মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি কসমেটিকস বাজারজাত করছে এসপিএস

৫ জন গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক বাজারে ইংল্যান্ডের ব্রান্ডিং প্রতিষ্ঠান উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হাঙ্কেল কোম্পানির সাবান, পাউডার, লোশনসহ বিভিন্ন প্রসাধনী মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারজাত করছে বাংলাদেশি এসপিএস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ বছর ধরে এসপিএস নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ইয়ার্ডলে ব্রান্ডের সাবান, পাউডার, বডি স্প্রেসহ কসমেটিক্স আইটেমগুলো এভাবেই বাজারজাত করছে। বৈধভাবে আমদানি করা হলেও অবিক্রিত থাকার পর হাঙ্কেল ও উইপ্রো কোম্পানির বিভিন্ন প্রসাধনী এভাবে বাজারজাত করে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসপিএস। এমন অভিযোগের ভিত্তিত্বে এসপিএসের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোউত্তীর্ণ প্রায় ১০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার চৌধুরীর তত্ত্বাবধায়নে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বিদেশ থেকে আনা পণ্যের লেভের পরিবর্তনের মেশিনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অভিযানে শঙ্কর মন্ডল (৩৪), হারুন অর রশিদ (৪৫), মো. সবুজ আহমেদ (৩০), মো. মনিরুজ্জামান (২৩) এবং বিরেশ্বর মন্ডল (৩৬) নামে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ৩ দিনের রিমান্ড হেফাজতে পেয়েছে সিআইডি। বর্তমানে ওই ৫ জনকে রিমান্ড হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মূল হোতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার চৌধুরী জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি কোম্পানির সাবান, পাউডার, লোশন, বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন দেশের কসমেটিক্সের চাহিদা আছে। বিশেষ করে গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডিসহ অভিযাত এলাকাগুলোতে বিদেশি পণ্যের চাহিদা বেশি। বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসপিএস কোম্পানি দুটির পণ্যের একমাত্র আমদানিকারক। গত ২৫ আগস্ট। সিআইডি এসপিএস এন্টারপ্রাইজের মালিক সুধীর মন্ডলের ভাটারা থানার সাঈদনগর এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেখতে পায় বিদেশ থেকে আনা বিশেষ মেশিন দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের মেয়াদ উঠিয়ে নতুন মেয়াদ দেয়া হচ্ছে। অভিযানকালে হাতেনাতে কোম্পানির দুই ব্যবসায়ী পার্টনারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার জানান, প্রতিষ্ঠানটির বাজার সরবরাহ করা কত পরিমাণ কসমেটিক্স রয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এ বিষয়ে তদরকি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের কোন গাফলতি ছিল কিনা তা তদন্ত করা হবে। আমরা মানুষের কাছে অনুরোধ করতে চাই বিশেষ করে যারা বিদেশি পণ্য ব্যবহার করেন তাদের বলছি, হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির ইয়ার্ডি লোশন, সাবান, পাউডার আপাতত ব্যবহার বন্ধ রাখুন। আর বিদেশি পণ্য কেনার সময় ভালো করে উৎপাদন, কোম্পানির নাম ভালো করে যাচাই করুন।

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট ২০২০ , ৮ মহররম ১৪৪২, ২৮ আগস্ট ২০২০

১০ বছর ধরে

মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি কসমেটিকস বাজারজাত করছে এসপিএস

৫ জন গ্রেফতার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

আন্তর্জাতিক বাজারে ইংল্যান্ডের ব্রান্ডিং প্রতিষ্ঠান উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হাঙ্কেল কোম্পানির সাবান, পাউডার, লোশনসহ বিভিন্ন প্রসাধনী মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারজাত করছে বাংলাদেশি এসপিএস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। গত ১০ বছর ধরে এসপিএস নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ইয়ার্ডলে ব্রান্ডের সাবান, পাউডার, বডি স্প্রেসহ কসমেটিক্স আইটেমগুলো এভাবেই বাজারজাত করছে। বৈধভাবে আমদানি করা হলেও অবিক্রিত থাকার পর হাঙ্কেল ও উইপ্রো কোম্পানির বিভিন্ন প্রসাধনী এভাবে বাজারজাত করে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসপিএস। এমন অভিযোগের ভিত্তিত্বে এসপিএসের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোউত্তীর্ণ প্রায় ১০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার চৌধুরীর তত্ত্বাবধায়নে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বিদেশ থেকে আনা পণ্যের লেভের পরিবর্তনের মেশিনসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অভিযানে শঙ্কর মন্ডল (৩৪), হারুন অর রশিদ (৪৫), মো. সবুজ আহমেদ (৩০), মো. মনিরুজ্জামান (২৩) এবং বিরেশ্বর মন্ডল (৩৬) নামে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ৩ দিনের রিমান্ড হেফাজতে পেয়েছে সিআইডি। বর্তমানে ওই ৫ জনকে রিমান্ড হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মূল হোতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার চৌধুরী জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি কোম্পানির সাবান, পাউডার, লোশন, বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন দেশের কসমেটিক্সের চাহিদা আছে। বিশেষ করে গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডিসহ অভিযাত এলাকাগুলোতে বিদেশি পণ্যের চাহিদা বেশি। বাংলাদেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসপিএস কোম্পানি দুটির পণ্যের একমাত্র আমদানিকারক। গত ২৫ আগস্ট। সিআইডি এসপিএস এন্টারপ্রাইজের মালিক সুধীর মন্ডলের ভাটারা থানার সাঈদনগর এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেখতে পায় বিদেশ থেকে আনা বিশেষ মেশিন দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের মেয়াদ উঠিয়ে নতুন মেয়াদ দেয়া হচ্ছে। অভিযানকালে হাতেনাতে কোম্পানির দুই ব্যবসায়ী পার্টনারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার জানান, প্রতিষ্ঠানটির বাজার সরবরাহ করা কত পরিমাণ কসমেটিক্স রয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এ বিষয়ে তদরকি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের কোন গাফলতি ছিল কিনা তা তদন্ত করা হবে। আমরা মানুষের কাছে অনুরোধ করতে চাই বিশেষ করে যারা বিদেশি পণ্য ব্যবহার করেন তাদের বলছি, হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির ইয়ার্ডি লোশন, সাবান, পাউডার আপাতত ব্যবহার বন্ধ রাখুন। আর বিদেশি পণ্য কেনার সময় ভালো করে উৎপাদন, কোম্পানির নাম ভালো করে যাচাই করুন।