জিয়া-খালেদা-তারেক সবার হাতেই রক্তের দাগ : প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তাদের ছেলে তারেক রহমান- সবার হাতে রক্তের দাগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান গুম-খুনের রাজনীতি শুরু করে গেছেন। যার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে মানুষ হত্যা করেছেন। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি। ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের যে চরিত্র সেই একই চরিত্র তার স্ত্রী খালেদা জিয়ারও। একের পর এক হত্যাকা-, অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে কত মানুষকে হত্যা এবং সেগুলোর বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি আইন করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। আর খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে যাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। তারা এভাবেই রাজনীতি করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গুম-খুনের কথা যারা বলে তাদের প্রশ্ন, এই গুম-খুন শুরু করেছে কে? এটা তো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর অফিসাররা ছুটিতে ছিল, চলে আসছে, তাদের মেরে ফেলেছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি। সাধারণ সৈনিক, তাদের হত্যা করেছে, তাদের পরিবার লাশ পায়নি। তারা একটা চাকরিও পায়নি। অমানবিক জীবনযাপন করেছে। এভাবে সারা দেশকে রক্তাক্ত করেছে শুধু ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার জন্য শিক্ষাদীক্ষা তো নাই। শুধু গু-ামি আর অত্যাচার, খুনের রাজনীতি কায়েম করতে চেয়েছিল। তাদের অপকর্ম ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’ আলোচনা সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল নাম মুছে ফেলবে, আমাদের বিজয়ের ইতিহাস মুছে ফেলবে। লাখো শহীদের মহান ত্যাগ- সেটাও মুছে ফেলবে, লাখো মা বোনেরা, তাদের ওপর কী নির্মম অত্যাচার করেছে সেটাও মুছে ফেলবে। যে আদর্শের ওপর দেশ স্বাধীন সেই আদর্শটাই তার ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে। যে কারণে সরকার গঠনের পর তো প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা দেশের উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছি। শিক্ষা-দীক্ষার দিকে নজর দিয়েছি। দেশের সম্মান ফেরানোর চেষ্টা করছি।’ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভাট্টচার্য অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তিনি বলেন, ‘যে সম্মান ভূলণ্ঠিত করেছিল ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে, আমরা সেই হত্যাকারীদের বিচার করেছি। হত্যাকারীদের বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ন্যায়বিচার হয় সেটা নিশ্চিত করেছি। এখনও আসামিদের কেউ কেউ পলাতক আছে, কিন্তু তারপরেও বিচার করেছি। হ্যাঁ এটা ঠিক, ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইতিহাস একদিন বের হবে, এসব খবরও বের হবে। এগুলো পাওয়া যাবে, এটা এক সময় না এক সময় আসবে।’ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলো শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে, সেটাই চাই। ত্যাগের মধ্য দিয়েই শান্তি, ভোগের মধ্যে না। বাংলার মানুষের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু কিছু নিয়ে যাননি, দিয়েই গেছেন। শেষ পর্যন্ত রক্তটাও দিয়ে গেছেন। আসলে কোন আত্মত্যাগ বৃথা যায় না। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছেন, এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন, ওইটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা যেন গড়তে পারি। দেশের ভবিষ্যৎটা যেভাবে আমরা তোমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য গড়ে দিয়ে যেতে চাচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে তোমাদের নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে শিক্ষা স্বাস্থ্য, সব দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। ঠিক সেভাবে দেশটা যেন এগিয়ে যায়, সেটাই তোমাদের কাছ থেকে আমরা আশা করছি। তোমরা সেভাবেই এগিয়ে যাও।’

image

প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রকাশিত ‘মাতৃভূমি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন

আরও খবর
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কারবালার বিয়োগান্তক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে প্রধানমন্ত্রী
প্রবীণ সাংবাদিক ফেরদৌস কোরেশীর জীবনাবসান
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু
সম্রাট ও খালেদের সহযোগীরা ফের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায়
পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ৭ পদে রদবদল
টেকনাফে স্থানীয়-রোহিঙ্গাদের জন্য দুশ’ শয্যাবিশিষ্ট আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন
দেশে পৌঁছেছে সিআর দত্তের মরদেহ
আজ খুলছে সাজেক ভ্যালি
কাদামাটিতে অর্ধেক পুঁতে রাখা শিশুর লাশ উদ্ধার
জঞ্জাল সরিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানোর উদ্যোগ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
রংপুর উপজেলা যুবদল কমিটি নিয়ে বাণিজ্য
ক্যাভার্ডভ্যান চাপায় ২ সহোদরসহ ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে সপরিবারে এলাকাছাড়া

মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১১ মহররম ১৪৪২, ১৫ ভাদ্র ১৪২৭

জিয়া-খালেদা-তারেক সবার হাতেই রক্তের দাগ : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

প্রধানমন্ত্রী গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রকাশিত ‘মাতৃভূমি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, তার স্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তাদের ছেলে তারেক রহমান- সবার হাতে রক্তের দাগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান গুম-খুনের রাজনীতি শুরু করে গেছেন। যার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে মানুষ হত্যা করেছেন। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি। ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের যে চরিত্র সেই একই চরিত্র তার স্ত্রী খালেদা জিয়ারও। একের পর এক হত্যাকা-, অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে কত মানুষকে হত্যা এবং সেগুলোর বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি আইন করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিয়ে খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। আর খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেই অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে যাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে তাদের ইনডেমনিটি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে। তারা এভাবেই রাজনীতি করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গুম-খুনের কথা যারা বলে তাদের প্রশ্ন, এই গুম-খুন শুরু করেছে কে? এটা তো জিয়াউর রহমানই শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর অফিসাররা ছুটিতে ছিল, চলে আসছে, তাদের মেরে ফেলেছে। তাদের পরিবার লাশও পায়নি। সাধারণ সৈনিক, তাদের হত্যা করেছে, তাদের পরিবার লাশ পায়নি। তারা একটা চাকরিও পায়নি। অমানবিক জীবনযাপন করেছে। এভাবে সারা দেশকে রক্তাক্ত করেছে শুধু ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করার জন্য শিক্ষাদীক্ষা তো নাই। শুধু গু-ামি আর অত্যাচার, খুনের রাজনীতি কায়েম করতে চেয়েছিল। তাদের অপকর্ম ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’ আলোচনা সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল নাম মুছে ফেলবে, আমাদের বিজয়ের ইতিহাস মুছে ফেলবে। লাখো শহীদের মহান ত্যাগ- সেটাও মুছে ফেলবে, লাখো মা বোনেরা, তাদের ওপর কী নির্মম অত্যাচার করেছে সেটাও মুছে ফেলবে। যে আদর্শের ওপর দেশ স্বাধীন সেই আদর্শটাই তার ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে। যে কারণে সরকার গঠনের পর তো প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা দেশের উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছি। শিক্ষা-দীক্ষার দিকে নজর দিয়েছি। দেশের সম্মান ফেরানোর চেষ্টা করছি।’ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভাট্টচার্য অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তিনি বলেন, ‘যে সম্মান ভূলণ্ঠিত করেছিল ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে, আমরা সেই হত্যাকারীদের বিচার করেছি। হত্যাকারীদের বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যে ন্যায়বিচার হয় সেটা নিশ্চিত করেছি। এখনও আসামিদের কেউ কেউ পলাতক আছে, কিন্তু তারপরেও বিচার করেছি। হ্যাঁ এটা ঠিক, ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ইতিহাস একদিন বের হবে, এসব খবরও বের হবে। এগুলো পাওয়া যাবে, এটা এক সময় না এক সময় আসবে।’ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলো শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে, সেটাই চাই। ত্যাগের মধ্য দিয়েই শান্তি, ভোগের মধ্যে না। বাংলার মানুষের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধু কিছু নিয়ে যাননি, দিয়েই গেছেন। শেষ পর্যন্ত রক্তটাও দিয়ে গেছেন। আসলে কোন আত্মত্যাগ বৃথা যায় না। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছেন, এ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করবেন, ওইটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা যেন গড়তে পারি। দেশের ভবিষ্যৎটা যেভাবে আমরা তোমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য গড়ে দিয়ে যেতে চাচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে তোমাদের নতুন প্রজন্মের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে শিক্ষা স্বাস্থ্য, সব দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। ঠিক সেভাবে দেশটা যেন এগিয়ে যায়, সেটাই তোমাদের কাছ থেকে আমরা আশা করছি। তোমরা সেভাবেই এগিয়ে যাও।’