বংশাই নদীর ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন, ঝুঁকিতে একাব্বর সেতু

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর এলাকায় বংশাই নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, রাইচ মিলসহ জনপথ। ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে নদীর ওপর নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতু। চলতি বছরের দীর্ঘ মেয়াদি বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মির্জাপুর পৌর এলাকার বংশাই নদীর ভাঙনের চিত্র ফুটে উঠেছে। ইতিমধ্যে পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া (সওদাগরপাড়া) এবং বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়ার বেশ কয়েকটি বাড়ি গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি আরো নেমে গেলে এই ভাঙন তীব্র আকার ধারন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে ভুক্তভোগীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। পুষ্টকামুরী পূর্বপাড়া বংশাই নদীর তীর ঘেষে প্রায় ২৫০টি পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে অধিকাংশ দরিদ্র শ্রেণীর। তারা বেশির ভাগ পরিবারই ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এবারের বন্যায় ওই পাড়ার প্রায় সব বাড়িতেই বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়। ফলে প্রায় শতাধিক পরিবার আশ্রয় নেয় সেতুর ওপর পলিথিনের ছাউনিতে। বন্যার পানি নেমে যাওয়া শুরু করলেও ওই দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর নেমে আসে আরেক অভিষাপ। বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের আশ্রয়স্থল টুকুও হারিয়ে যেতে বসেছে। একইসঙ্গে ওই এলাকায় অবস্থিত একটি রাইচ মিল এবং বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়াও নদী ভাঙনের ঝুকিতে রয়েছে। এদিকে নদী ভাঙনের ফলে বংশই নদীর ওপর নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতুও রয়েছে বড় ঝুকিতে। সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ দুই পাশেই শুকনো মৌসুমে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা এবং বর্ষা মৌসুমে বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালি তোলার মহোতসবস চলে। এসব মাটি ও বালি লুটকারীদের প্রতিহত করা না গেলে সেতুটি হুমকির মধ্যে পড়বে বলে স্থানীয়রা বলছেন। নদী ভাঙনের কবলে পড়া ওই পাড়ার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করছে। কিন্তু তার বাড়িটি আস্তে আস্তে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি বলেন। ওই পাড়ার বাসিন্দা বাবুল বলেন, প্রতি বছর আমরা নদী ভাঙনের কবলে পড়ি। কিন্তু আমদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনা। খাবার দিয়ে অনেকে সাহায্য করলেও আমাদের মাথা গুজার ঠাঁই রক্ষায় কোন কাজ হচ্ছে না। রাইচ মিলের মালিক শওকত হোাসন বলেন, প্রতিবছর বর্ষা এলেই আতঙ্কে দিন কাটে। ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা না হলে মিলটি রক্ষা করা যাবে না। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, ওই এলাকার নদী ভাঙন সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। সেতুটি যাতে হুমকির মধ্যে না পড়ে সেদিকে নজর রাখা হবে বলে তিনি বলেন।

বুধবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১২ মহররম ১৪৪২, ১৬ ভাদ্র ১৪২৭

বংশাই নদীর ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন, ঝুঁকিতে একাব্বর সেতু

শামসুল ইসলাম সহিদ, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

image

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর এলাকায় বংশাই নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, রাইচ মিলসহ জনপথ। ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে নদীর ওপর নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতু। চলতি বছরের দীর্ঘ মেয়াদি বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মির্জাপুর পৌর এলাকার বংশাই নদীর ভাঙনের চিত্র ফুটে উঠেছে। ইতিমধ্যে পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া (সওদাগরপাড়া) এবং বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়ার বেশ কয়েকটি বাড়ি গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি আরো নেমে গেলে এই ভাঙন তীব্র আকার ধারন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে বলে ভুক্তভোগীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। পুষ্টকামুরী পূর্বপাড়া বংশাই নদীর তীর ঘেষে প্রায় ২৫০টি পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে অধিকাংশ দরিদ্র শ্রেণীর। তারা বেশির ভাগ পরিবারই ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এবারের বন্যায় ওই পাড়ার প্রায় সব বাড়িতেই বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়। ফলে প্রায় শতাধিক পরিবার আশ্রয় নেয় সেতুর ওপর পলিথিনের ছাউনিতে। বন্যার পানি নেমে যাওয়া শুরু করলেও ওই দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর নেমে আসে আরেক অভিষাপ। বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের আশ্রয়স্থল টুকুও হারিয়ে যেতে বসেছে। একইসঙ্গে ওই এলাকায় অবস্থিত একটি রাইচ মিল এবং বাওয়ার কুমারজানী উত্তরপাড়াও নদী ভাঙনের ঝুকিতে রয়েছে। এদিকে নদী ভাঙনের ফলে বংশই নদীর ওপর নির্মিত আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতুও রয়েছে বড় ঝুকিতে। সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ দুই পাশেই শুকনো মৌসুমে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা এবং বর্ষা মৌসুমে বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালি তোলার মহোতসবস চলে। এসব মাটি ও বালি লুটকারীদের প্রতিহত করা না গেলে সেতুটি হুমকির মধ্যে পড়বে বলে স্থানীয়রা বলছেন। নদী ভাঙনের কবলে পড়া ওই পাড়ার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করছে। কিন্তু তার বাড়িটি আস্তে আস্তে নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি বলেন। ওই পাড়ার বাসিন্দা বাবুল বলেন, প্রতি বছর আমরা নদী ভাঙনের কবলে পড়ি। কিন্তু আমদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনা। খাবার দিয়ে অনেকে সাহায্য করলেও আমাদের মাথা গুজার ঠাঁই রক্ষায় কোন কাজ হচ্ছে না। রাইচ মিলের মালিক শওকত হোাসন বলেন, প্রতিবছর বর্ষা এলেই আতঙ্কে দিন কাটে। ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা না হলে মিলটি রক্ষা করা যাবে না। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, ওই এলাকার নদী ভাঙন সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। সেতুটি যাতে হুমকির মধ্যে না পড়ে সেদিকে নজর রাখা হবে বলে তিনি বলেন।