‘বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু’

বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক মুক্তিই নয়, তিনি বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা যদি তার রাজনীতি ও অর্থনীতির দিকে তাকাই তাহলে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উপলদ্ধি করতে পারব। গত শনিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু। অনলাইনে আয়োজিত এ সভায় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সারাদেশের চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনের ২০০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান ও মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরও অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এমএ কাশেম, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, মীর নাসির হোসেন, একে আজাদ এবং আবদুল মাতলুব আহমেদ।

প্রধান আলোচক আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার, তা তিনি পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই উপলব্ধি করতেন। বঙ্গবন্ধু কখনই পাকিস্তানকে বিশ্বাস করেননি। বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন তা নয়, তিনি অর্থনৈতিক মুক্তিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এটা আমরা যদি তার রাজনীতি ও অর্থনীতির দিকে তাকাই তাহলে স্পষ্টভাবে উপলদ্ধি করতে পারব। বঙ্গবন্ধু যখন সুযোগ পেয়েছেন তখনই তিনি বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ এ দেশে যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রিসভায় তিনি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এরপর বর্তমানে যে কক্সবাজারে পর্যটন কেন্দ্র, তা তিনি স্থাপন করেছেন। আজকের যে কৃষি, তার জন্য তিনি কৃষিতে জোর দিয়ে জুট, সার কারখানা সৃষ্টি করেছেন। তেমনিভাবে তিনি যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন তিনি বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত করতে চেয়েছেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু না হলে আজও আমরা পাকিস্তানের দাসত্ব করতাম। বঙ্গবন্ধু নিজে কখনও ভাবতে পারতেন না স্বাধীনতার পরে তাকে কেউ হত্যা করতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রের চারটি মূলস্তম্ভ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সবসময় গণমানুষর জন্য স্বাধীনতা ও অর্থনেতিক মুক্তি চেয়েছেন। পৃথিবী দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক ও শোষিত শ্রেণী। তিনি সবসময় শোষিত শ্রেণীর পক্ষে নিয়েছেন।

তিনি নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে পরিণত করে বাংলাদেশ নিয়ে এসেছেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে ছিল ফরেন একচেঞ্জ শতাংশ যা ছিল সব পাকিস্তানিদের দখলে। সেই সময় ৯৫ শতাংশ ইন্ডাস্ট্রির মালিক ছিল পাকিস্তানিরা। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সহযোগিতায় দেশেও জনগণ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এবং দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করে যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

স্বাগত বক্তবে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে সব ধরনের উন্নয়নের বীজ বপন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। আজ তার সুফল পাচ্ছে দেশের জনগণ। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আশির দশকের বাংলাদেশ বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থানে পৌঁছাতে পারত এবং এতদিনে উন্নত দেশের কাতারেও নাম লেখাত। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর ২১ বছর জাতির পিতার হত্যার বিচার পাওয়া যায়নি। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শাসন এবং চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে এবং দুর্নীতির ক্যান্সার সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১, ২০৪১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে।

মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১ মহররম ১৪৪২, ১৫ ভাদ্র ১৪২৭

এফবিসিসিআই’র আলোচনা সভা

‘বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু’

বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক মুক্তিই নয়, তিনি বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা যদি তার রাজনীতি ও অর্থনীতির দিকে তাকাই তাহলে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উপলদ্ধি করতে পারব। গত শনিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আমির হোসেন আমু। অনলাইনে আয়োজিত এ সভায় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সারাদেশের চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনের ২০০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান ও মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরও অংশ নেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এমএ কাশেম, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, মীর নাসির হোসেন, একে আজাদ এবং আবদুল মাতলুব আহমেদ।

প্রধান আলোচক আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার, তা তিনি পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই উপলব্ধি করতেন। বঙ্গবন্ধু কখনই পাকিস্তানকে বিশ্বাস করেননি। বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন তা নয়, তিনি অর্থনৈতিক মুক্তিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এটা আমরা যদি তার রাজনীতি ও অর্থনীতির দিকে তাকাই তাহলে স্পষ্টভাবে উপলদ্ধি করতে পারব। বঙ্গবন্ধু যখন সুযোগ পেয়েছেন তখনই তিনি বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ এ দেশে যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রিসভায় তিনি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এরপর বর্তমানে যে কক্সবাজারে পর্যটন কেন্দ্র, তা তিনি স্থাপন করেছেন। আজকের যে কৃষি, তার জন্য তিনি কৃষিতে জোর দিয়ে জুট, সার কারখানা সৃষ্টি করেছেন। তেমনিভাবে তিনি যেভাবে সুযোগ পেয়েছেন তিনি বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত করতে চেয়েছেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু না হলে আজও আমরা পাকিস্তানের দাসত্ব করতাম। বঙ্গবন্ধু নিজে কখনও ভাবতে পারতেন না স্বাধীনতার পরে তাকে কেউ হত্যা করতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রাষ্ট্রের চারটি মূলস্তম্ভ গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সবসময় গণমানুষর জন্য স্বাধীনতা ও অর্থনেতিক মুক্তি চেয়েছেন। পৃথিবী দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক ও শোষিত শ্রেণী। তিনি সবসময় শোষিত শ্রেণীর পক্ষে নিয়েছেন।

তিনি নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে পরিণত করে বাংলাদেশ নিয়ে এসেছেন।

সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে ছিল ফরেন একচেঞ্জ শতাংশ যা ছিল সব পাকিস্তানিদের দখলে। সেই সময় ৯৫ শতাংশ ইন্ডাস্ট্রির মালিক ছিল পাকিস্তানিরা। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর সহযোগিতায় দেশেও জনগণ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এবং দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করে যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

স্বাগত বক্তবে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে সব ধরনের উন্নয়নের বীজ বপন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। আজ তার সুফল পাচ্ছে দেশের জনগণ। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আশির দশকের বাংলাদেশ বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থানে পৌঁছাতে পারত এবং এতদিনে উন্নত দেশের কাতারেও নাম লেখাত। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর ২১ বছর জাতির পিতার হত্যার বিচার পাওয়া যায়নি। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শাসন এবং চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে এবং দুর্নীতির ক্যান্সার সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১, ২০৪১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে।