দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

জাতীয় গ্রিডের ঈশ্বরদী সাবস্টেশনে বড় ধরনের গোলযোগের কারণে শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলায় একযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ফরিদপুর অঞ্চল মিলিয়ে ২১টি জেলার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ দিনভরই বিদ্যুৎ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ছিল। এ গোলযোগের কারণে বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ভোলা, ভেড়ামাড়া ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয় দেশের পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায়।

বিদ্যুতের এ বিপর্যয়ের কারণে একুশ জেলার শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম জোনের উৎপাদন ইউনিটগুলো চালু করতে না পারায় দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক হয়নি। ভাদ্র মাসের প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরমে অস্বাভাবিক লোডসেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত ছিল দুপুর পর্যন্ত। পশ্চিম জোনে প্রায় ১২শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে দুপুর ২টা পর্যন্ত সরবারহ ছিল ৫শ মেগাওয়াটেরও মত। দিনের শেষভাগে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন ও সরবারহ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।

শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে আকষ্মিকভাবেই দেশের ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্টার কানেক্টরের পশ্চিমাঞ্চলের মূল সাবস্টেশন ঈশ্বরদীতে গোলযোগ সৃষ্টি হলে একযোগে পশ্চিম জোনের সব উৎপাদন ইউনিটসহ গ্রিড সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে। এ অবস্থাতেই পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ঈশ্বরদী সাবস্টেশন ও খুলনা রিজিওনাল লোড ডেসপাসসেন্টার ছাড়াও বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়া গ্রিড সাবস্টেশনগুলোর প্রকৌশলী ও কর্মীরা ‘অপরেশন ব্লাক আউট’ পদ্ধতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তবে গোলযোগের মূল কেন্দ্রস্থল ঈশ্বরদী সাবস্টেশনে ব্রেকার ও বাজবারসহ গ্রিড লাইন কানেক্টরগুলো যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন করে পশ্চিম জোনের জাতীয় গ্রিড লাইনে সঞ্চালন ব্যবস্থা ফেরাতে দুই বা ততোধিক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। সকাল সাড়ে ১২টার পরে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের গ্রিড সাবস্টেশনসহ ৩৩ কেভি সাবস্টেশনগুলোতে স্টেশনÑলোড চালু করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ১১ কেভি ফিডারের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরহ শুরু হলেও ব্যাপক ঘাটতির কারণে বিকেলে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবারহ পূণর্বাসন সম্ভব হয়েছে। বরিশালে সামিট পাওয়ারের ১১০ মেগাওয়টের ইউনিটটি দুপুর ১টার পরে চালু হলেও ভোলার ২২৫ মেগাওয়াটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি চালুর চেষ্টা চলছিল। একইভাবে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ছাড়াও খুলনা ও ভেড়ামাড়ার পাওয়ার স্টেশনগুলো উৎপাদনে ফেরাতে সময় লাগায় পূর্বজোন থেকে সীমিত কিছু বিদ্যুৎ এনে পশ্চিম জোনের পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করে পিডিবি ও পিজিসিবি ।

শনিবার সকালের এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারনে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলার সাড়ে ৩ কোটি মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েন। দুপুর ২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবারহ পুনর্বাসন হয়নি। তবে দুপরের পরে পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বরিশালে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় পুরোটাই সররবরাহ ছিল।

আরও খবর
আ’লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ
করোনায় একদিনে মৃত্যু ৪ আক্রান্ত ৬৭
সারাদেশে লুটপাট-দুর্নীতি বন্ধে ঐক্যের ডাক
সাংবাদিক-সাহিত্যিক রাহাত খানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা
হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামি কয়েক ঘণ্টায় আটক
শিক্ষার মানোন্নয়নে সুলতান মোল্লা স্কুলে কাজ করবে গুড নেইবারস
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা তাইন্দংয়ে পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা ভগবান টিলা
রাতে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে : নৌমন্ত্রী
সিলেটে ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংকের আড়ালে অবৈধ রক্ত ব্যবসা
ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ : বিয়াম স্কুলের ২ শিক্ষক বরখাস্ত তদন্ত কমিটি গঠন
দুর্নীতির দায়ে প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধ সভাপতি পলাতক আসামি
শামুক ভাঙায় লাভবান চিংড়ি খামারি, ঠকছেন নারীরা

রবিবার, ৩০ আগস্ট ২০২০ , ১০ মহররম ১৪৪২, ১৪ ভাদ্র ১৪২৭

জাতীয় গ্রিডে গোলযোগ

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

জাতীয় গ্রিডের ঈশ্বরদী সাবস্টেশনে বড় ধরনের গোলযোগের কারণে শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলায় একযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ফরিদপুর অঞ্চল মিলিয়ে ২১টি জেলার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ দিনভরই বিদ্যুৎ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ছিল। এ গোলযোগের কারণে বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ভোলা, ভেড়ামাড়া ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয় দেশের পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায়।

বিদ্যুতের এ বিপর্যয়ের কারণে একুশ জেলার শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম জোনের উৎপাদন ইউনিটগুলো চালু করতে না পারায় দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক হয়নি। ভাদ্র মাসের প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরমে অস্বাভাবিক লোডসেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত ছিল দুপুর পর্যন্ত। পশ্চিম জোনে প্রায় ১২শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে দুপুর ২টা পর্যন্ত সরবারহ ছিল ৫শ মেগাওয়াটেরও মত। দিনের শেষভাগে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন ও সরবারহ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।

শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে আকষ্মিকভাবেই দেশের ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্টার কানেক্টরের পশ্চিমাঞ্চলের মূল সাবস্টেশন ঈশ্বরদীতে গোলযোগ সৃষ্টি হলে একযোগে পশ্চিম জোনের সব উৎপাদন ইউনিটসহ গ্রিড সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে। এ অবস্থাতেই পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ঈশ্বরদী সাবস্টেশন ও খুলনা রিজিওনাল লোড ডেসপাসসেন্টার ছাড়াও বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়া গ্রিড সাবস্টেশনগুলোর প্রকৌশলী ও কর্মীরা ‘অপরেশন ব্লাক আউট’ পদ্ধতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তবে গোলযোগের মূল কেন্দ্রস্থল ঈশ্বরদী সাবস্টেশনে ব্রেকার ও বাজবারসহ গ্রিড লাইন কানেক্টরগুলো যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন করে পশ্চিম জোনের জাতীয় গ্রিড লাইনে সঞ্চালন ব্যবস্থা ফেরাতে দুই বা ততোধিক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। সকাল সাড়ে ১২টার পরে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের গ্রিড সাবস্টেশনসহ ৩৩ কেভি সাবস্টেশনগুলোতে স্টেশনÑলোড চালু করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ১১ কেভি ফিডারের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরহ শুরু হলেও ব্যাপক ঘাটতির কারণে বিকেলে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবারহ পূণর্বাসন সম্ভব হয়েছে। বরিশালে সামিট পাওয়ারের ১১০ মেগাওয়টের ইউনিটটি দুপুর ১টার পরে চালু হলেও ভোলার ২২৫ মেগাওয়াটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি চালুর চেষ্টা চলছিল। একইভাবে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ছাড়াও খুলনা ও ভেড়ামাড়ার পাওয়ার স্টেশনগুলো উৎপাদনে ফেরাতে সময় লাগায় পূর্বজোন থেকে সীমিত কিছু বিদ্যুৎ এনে পশ্চিম জোনের পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করে পিডিবি ও পিজিসিবি ।

শনিবার সকালের এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারনে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলার সাড়ে ৩ কোটি মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েন। দুপুর ২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবারহ পুনর্বাসন হয়নি। তবে দুপরের পরে পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বরিশালে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় পুরোটাই সররবরাহ ছিল।