তারাকান্দায় পুলিশের প্ররোচনায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর ধর্ষণ মামলা

তারাকান্দায় জোর করে সই নিয়ে স্ত্রীকে বাদী বানিয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করানোর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এ মামলায় স্বামী জেলহাজতে রয়েছে। মামলার বাদী বিজ্ঞ আদালতে এফিডেভিট করে মামলার অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সভায় মামলাটিকে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবার জন্য ওসিকে বলা হয়েছে। তারাকান্দা উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের মো. মোস্তফা কামালের ছেলে মো. সজিব মিয়া একই উপজেলার কানুহারি গ্রামের তার ফুফাত বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর উভয় পরিবারের অজান্তে তারা ময়মনসিংহ জেলা নোটারি পাবলিক সমক্ষে এফিডেভিট মূলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর থেকে তারা চাকরির সুবাদে গাজীপুরে একত্রে বসবাস করতে থাকেন। ইতোমধ্যে সজিবের স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে। পরে দুই পরিবারে পক্ষ থেকে সুন্দর সমাধানের জন্য স্থানীয় গালাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়াকে অবগত করলে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে আইন মেনে গত ১৮ আগস্ট উভয় পরিবারের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে ছেলে-মেয়ের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। ঠিক এ সময়ে খবর পেয়ে কোন অভিযোগ ছাড়াই তারাকান্দা থানা পুলিশ ছেলে-মেয়ে দুইজনকেই ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ পরিবারের লোকজন থানায় গেলে থানার ওসি আবুল খায়ের সমাধান করে দিবেন বলে কালক্ষেপণ করে ওই রাতে স্ত্রীকে বাদী করে সজিবের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা নং (১০)১৮/৮/২০২০ দায়ের করেন। পরের দিন বাদীকে ছেড়ে দিয়ে সজিবকে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কোন উপায়ান্তর না দেখে সজিবের স্ত্রী গত ১৯ আগস্ট ময়মনসিংহ জেলা নোটারি পাবলিকে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ আকারে এক এফিডেভিট করেন। এফিডেভিটে উল্লে­খ করা হয়, থানা পুলিশ জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করাইয়া মিথ্যা বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে এই মামলা রুজু করেন। বাদী এবং আসামি পরস্পর সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী বলে এফিডেভিটে উল্লে­খ করে বলা হয় আসামিকে অন্যায়ভাবে হেনস্থা করার হীন মানসে এই মামলার সৃষ্টি করা হয়। গত ২৬ আগস্ট বুধবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় গালাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া তার বক্তব্যে সবিস্তারে এ অভিযোগ তুলে ধরে মিথ্যা মামলা থেকে সজিবকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানান। সভা বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস বিষয়টি আগে থেকেই অবগত আছেন বলে উল্লে­খ করে বলেন, ওসি সাহেব বিষয়টি আমার সাথে শেয়ার না করেই মামলা নিয়ে নিয়েছেন। এখন এই মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাধান করতে বলেন তিনি। তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, বিষয়টি ধর্ষণের ঘটনা। পুলিশ যেহেতু দুইজনকেই থানায় নিয়ে এসেছে কাজেই আইনী প্রক্রিয়া ছাড়া পুলিশের করার কিছু ছিল না। জোর করে সই নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন, বাদী নিজেই স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে অভিযোগ করেছে। কাজেই অভিযোগ দিলে এবং ঘটনার সত্যতা থাকলে আমরা মামলা নিতে বাধ্য। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।

শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০ , ৯ মহররম ১৪৪২, ২৯ আগস্ট ২০২০

তারাকান্দায় পুলিশের প্ররোচনায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর ধর্ষণ মামলা

প্রতিনিধি, তারাকান্দা (ময়মনসিংহ)

তারাকান্দায় জোর করে সই নিয়ে স্ত্রীকে বাদী বানিয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করানোর অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এ মামলায় স্বামী জেলহাজতে রয়েছে। মামলার বাদী বিজ্ঞ আদালতে এফিডেভিট করে মামলার অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সভায় মামলাটিকে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবার জন্য ওসিকে বলা হয়েছে। তারাকান্দা উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের মো. মোস্তফা কামালের ছেলে মো. সজিব মিয়া একই উপজেলার কানুহারি গ্রামের তার ফুফাত বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর উভয় পরিবারের অজান্তে তারা ময়মনসিংহ জেলা নোটারি পাবলিক সমক্ষে এফিডেভিট মূলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এরপর থেকে তারা চাকরির সুবাদে গাজীপুরে একত্রে বসবাস করতে থাকেন। ইতোমধ্যে সজিবের স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে। পরে দুই পরিবারে পক্ষ থেকে সুন্দর সমাধানের জন্য স্থানীয় গালাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়াকে অবগত করলে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে আইন মেনে গত ১৮ আগস্ট উভয় পরিবারের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে ছেলে-মেয়ের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। ঠিক এ সময়ে খবর পেয়ে কোন অভিযোগ ছাড়াই তারাকান্দা থানা পুলিশ ছেলে-মেয়ে দুইজনকেই ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ পরিবারের লোকজন থানায় গেলে থানার ওসি আবুল খায়ের সমাধান করে দিবেন বলে কালক্ষেপণ করে ওই রাতে স্ত্রীকে বাদী করে সজিবের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা নং (১০)১৮/৮/২০২০ দায়ের করেন। পরের দিন বাদীকে ছেড়ে দিয়ে সজিবকে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কোন উপায়ান্তর না দেখে সজিবের স্ত্রী গত ১৯ আগস্ট ময়মনসিংহ জেলা নোটারি পাবলিকে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ আকারে এক এফিডেভিট করেন। এফিডেভিটে উল্লে­খ করা হয়, থানা পুলিশ জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করাইয়া মিথ্যা বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে এই মামলা রুজু করেন। বাদী এবং আসামি পরস্পর সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী বলে এফিডেভিটে উল্লে­খ করে বলা হয় আসামিকে অন্যায়ভাবে হেনস্থা করার হীন মানসে এই মামলার সৃষ্টি করা হয়। গত ২৬ আগস্ট বুধবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় গালাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া তার বক্তব্যে সবিস্তারে এ অভিযোগ তুলে ধরে মিথ্যা মামলা থেকে সজিবকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানান। সভা বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস বিষয়টি আগে থেকেই অবগত আছেন বলে উল্লে­খ করে বলেন, ওসি সাহেব বিষয়টি আমার সাথে শেয়ার না করেই মামলা নিয়ে নিয়েছেন। এখন এই মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাধান করতে বলেন তিনি। তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, বিষয়টি ধর্ষণের ঘটনা। পুলিশ যেহেতু দুইজনকেই থানায় নিয়ে এসেছে কাজেই আইনী প্রক্রিয়া ছাড়া পুলিশের করার কিছু ছিল না। জোর করে সই নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন, বাদী নিজেই স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে অভিযোগ করেছে। কাজেই অভিযোগ দিলে এবং ঘটনার সত্যতা থাকলে আমরা মামলা নিতে বাধ্য। যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।