রাষ্ট্রধর্ম মীমাংসিত ইস্যু নয় আরোপিত ইস্যু

শিতাংশু গুহ

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ওপর সুপ্রিমকোর্টের যুগান্তকারী রায় সরকারকে সুযোগ এনে দিয়েছিল রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করার। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তখন রায়ের একাংশ মেনে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ বাদ দেয়, কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম রেখে দেয়। সুতরাং, যারা এখন এটি বাতিল চাচ্ছেন, তারা অযথা সময় নষ্ট করছেন। ইস্যুটি রাজনৈতিক, এর রাজনৈতিক সমাধান হতে হবে। চৈত্র মাসের ওয়াজ মাঘ মাসে করে লাভ নাই? এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং হাতে গোনা গুটিকয় মানুষ ছাড়া রাষ্ট্রধর্ম কেউ বাতিল চায় না। ধর্মনিরপেক্ষতার তো কোন প্রশ্নই নাই!

জন্মের সময় বাংলাদেশ উদার ছিল, এখন কনভার্টেড। ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঢুকেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মূলত: অন্য ধর্মকে স্বীকার করা বা সম্মান দেয়া, অথবা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধর্মীয় গ-ীর বাইরে নিয়ে আসা। দেশের মানুষ এর কোনটাই করতে রাজি নন, সুতরাং ওটা হবে না। এদের মতে, রাষ্ট্রের ভাষা থাকলে ধর্ম থাকতে ক্ষতি কি? সুতরাং, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, রাষ্ট্রভাষা আরবি করে দিলে কেমন হয়? দেশে এখন আর বাংলার ভবিষ্যৎ নাই! ধর্ম ভাষাকে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে। দেশ স্বাধীন হলে সবাই জোরেশোরে বলতেন, ‘ঢাকা হবে বাংলা ভাষার পীঠস্থান’। এখন আর কেউ তা বলেন-না।

হঠাৎ করে কেন ‘রাষ্ট্রধর্ম’ প্রসঙ্গ এলো? কারণ হচ্ছে, একজন এটর্নী বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার সাহা ১০ জনকে এক উকিল নোটিস দিয়ে বলেছেন, ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে ধর্মনিরপেক্ষতা চালু না করলে তিনি সুপ্রিমকোর্টে মামলা করবেন। নোটিস দিয়েছেন ১৬ আগস্ট, প্রত্যাহার করেছেন ১৯ তারিখ। লক্ষণীয় যে, তিনি মামলা করেননি, একটি উকিল নোটিস দিয়েছিলেন মাত্র! এতেই দেশে হৈহৈ-রৈরৈ পড়ে যায়। অশোক সাহার চৌদ্ধগোষ্ঠী উদ্ধার করা হয়। তার ধর্ম নিয়ে গালিগালাজ; তাকে ভারতীয় ‘দালাল’ বা নাগরিক বানিয়ে দেয়া হয়? তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুরা কত সুখে আছেন’।

একজন নাগরিক যে কাউকে একটি উকিল নোটিস দিতে বা একটি মামলা করতেই পারেন। এটি নাগরিক অধিকার। চটজলদি প্রত্যাহারের কারণ অশোক সাহা ব্যাখ্যা করেছেন, লোকে বলছে, ‘আরও কিছু আছে বটে’। একদা যারা রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন, তারাই এখন এর পৃষ্ঠপোষক। তাই, মামলায় লাভ হবে না? বরং বিচারপতিরা ‘বিব্রত’ হতে পারেন! অশোক সাহা নোটিস দিয়ে নিজে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেছেন। তবে তিনি তিনি সবাইকে জানান দিয়েছেন যে, রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে বিতর্ক আছে, বিষয়টি মীমাংসিত নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম রাষ্ট্রধর্ম হতে হবে কেন? ভারতে তাহলে ‘হিন্দুধর্ম’ রাষ্ট্রধর্ম হউক বা ইউরোপ-আমেরিকায় ‘খ্রিস্টধর্ম’?

বাংলাদেশে যারা ধর্মনিরপেক্ষতা চায় না, এরাই আবার ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হোটা চায় না। বিষয়টি ঠিক দ্বিচারিতা নয়, বরং কিছু লোকের মজ্জায় ঢুকে গেছে যে, মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে দেশটি ইসলামিক হতে হবে, কিন্তু অন্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে সেটি হতে হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ! অর্থাৎ গাছের খাওয়া, তলারও কুড়ানো? এই মানুষগুলো ইউরোপ-আমেরিকায় বেজায় গণতান্ত্রিক, কিন্তু নিজের দেশটি ইসলামিক চাই।! এরা অসাম্প্রদায়িক ভারত চায়, মুসলমানের বাংলাদেশ চায়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সাম্প্রদায়িকতা থাকলেও এরা জোরের সঙ্গে বলে, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদাযয়িকতার মডেল’।

এরশাদ ৯ জুন ১৯৮৮ সালে ভোটারবিহীন সংসদে মাত্র ১০ মিনিটে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ বিলটি পাস করেন। সেদিন ঢাকায় সংখ্যালঘুরা তাৎক্ষণিক একটি সমাবেশ করে। সেই মিছিলে আমি ছিলাম, এটি প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। কোন বড় দল এনিয়ে কোন বিক্ষোভ বা সমাবেশ করেনি, তারা দায়সারা বিবৃতি দিয়েছেন মাত্র। ১৫ দল, ৭ দল মাঝে-মধ্যে এনিয়ে কথা বলেছেন, কিন্তু কেউ আন্তরিক ছিলেন না, এখনও নন? বিএনপি-জামাত ইসলামী বাংলাদেশ চায়, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ-গণতন্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হলেও ধর্মনিরপেক্ষতার কফিনে শেষ পেরেকটি মেরে দিয়েছে। ইস্যুটি কিন্তু এরপরও জীবিত!!

সেদিন বুদ্ধিজীবীরা, বিশেষত: কবির চৌধুরী, হুমায়ুন আজাদ, সুফিয়া কামাল বরং ভালো ভূমিকা রেখেছেন। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সতর্ক করে বলেছেন, এতে দেশ মৌলবাদের দিকে এগিয়ে যাবে। সংখ্যালঘু নির্যাতন, নাস্তিক হত্যা, আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ, পুরোহিত হত্যা, ইসলামী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, আইএসের নীরব উপস্থিতি তার কথা প্রমাণ করে। ঐক্য পরিষদের জন্ম হয়েছিল রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের দাবিতে, এরা ৯ জুন কালো দিবস পালন করে। তবে রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ হবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। রাষ্ট্রধর্ম অত্যাচার করে না, অত্যাচার করে রাষ্ট্রধর্মে বিশ্বাসী মানুষ, প্রশাসন, ও রাষ্ট্র।

রাষ্ট্রধর্ম থাকুক বা না থাকুক, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত হোক বা না-হোক বাংলাদেশে হিন্দুর ওপর অত্যাচার চলবে, কারণ স্বধীনতার ৫০ বছর হলেও, মানুষগুলো এখনও পাকিস্তানি রয়ে গেছেন, বাঙালি হয়নি, হবেও না, বরং ‘বাঙালি মুসলমান’ হতে এরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ১৯৭২ সালে দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন সারা দেশে একযোগে প্রতিমা ভাঙা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রধম ছিল না। সরকার ধামাচাপা দিয়েছিল। বিচার হয়নি। আজও হচ্ছে না। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চেহারা পাশাপাশি দেখুন, একই চেহারা, মানুষগুলো একই! শুধু তফাৎ, পাকিস্তান সব হিন্দুকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে।

২২ আগস্ট, ২০২০। নিউইয়র্ক।

guhasb@gmail.com

শনিবার, ২৯ আগস্ট ২০২০ , ৯ মহররম ১৪৪২, ২৯ আগস্ট ২০২০

রাষ্ট্রধর্ম মীমাংসিত ইস্যু নয় আরোপিত ইস্যু

শিতাংশু গুহ

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ওপর সুপ্রিমকোর্টের যুগান্তকারী রায় সরকারকে সুযোগ এনে দিয়েছিল রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করার। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তখন রায়ের একাংশ মেনে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ বাদ দেয়, কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম রেখে দেয়। সুতরাং, যারা এখন এটি বাতিল চাচ্ছেন, তারা অযথা সময় নষ্ট করছেন। ইস্যুটি রাজনৈতিক, এর রাজনৈতিক সমাধান হতে হবে। চৈত্র মাসের ওয়াজ মাঘ মাসে করে লাভ নাই? এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং হাতে গোনা গুটিকয় মানুষ ছাড়া রাষ্ট্রধর্ম কেউ বাতিল চায় না। ধর্মনিরপেক্ষতার তো কোন প্রশ্নই নাই!

জন্মের সময় বাংলাদেশ উদার ছিল, এখন কনভার্টেড। ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঢুকেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মূলত: অন্য ধর্মকে স্বীকার করা বা সম্মান দেয়া, অথবা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধর্মীয় গ-ীর বাইরে নিয়ে আসা। দেশের মানুষ এর কোনটাই করতে রাজি নন, সুতরাং ওটা হবে না। এদের মতে, রাষ্ট্রের ভাষা থাকলে ধর্ম থাকতে ক্ষতি কি? সুতরাং, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, রাষ্ট্রভাষা আরবি করে দিলে কেমন হয়? দেশে এখন আর বাংলার ভবিষ্যৎ নাই! ধর্ম ভাষাকে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে। দেশ স্বাধীন হলে সবাই জোরেশোরে বলতেন, ‘ঢাকা হবে বাংলা ভাষার পীঠস্থান’। এখন আর কেউ তা বলেন-না।

হঠাৎ করে কেন ‘রাষ্ট্রধর্ম’ প্রসঙ্গ এলো? কারণ হচ্ছে, একজন এটর্নী বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার সাহা ১০ জনকে এক উকিল নোটিস দিয়ে বলেছেন, ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করে ধর্মনিরপেক্ষতা চালু না করলে তিনি সুপ্রিমকোর্টে মামলা করবেন। নোটিস দিয়েছেন ১৬ আগস্ট, প্রত্যাহার করেছেন ১৯ তারিখ। লক্ষণীয় যে, তিনি মামলা করেননি, একটি উকিল নোটিস দিয়েছিলেন মাত্র! এতেই দেশে হৈহৈ-রৈরৈ পড়ে যায়। অশোক সাহার চৌদ্ধগোষ্ঠী উদ্ধার করা হয়। তার ধর্ম নিয়ে গালিগালাজ; তাকে ভারতীয় ‘দালাল’ বা নাগরিক বানিয়ে দেয়া হয়? তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুরা কত সুখে আছেন’।

একজন নাগরিক যে কাউকে একটি উকিল নোটিস দিতে বা একটি মামলা করতেই পারেন। এটি নাগরিক অধিকার। চটজলদি প্রত্যাহারের কারণ অশোক সাহা ব্যাখ্যা করেছেন, লোকে বলছে, ‘আরও কিছু আছে বটে’। একদা যারা রাষ্ট্রধর্ম বাদ দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন, তারাই এখন এর পৃষ্ঠপোষক। তাই, মামলায় লাভ হবে না? বরং বিচারপতিরা ‘বিব্রত’ হতে পারেন! অশোক সাহা নোটিস দিয়ে নিজে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেছেন। তবে তিনি তিনি সবাইকে জানান দিয়েছেন যে, রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে বিতর্ক আছে, বিষয়টি মীমাংসিত নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্ম রাষ্ট্রধর্ম হতে হবে কেন? ভারতে তাহলে ‘হিন্দুধর্ম’ রাষ্ট্রধর্ম হউক বা ইউরোপ-আমেরিকায় ‘খ্রিস্টধর্ম’?

বাংলাদেশে যারা ধর্মনিরপেক্ষতা চায় না, এরাই আবার ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হোটা চায় না। বিষয়টি ঠিক দ্বিচারিতা নয়, বরং কিছু লোকের মজ্জায় ঢুকে গেছে যে, মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে দেশটি ইসলামিক হতে হবে, কিন্তু অন্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে সেটি হতে হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ! অর্থাৎ গাছের খাওয়া, তলারও কুড়ানো? এই মানুষগুলো ইউরোপ-আমেরিকায় বেজায় গণতান্ত্রিক, কিন্তু নিজের দেশটি ইসলামিক চাই।! এরা অসাম্প্রদায়িক ভারত চায়, মুসলমানের বাংলাদেশ চায়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সাম্প্রদায়িকতা থাকলেও এরা জোরের সঙ্গে বলে, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদাযয়িকতার মডেল’।

এরশাদ ৯ জুন ১৯৮৮ সালে ভোটারবিহীন সংসদে মাত্র ১০ মিনিটে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ বিলটি পাস করেন। সেদিন ঢাকায় সংখ্যালঘুরা তাৎক্ষণিক একটি সমাবেশ করে। সেই মিছিলে আমি ছিলাম, এটি প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়। কোন বড় দল এনিয়ে কোন বিক্ষোভ বা সমাবেশ করেনি, তারা দায়সারা বিবৃতি দিয়েছেন মাত্র। ১৫ দল, ৭ দল মাঝে-মধ্যে এনিয়ে কথা বলেছেন, কিন্তু কেউ আন্তরিক ছিলেন না, এখনও নন? বিএনপি-জামাত ইসলামী বাংলাদেশ চায়, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ-গণতন্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতবদ্ধ হলেও ধর্মনিরপেক্ষতার কফিনে শেষ পেরেকটি মেরে দিয়েছে। ইস্যুটি কিন্তু এরপরও জীবিত!!

সেদিন বুদ্ধিজীবীরা, বিশেষত: কবির চৌধুরী, হুমায়ুন আজাদ, সুফিয়া কামাল বরং ভালো ভূমিকা রেখেছেন। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সতর্ক করে বলেছেন, এতে দেশ মৌলবাদের দিকে এগিয়ে যাবে। সংখ্যালঘু নির্যাতন, নাস্তিক হত্যা, আহমদিয়াদের ওপর আক্রমণ, পুরোহিত হত্যা, ইসলামী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, আইএসের নীরব উপস্থিতি তার কথা প্রমাণ করে। ঐক্য পরিষদের জন্ম হয়েছিল রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের দাবিতে, এরা ৯ জুন কালো দিবস পালন করে। তবে রাষ্ট্রধর্ম না থাকলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ হবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। রাষ্ট্রধর্ম অত্যাচার করে না, অত্যাচার করে রাষ্ট্রধর্মে বিশ্বাসী মানুষ, প্রশাসন, ও রাষ্ট্র।

রাষ্ট্রধর্ম থাকুক বা না থাকুক, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠিত হোক বা না-হোক বাংলাদেশে হিন্দুর ওপর অত্যাচার চলবে, কারণ স্বধীনতার ৫০ বছর হলেও, মানুষগুলো এখনও পাকিস্তানি রয়ে গেছেন, বাঙালি হয়নি, হবেও না, বরং ‘বাঙালি মুসলমান’ হতে এরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ১৯৭২ সালে দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন সারা দেশে একযোগে প্রতিমা ভাঙা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রধম ছিল না। সরকার ধামাচাপা দিয়েছিল। বিচার হয়নি। আজও হচ্ছে না। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চেহারা পাশাপাশি দেখুন, একই চেহারা, মানুষগুলো একই! শুধু তফাৎ, পাকিস্তান সব হিন্দুকে তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে।

২২ আগস্ট, ২০২০। নিউইয়র্ক।

guhasb@gmail.com