তান মা-বাবাকে কিছু বলতে চাইলে, তা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। কিসে বাচ্চারা খুশি হয়, কিসে দুঃখ পায় সেটা বুঝে আচরণ করতে হবে। তার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে তার নিজের জগৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে। ভালো কাজে উৎসাহ আর অনাকাক্সিক্ষত কাজের জন্য শাস্তির বদলে নিরুৎসাহিত করতে হবে। মা-বাবার সুন্দর সহনশীল সহানুভূতি-সম্পন্ন আচরণই শিশুর ভবিষ্যৎকে সুন্দর ও সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে পারে। সুস্থ ও সাবলীল পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশু আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে, পূরণ করবে ভবিষ্যতের প্রত্যাশা।

[লেখক : সাংবাদিক ও কৃষি-অর্থনীতি বিশ্লেষক]

writetomukul36@gmail.com