নব্য জেএমবির সদস্য গ্রেফতার

রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার পূর্ব বাসাবো থেকে নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য শিব্বির আহমাদ (২২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)। সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ৫টি জিহাদি বক্তব্য সংবলিত পুস্তক, ১টি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া শিব্বির নব্য জেএমবির শুরুর দিকের সদস্য ছিল। আফগানিস্তান, সিরিয়াসহ একাধিক দেশের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের সদস্যদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা শিব্বির নব্য জেএমবিকে সংগঠিত করছিল। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলা পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গিরা গ্রেফতার ও অভিযানে মারা যাওয়ার ঘটনায় শিব্বির নিস্ক্রিয় ছিল। সম্প্রতি সে ফের সক্রিয় হয়ে নব্য জেএমবিকে নতুনভাবে সংগঠিত করার কাজ শুরু করে।

কাউন্টার টেরোরিজমের (সিটির) উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শিব্বির নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য। বিদেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে জঙ্গিদের কাছে সে টাকা পাঠাতো বাংলাদেশ থেকে। গত কয়েক বছরে সে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করেছে দেশে-বিদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৩ দিনের রিমান্ড হেফাজতে এনেছে সিটিটিসি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। উপ-কমিশনার (ডিসি) সাইফুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজানে হামলার সময় শিব্বির সক্রিয় ছিল। হলি আর্টিজানে হামলার পর পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গিরা মারা যাওয়ায় এবং গ্রেফতার হওয়ায় শিব্বির কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। কিছু দিন পর সে আবার দেশি-বিদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিব্বির জানান, ঢাকার বাসাবো সাইদিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৭ সালে দাখিল পাস করে বিভিন্ন মসজিদের মুয়াজ্জিন ও সহকারী ইমামের কাজ করত। এর পাশাপাশি সে উগ্রবাদী ধারণার প্রচার ও জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় সে উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করতে গিয়ে নব্য জেএমবিতে জড়িয়ে পড়ে। নব্য জেএমবি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত হয়। শুরুতে সংগঠনটি মিডিয়া উইংয়ে কাজ করতেন তিনি। নব্য জেএমবির এক সময়ের আমির মুসার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মুসার মৃত্যুর পর সংগঠনে কিছুদিন নিস্ক্রিয় থাকে। হলি আর্টিজানে হামলা পরিবর্তী সময়ে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার এড়াতে বা ধরা পড়ার ভয়ে কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও ২০১৮ সালে শিব্বির আবার অনলাইনের মাধ্যমে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে আইএস অনুপ্রাণিত বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও আফগানিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশের আইএস অনুপ্রাণিত সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। জিজ্ঞাসাবাদে শিব্বির আরও জানান, তিনি দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশের বিভিন্ন নাগরিকের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। এছাড়া সিরিয়া ফেরত বিভিন্ন দেশের কিছু বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গেও অর্থ লেনদেন করেছে বলে জানান। এ ঘটনায় সবুজবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা করেছে পুলিশ।

আরও খবর
সবজির দাম লাগামহীন
করোনাভাইরাস শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা আরও বাড়ানোর আহ্বান কাদেরের
চাঁদাবাজির মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
নতুন ইস্যু ও রি-ইস্যু পাসপোর্টের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হচ্ছে
পদ্মার রেল প্রকল্পের ক্ষতিপূরণে দুর্নীতি সহ্য করা হবে না জেলা প্রশাসক
সোনালি আঁশের সোনালি দিন ফেরার ইঙ্গিত
সংক্রামক অণুবীজ শনাক্তে নতুন গবেষণাগার হচ্ছে
বাসা থেকে দম্পতির মরদেহ উদ্ধার
ইসির অধিকার ছিনতাই করে নিজের হাতে নিতে চাইছে সরকার রিজভী
৪২ মে.টন পলিথিন জব্দ
অপহরণের অভিযোগে ৬ কিশোর গ্রেফতার
সিলেটে উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে নাটকীয়তা বিব্রত পুলিশ
নদীতে বিলীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০ , ৯ মহররম ১৪৪২, ২৯ আগস্ট ২০২০

রাজধানীতে

নব্য জেএমবির সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার পূর্ব বাসাবো থেকে নব্য জেএমবির মিডিয়া শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য শিব্বির আহমাদ (২২) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট (সিটিটিসি)। সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ৫টি জিহাদি বক্তব্য সংবলিত পুস্তক, ১টি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া শিব্বির নব্য জেএমবির শুরুর দিকের সদস্য ছিল। আফগানিস্তান, সিরিয়াসহ একাধিক দেশের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের সদস্যদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা শিব্বির নব্য জেএমবিকে সংগঠিত করছিল। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলা পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গিরা গ্রেফতার ও অভিযানে মারা যাওয়ার ঘটনায় শিব্বির নিস্ক্রিয় ছিল। সম্প্রতি সে ফের সক্রিয় হয়ে নব্য জেএমবিকে নতুনভাবে সংগঠিত করার কাজ শুরু করে।

কাউন্টার টেরোরিজমের (সিটির) উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শিব্বির নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য। বিদেশ থেকে টাকা সংগ্রহ করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে জঙ্গিদের কাছে সে টাকা পাঠাতো বাংলাদেশ থেকে। গত কয়েক বছরে সে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করেছে দেশে-বিদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৩ দিনের রিমান্ড হেফাজতে এনেছে সিটিটিসি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। উপ-কমিশনার (ডিসি) সাইফুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজানে হামলার সময় শিব্বির সক্রিয় ছিল। হলি আর্টিজানে হামলার পর পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গিরা মারা যাওয়ায় এবং গ্রেফতার হওয়ায় শিব্বির কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। কিছু দিন পর সে আবার দেশি-বিদেশি জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিব্বির জানান, ঢাকার বাসাবো সাইদিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৭ সালে দাখিল পাস করে বিভিন্ন মসজিদের মুয়াজ্জিন ও সহকারী ইমামের কাজ করত। এর পাশাপাশি সে উগ্রবাদী ধারণার প্রচার ও জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় সে উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করতে গিয়ে নব্য জেএমবিতে জড়িয়ে পড়ে। নব্য জেএমবি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত হয়। শুরুতে সংগঠনটি মিডিয়া উইংয়ে কাজ করতেন তিনি। নব্য জেএমবির এক সময়ের আমির মুসার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মুসার মৃত্যুর পর সংগঠনে কিছুদিন নিস্ক্রিয় থাকে। হলি আর্টিজানে হামলা পরিবর্তী সময়ে পুলিশের জঙ্গি বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার এড়াতে বা ধরা পড়ার ভয়ে কিছুদিন চুপচাপ থাকলেও ২০১৮ সালে শিব্বির আবার অনলাইনের মাধ্যমে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে আইএস অনুপ্রাণিত বিদেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও আফগানিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশের আইএস অনুপ্রাণিত সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। জিজ্ঞাসাবাদে শিব্বির আরও জানান, তিনি দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশের বিভিন্ন নাগরিকের কাছ থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। এছাড়া সিরিয়া ফেরত বিভিন্ন দেশের কিছু বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গেও অর্থ লেনদেন করেছে বলে জানান। এ ঘটনায় সবুজবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা করেছে পুলিশ।