আত্রাইয়ে বেড়িবাঁধের কাজ না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে একটি বেড়িবাঁধের পুনরাকৃতির কাজ শুরু না করতেই ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার মান্দা উপজেলার জোঁকাহাট চকরামপুরে ১৯-২০ অর্থবছরের নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনস্থ পওর বিভাগ প্রকল্প পোল্ডার-সি এর আত্রাই নদীর ডান তীরে কি.মি. ৫০০০ হতে কি.মি. ৬৮০০ পর্যন্ত মোট ১৮০০ মিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ কাজ যার টেন্ডার আইডি নং ৪৫৫২৫৮ এবং চুক্তির প্রায় মূল্য ১০৪.০৭ কোটি টাকা। এ কাজে ১৯-২০ অর্থবছরে ৩৩.৪৭ লাখ টাকা আংশিক বরাদ্দ এলেও কোনরকম কাজ না করেই কাগজ কলমে আংশিক বাস্তবায়ন দেখিয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা স্থানীয় ঠিকাদারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিন জানা যায়, গত ১৭ সালে জেলার মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপর ইউনিয়নের জোঁকাহাট চকরামপুর নামক স্থানে আত্রাই নদীর ডান তীর সংলগ্ন বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া এই অংশটুকু দীর্ঘদিন সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে সম্প্রতি আত্রাই নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ভেঙ্গে যায় পাউবোর মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। এতে করে বন্যায় প্লাবিত হয় শতাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় শত শত বিঘা জমির ফসল। স্থানীয়রা জানান, গত ৩ বছরে এখানে এক কোদাল মাটি কিংবা এক টুকরা সিমেন্ট বালি বা বালির বস্তা ফেলা হয়নি।

চকরামপুর গ্রামের জাফর প্রামাণিক, সাইফুল ইসলাম, মোহসিনসহ স্থানীয় অনেকেই বলেন ১৭ সালে ভেঙ্গে যাওয়া নদী সংলগ্ন বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া অংশটি মেরামত না করায় সম্প্রতি আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে পানির ঢলে ভেঙ্গে যায় মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। আর বন্যায় প্লাবিত হয় শত শত গ্রাম। আমাদের দেখা মতে বাঁধের পুনরাকৃতিকরণ বিন্দুমাত্র কোন কাজ করা হয়নি। আমরা কোন কাজ করতেই দেখিনি।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার মতো কোন বরাদ্দ আমাদের নেই বলেই চেয়ে থাকতে হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিকে কিন্তু কোন লাভ হয় না। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ বছরের পর বছর ভাঙাই থাকে আর নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের নতুন নতুন অংশে ভাঙ্গছে আর প্রতিবছরই বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে শত শত গ্রাম। মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের চকরামপুর নামক ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁধের পুনরাকৃতিকরণের বিন্দুমাত্র কোন কাজ করা হয়নি বলে আমি জানি। এছাড়া ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধে মেরামতের কোন কাজ না করায় এবারের বন্যায় প্রধান বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে আমার ইউনিয়নের সবগুলোগ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল।

ঠিকাদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, যে সময় আমাকে কাজটি দেয়া হয় তখন নদীতে প্রতিনিয়তই পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কাজ পুরোপুরি শুরু করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু কিছু স্থানে কাজ করেছিলাম। যার কিছু বিল হিসেবে অফিস আমাকে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা দিয়েছে। কিন্তু আমি কাজ করেছি কয়েক লাখ টাকার। কাজ না করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যে।প্রকল্পের দায়িত্বরত উপ-বিভাগীয় প্রকোশলী সাখাওয়াত হোসেন অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন ঠিকাদারক যে কাজের বিল দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খাঁন জানান আমার সময় এসব কাজ করা হয়নি। এছাড়া ঠিকাদারের ১০ লাখ টাকা জামানত হিসেবে রয়েছে। তাই কাজ না করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হবে।

image
আরও খবর
৩ জেলায় নতুন শনাক্ত ৬৯
চিতলমারীতে বৃষ্টি জোয়ারে চিংড়িঘের ও ফসলের ক্ষতি
সুন্দরগঞ্জে শতাধিক পাম্প জব্দ করলেও থামেনি বালু উত্তোলন
তারাকান্দায় পুলিশের প্ররোচনায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর ধর্ষণ মামলা
দশমিনায় সড়ক ভেঙে নদীতে বিলীন : যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
শ্বশুর বাড়িতে জামাই নিহত
শিবগঞ্জে পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রহরীকে হত্যা
সুধারামে পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে কিশোরের মৃত্যু
শিবগঞ্জে ফেনসিডিল গ্রেফতার এক
সীতাকুণ্ডে বাস টার্মিনাল না থাকায় গাড়ি পার্কিংয়ে বিশৃঙ্খলা
ভোলায় জলোচ্ছ্বাসে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল লঞ্চঘাট বিধ্বস্ত
বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতে আলোচনা

শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০ , ৯ মহররম ১৪৪২, ২৯ আগস্ট ২০২০

আত্রাইয়ে বেড়িবাঁধের কাজ না করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রতিনিধি, নওগাঁ

image

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে একটি বেড়িবাঁধের পুনরাকৃতির কাজ শুরু না করতেই ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার মান্দা উপজেলার জোঁকাহাট চকরামপুরে ১৯-২০ অর্থবছরের নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনস্থ পওর বিভাগ প্রকল্প পোল্ডার-সি এর আত্রাই নদীর ডান তীরে কি.মি. ৫০০০ হতে কি.মি. ৬৮০০ পর্যন্ত মোট ১৮০০ মিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ কাজ যার টেন্ডার আইডি নং ৪৫৫২৫৮ এবং চুক্তির প্রায় মূল্য ১০৪.০৭ কোটি টাকা। এ কাজে ১৯-২০ অর্থবছরে ৩৩.৪৭ লাখ টাকা আংশিক বরাদ্দ এলেও কোনরকম কাজ না করেই কাগজ কলমে আংশিক বাস্তবায়ন দেখিয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা স্থানীয় ঠিকাদারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিন জানা যায়, গত ১৭ সালে জেলার মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপর ইউনিয়নের জোঁকাহাট চকরামপুর নামক স্থানে আত্রাই নদীর ডান তীর সংলগ্ন বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া এই অংশটুকু দীর্ঘদিন সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে সম্প্রতি আত্রাই নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ভেঙ্গে যায় পাউবোর মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। এতে করে বন্যায় প্লাবিত হয় শতাধিক গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় শত শত বিঘা জমির ফসল। স্থানীয়রা জানান, গত ৩ বছরে এখানে এক কোদাল মাটি কিংবা এক টুকরা সিমেন্ট বালি বা বালির বস্তা ফেলা হয়নি।

চকরামপুর গ্রামের জাফর প্রামাণিক, সাইফুল ইসলাম, মোহসিনসহ স্থানীয় অনেকেই বলেন ১৭ সালে ভেঙ্গে যাওয়া নদী সংলগ্ন বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া অংশটি মেরামত না করায় সম্প্রতি আত্রাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে পানির ঢলে ভেঙ্গে যায় মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। আর বন্যায় প্লাবিত হয় শত শত গ্রাম। আমাদের দেখা মতে বাঁধের পুনরাকৃতিকরণ বিন্দুমাত্র কোন কাজ করা হয়নি। আমরা কোন কাজ করতেই দেখিনি।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার মতো কোন বরাদ্দ আমাদের নেই বলেই চেয়ে থাকতে হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিকে কিন্তু কোন লাভ হয় না। বাঁধের ভাঙ্গা অংশ বছরের পর বছর ভাঙাই থাকে আর নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের নতুন নতুন অংশে ভাঙ্গছে আর প্রতিবছরই বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে শত শত গ্রাম। মান্দা-আত্রাই বেড়িবাঁধের চকরামপুর নামক ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁধের পুনরাকৃতিকরণের বিন্দুমাত্র কোন কাজ করা হয়নি বলে আমি জানি। এছাড়া ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধে মেরামতের কোন কাজ না করায় এবারের বন্যায় প্রধান বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে আমার ইউনিয়নের সবগুলোগ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল।

ঠিকাদার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, যে সময় আমাকে কাজটি দেয়া হয় তখন নদীতে প্রতিনিয়তই পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কাজ পুরোপুরি শুরু করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু কিছু স্থানে কাজ করেছিলাম। যার কিছু বিল হিসেবে অফিস আমাকে ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা দিয়েছে। কিন্তু আমি কাজ করেছি কয়েক লাখ টাকার। কাজ না করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যে।প্রকল্পের দায়িত্বরত উপ-বিভাগীয় প্রকোশলী সাখাওয়াত হোসেন অনিয়মের বিষয় অস্বীকার করে বলেন ঠিকাদারক যে কাজের বিল দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফউজ্জামান খাঁন জানান আমার সময় এসব কাজ করা হয়নি। এছাড়া ঠিকাদারের ১০ লাখ টাকা জামানত হিসেবে রয়েছে। তাই কাজ না করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হবে।