শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সাজা কমল

শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে দুলাভাই আউয়াল ফকিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আউয়াল ফকিরের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবে শুনানি করেন এবিএম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে আউয়ালের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল, যা হাইকোর্টেও বহাল রেখেছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আউয়ালের করা জেল আপিলের শুনানি শেষে ২৬ আগস্ট আপিল বিভাগ রায়ের জন্য দিন নির্ধারিত করেন। সে অনুযায়ী গতকাল রায় ঘোষণা করা হয়।

এবিএম বায়েজীদ বলেন, আউয়ালের জেল আপিল আংশিক মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ধর্ষণের কারণে হত্যার দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৬(২) ধারায় হাইকোর্ট আউয়ালের সেই মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিলেন। সাজা কমিয়ে আপিল বিভাগ ওই আইনের ৬(১) ধারায় আউয়ালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ১৯৯৯ সালের ৭ ডিসেম্বর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে রেহানা বেগম (১৫) তার বোনের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। মির্জাপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একই উপজেলার সীতারামপুর গ্রামে রেহেনার বাড়ি। বিষপানের কারণে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন রাতে রেহানা মারা যায়। এ ঘটনার অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা করেন কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক। পরে রেহানার মরদেহ ময়নাতদন্ত করে ধর্ষণের কারণে হত্যার অভিযোগে ২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কালিয়া থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ মার্চ রেহেনার দুলাভাই আউয়াল ফকিরের (৩৫) বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ১২ এপ্রিল বিচারিক আদালতের এক আদেশে উল্লেখ করা হয়, আউয়াল ফকির জেলহাজতে। এ হিসেবে দুই দশকের বেশি সময় ধরে কারাগারে তিনি।

আইনজীবীর মতে, ওই মামলায় ২০০১ সালের ২৯ মার্চ রায় দেন নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। রায়ে আউয়ালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এরপর ডেথ রেফারেন্স ও আপিল এবং জেল আপিলের ওপর ২০০৩ সালের ৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টও বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থেকে ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ জেল আপিল করেন আউয়াল। এরপর ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করার অনুমতি পান। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেয়া হয়।

আরও খবর
ডিএমসিএইচ, টিএসসি ও পাবলিক লাইব্রেরি দ্রুত আধুনিকায়নের নির্দেশ
আ’লীগের কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দক্ষিণাঞ্চলে অনেক জনপদ ও সম্পদ গিলে খাচ্ছে নদী
বঙ্গবন্ধু কর্নার বই জালিয়াতি তদন্ত প্রতিবেদন একমাসের মধ্যে জমার নির্দেশ
টেকসই সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে ডিজাইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত
মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা
সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ আর দখলদারদের দখলে
চান্দিনায় হাসপাতালে রোগীর মেয়েকে যৌন নির্যাতন
মামলায় দুই ধরনের স্বীকারোক্তি : তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন
জেনারেল হাসপাতালে আগুন : রোগীদের দ্রুত স্থানান্তর
রাজস্ব আদায়ে ৮৩৪টি হোল্ডিংসে অভিযান
চার পুলিশ কর্মকর্তা বদলি
সবজির অগ্নিমূল্য দিশেহারা খেটে খাওয়া মানুষ

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সাজা কমল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

শ্যালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের দেয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে দুলাভাই আউয়াল ফকিরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আউয়াল ফকিরের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবে শুনানি করেন এবিএম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে আউয়ালের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল, যা হাইকোর্টেও বহাল রেখেছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আউয়ালের করা জেল আপিলের শুনানি শেষে ২৬ আগস্ট আপিল বিভাগ রায়ের জন্য দিন নির্ধারিত করেন। সে অনুযায়ী গতকাল রায় ঘোষণা করা হয়।

এবিএম বায়েজীদ বলেন, আউয়ালের জেল আপিল আংশিক মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ধর্ষণের কারণে হত্যার দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৬(২) ধারায় হাইকোর্ট আউয়ালের সেই মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছিলেন। সাজা কমিয়ে আপিল বিভাগ ওই আইনের ৬(১) ধারায় আউয়ালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ১৯৯৯ সালের ৭ ডিসেম্বর নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে রেহানা বেগম (১৫) তার বোনের বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। মির্জাপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে একই উপজেলার সীতারামপুর গ্রামে রেহেনার বাড়ি। বিষপানের কারণে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন রাতে রেহানা মারা যায়। এ ঘটনার অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা করেন কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক। পরে রেহানার মরদেহ ময়নাতদন্ত করে ধর্ষণের কারণে হত্যার অভিযোগে ২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কালিয়া থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ মার্চ রেহেনার দুলাভাই আউয়াল ফকিরের (৩৫) বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ১২ এপ্রিল বিচারিক আদালতের এক আদেশে উল্লেখ করা হয়, আউয়াল ফকির জেলহাজতে। এ হিসেবে দুই দশকের বেশি সময় ধরে কারাগারে তিনি।

আইনজীবীর মতে, ওই মামলায় ২০০১ সালের ২৯ মার্চ রায় দেন নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত। রায়ে আউয়ালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এরপর ডেথ রেফারেন্স ও আপিল এবং জেল আপিলের ওপর ২০০৩ সালের ৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টও বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থেকে ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ জেল আপিল করেন আউয়াল। এরপর ২০০৯ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করার অনুমতি পান। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে রায় দেয়া হয়।